|| মুফতি রেজাউল কারীম আবরার ||
মুহতারাম এনায়েত উল্লাহ আব্বাসি হাফি. এর নামে ইসলামী গবেষণা পরিষদ কর্তৃক একটি বাহাসের আহবান সারাদিন ফেইসবুকে ঘুরাঘুরি করছে। আমি আজ সারাদিন উত্তরবঙ্গে ছিলাম। আমাকে এ বাহাসের আহবানে যে পরিমাণে ম্যানশন করা হয়েছে, সম্ভবত অন্য কাউকে ততটুকু করা হয় নি। এ ব্যাপারে আমার অবস্থান আমি সংক্ষিপ্তভাবে আপনাদের সামনে তুলে ধরছি।
গণতান্ত্রিক পদ্ধতির নির্বাচনকে কুফর ফতোয়ার সাথে আমি শ্রদ্ধার সাথে দ্বিমত পোষণ করি।
এনায়েত উল্লাহ আব্বাসি হাফি. এর নামে যে চ্যালেঞ্জটি ফেইসবুকে ঘুরে বেড়াচ্ছে সেটার সূচনা হলো এভাবে: “সম্প্রতি আল্লামা আব্বাসী হুজুর গ*ণ*তন্ত্র এবং গ*ণ*তান্ত্রিক পদ্ধতির নির্বাচনকে কু*ফ*র এবং এর সমর্থনকারীকে অর্থাৎ যারা এটাকে সমর্থন করবে, তাদের কা*ফে*র ফতোয়া দেন।”
গ**ণতন্ত্র কু*ফর এ ফতোয়ায় আমি শতভাগ একমত। এটা নিয়ে তো ডিবেট করার প্রশ্নই আসে না। কুরআন, সুন্নাহর সামান্য জ্ঞান যাদের আছে, তারা সেটা স্বীকার করবে। কিন্তু “গ*ণ*তান্ত্রিক পদ্ধতির নির্বাচনকে কু*ফ*র এবং এর সমর্থনকারী কা*ফে**র” এ ফতোয়ার সাথে আমি শ্রদ্ধার সাথে দ্বিমত পোষণ করি। আমি প্রচলিত নির্বাচনকে কু*ফ*র এবং নির্বাচন সমর্থনকারীকে কা*ফে*র মনে করি না।
গ*ণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের ব্যাপারে দারুল উলূম দেওবন্দ এবং আকাবিরে দেওবন্দের যে অবস্থান, আমারও একই অবস্থান। বিশেষ অবস্থা বিবেচনায় তারা সেটাকে জায়েজ বলেছেন। আমিও জায়েজ মনে করি। বাংলাদেশের ইবরাহীম চতুলী রাহি. হয়ে শায়খুল ইসলাম আল্লামা মুশাহিদ বায়মপুরি রাহি. এর কাল পেরিয়ে আল্লামা আতহার আলি রাহি. পর্যন্ত কাউকে আমি কা*ফে*র মনে করি না। নির্বাচনের ব্যাপারে দারুল উলূম দেওবন্দের অবস্থান অত্যন্ত ভারসাম্যপূর্ণ। দারুল উলূম দেওবন্দের ফতোয়া হলো:
مسلمان کے لیے الیکشن میں کھڑا ہونا شرعاً ناجائز نہیں ہے۔ قوم وملت کی خدمت کرنے کی ترغیب خود احادیث کثیرہ میںآ ئی ہے۔ البتہ مسلمان لیڈر کو چاہیے کہ وہ الیکشن میں کھڑے ہوکر جائز وناجائز کی پرواہ کیے بغیر عمل نہ کرے، جھوٹ فریب دھوکہ اور جھوٹے وعدے سے کلی اجتناب کرے، محض مالی منفعت، دنیاوی لذت،نیز جاہ طلبی کے جذبہ سے کھڑا نہ ہو، کسی سے دب کر غیر اسلامی طریقہ کو اختیار نہ کرے، فرقہ پرست عناصر اور بدکردار لوگوں سے گٹھ جوڑ نہ رکھے، اس کا مقصد صرف اور صرف قوم وملت کی خدمت کرنا، مظلوموں کی امداد کرنا، ناجائز مقدمات میں پھنسے لوگوں کو باعزت بری کرانا ہو وغیرہ۔ (۲) (۳) ووٹ کی شرعی حیثیت کم ازکم شہادت کی ہے، اس کو محض سیاسی ہارجیت کا ذریعہ قرار دینا سخت نادانی ہے، قرآن وسنت کی رو سے واضح ہے کہ نااہل، ظالم، فاسق اورغلط آدمی کو ووٹ دینا گناہِ عظیم ہے، اسی طرح ایک اچھے نیک اور قابل آدمی کو ووٹ دینا ثواب بلکہ ایک فریضہ شرعی ہے، قرآن کریم میں جیسے جھوٹی شہادت کو حرام قرار دیا ہے اسی طرح سچی شہادت کو واجب اور لازم فرمایا ہے، ارشاد باری ہے کُونُوا قَوَّامِینَ لِلَّہِ شُہَدَاء َ بِالْقِسْطِ اور دوسری جگہ ہے کُونُوا قَوَّامِینَ بِالْقِسْطِ شُہَدَاء َ لِلَّہِ ان دونوں آیتوں میں مسلمانوں پر فرض کیا کہ سچی شہادت سے جان نہ چرائیں، اللہ کے لیے ادائیگی شہادت کے لیے کھڑے ہوجائیں، تیسری جگہ سورہٴ طلاق میں ارشاد ہے وَأَقِیمُوا الشَّہَادَةَ لِلَّہِ یعنی اللہ کے لیے سچی شہادت قائم کرو، ایک آیت میں ارشاد فرمایا کہ سچی شہادت کا چھپانا حرام اور گناہ ہے، ارشاد ہے: وَلَا تَکْتُمُوا الشَّہَادَةَ وَمَنْ یَکْتُمْہَا فَإِنَّہُ آَثِمٌ قَلْبُہُ یعنی شہادت کو نہ چھپاوٴ اور جو چھپائے گا اسکا دل گنہ گار ہے۔ حاصل یہ ہے کہ مسلمانوں کو ووٹ ضرور ڈالنا چاہیے، البتہ ووٹ ڈالنے جس امیدوار کے حق میں ووٹ ڈال رہا ہے اس کے حق میں گویا یہ خود ہی گواہی دے رہا ہے کہ یہ امیدوار میرے علم کے مطابق سب سے زیادہ مستحق اور دیانت دار ہے، اس لیے چند امور اس کو ملحوظ رکھنے چاہئیں: (۱) ووٹ ڈالنے میں احتیاط سے کام لے، غلط جگہ مہر وغیرہ نہ لگے، اس کا خیال رکھے ورنہ اس کا ووٹ ضائع ہوجائے گا جو کہ بڑا نقصان ہے۔ ۲) باہم مشورے سے خوب سوچ سمجھ کر ووٹ دے، محض اپنے تعلقات یا غیرشرعی دباوٴ سے متأثر ہوکر ہرگز ووٹ نہ دے۔ ۳) جو امیدوار اس کے علم کے مطابق ووٹ کا زیادہ مستحق ہے دیانةً اسی کو اپنا ووٹ دے۔ ۴) جس امیدوار سے نقصان پہنچنے کا غالب اندیشہ ہو اس کو ہرگز ووٹ نہ دے۔ ۵) اگر تمام امیدواروں کے حالات یکساں ہوں تو پھر جس سے زیادہ فائدہ کی امید اور کم نقصان کا اندیشہ ہو اس کو ووٹ دے۔ ۶) روپیہ یا کوئی مال لے کر کسی کو ووٹ نہ دے یہ بدترین رشوت اور حرام فعل ہے۔ ۷) ووٹ کی حقیقت کو سامنے رکھا جائے تو اس سے مندرجہ ذیل نتائج برآمد ہوتے ہی
অর্থাৎ মুসলমানদের জন্য নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া শরীয়তে নাজায়েজ নয়। জাতির খেদমত করার ব্যাপারে অসংখ্য হাদীসে উৎসাহপ্রদান করা হয়েছে। তবে মুসলমান নেতার জন্য জরুরী হলো, তিনি যেন নির্বাচনে দাঁড়িয়ে জায়েজ এবং নাজায়েজ বিষয়ের খেয়াল না করে কোন কাজ না করেন। মি**থ্যা, ধোকাবাজি এবং মি*থ্যা প্রতিজ্ঞা করা থেকে অবশ্যই তিনি বেঁচে থাকবেন। সম্পদ, দুনিয়াবি ইজ্জত এবং খ্যাতির মোহের জন্য নির্বাচনে প্রার্থী হবেন না। ইসলাম সমর্থন করে না এমন কোন পদ্ধতি গ্রহণ করবে না। অ*সৎ লোকের সাথে কোন ধরণের সম্পর্ক রাখবে না। তার একমাত্র উদ্দেশ্য হবে মানুষের খেদমত করা, মাজলুমদের সাহায্য করা, অ*ন্যায়ভাবে যারা মা*মলায় ফেঁ*সে গেছে, তাদের মুক্তি করা ইত্যাদি।
ভোটের শারয়ী দৃষ্টিভঙ্গি কমচেয়ে কম শাহাদত তথা সাক্ষীপ্রদানের মতো। ভোটকে শুধুমাত্র রাজনৈতিক জয়পরাজয় মনে করা চূড়ান্ত পর্যায়ের বালখিল্যতা বৈ কিছুই নয়। কুরআন , হাদীসের আলোকে একথা সুস্পষ্ট যে, অ**যোগ্য, অ*ত্যা**চারী, ফা*সিক এবং ভু*ল ব্যক্তিকে ভোট প্রদান করা মারাত্মক গুনাহ। কুরআনে যেমনভাবে মি*থ্যা সাক্ষীকে হা*রা*ম ঘোষণা করেছে, এমনভাবে সঠিক সাক্ষীপ্রদানকে ওয়াজিব সাব্যস্ত করেছে।
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে বলেন:
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ كُونُواْ قَوَّامِينَ بِالْقِسْطِ شُهَدَاء لِلّهِ
অর্থ, হে ঈমাদারগণ, তোমরা ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকো, আল্লাহর ওয়াস্তে ন্যায়সঙ্গত সাক্ষী প্রদান করো। সুরা নিসা: ১৩৫
এ আয়াতে মুসলমানদের জন্য সত্য সাক্ষীপ্রদানকে ওয়াজিব সাব্যস্ত করা হয়েছে। এমনভাবে সূরায়ে তালাকে বলা হয়েছে, ‘তোমরা আল্লাহর জন্য সাক্ষীপ্রদান করো।
আরেক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন:
وَلَا تَکْتُمُوا الشَّہَادَةَ وَمَنْ یَکْتُمْہَا فَإِنَّہُ آَثِمٌ قَلْبُہُ
অর্থ, তোমরা সাক্ষী গোপন করো না। যে সাক্ষী গোপন করবে, তার অন্তর পাপপূর্ণ হবে। সূরা বাকারা: ২৮৩।
মূলকথা হলো, মুসলমানদের জন্য অবশ্যই ভোট দেওয়া জরুরী। বাকি আপনি যাকে ভোট দিচ্ছেন, মূলত তার ব্যাপারে সাক্ষী দিচ্ছেন। এজন্য আপনার জ্ঞান অনুযায়ী যাকে সবচেয়ে বেশি জ্ঞানী এবং আমানতদার মনে করবেন, তাকে ভোট প্রদান করবেন।
ভোট প্রদানের ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখবেন। প্রথমত, ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকবেন। যেন আপনি ভুল জায়গায় ভোট না দেন। এটা খেয়াল না করলে আপনার ভোট নষ্ট হয়ে যাবে। এটি অত্যন্ত খারাপ বিষয়। দ্বিতীয়ত, পরস্পর পরামর্শ করে খুব চিন্তা ভাবনা করে ভোট দিবেন। শুধু সম্পর্কের কারণে শরিয়তসম্মত নয় এমন কাউকে ভোট দিবেন না। যাকে ভোট দিলে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকবে, তাকে কখনো ভোট প্রদান করবেন না। কারও থেকে টাকা পয়সা নিয়ে তাকে ভোট প্রদান করবেন না। এটি ঘু*ষ এবং স্পষ্ট হা*রা*ম। ভোটের মূলকথাকে সামনে রাখলে এ বিষয়টি সামনে স্পষ্ট হয়। দারুল উলূম দেওবন্দের ওয়েবসাইট: ফতোয়া নং, ৪৩০৯৪,
এমনভাবে অসংখ্য প্রার্থী থেকে আপনি কাকে ভোট দিবেন, ভোটপ্রদানের ক্ষেত্রে আপনি কোন কোন বিষয়ের খেয়াল রাখবেন? সে ব্যাপারেও দারুল উলূম দেওবন্দের ফতোয়ায় স্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে বাংলাদেশের নির্বাচনে আরেকটি বিষয় পরিলক্ষিত হয়। অনেকে বিভিন্ন প্রার্র্থী থেকে দুনিয়াবি সুবিধা লাভ করে তার পক্ষে কথা বলেন। তাকে ভোটপ্রদান করেন। ভোটের আগে কোন প্রার্থীর পক্ষ থেকে দেওয়া কোন উপহার রাখা যাবে কিনা? আসুন এ ব্যাপারে আমরা দারুল উলূম দেওবন্দের ফতোয়া দেখে আসি। বলা হয়েছে:
لیکشن کے موقع پر امیدوار،لوگوں کو جو مٹھائیاں، پکوڑیاں وغیرہ کھلاتے ہیں، اُن کی دعوت کرتے ہیں یا انھیں کچھ دیتے ویتے ہیں، اِس میں اُن کا مقصد بہ ظاہر ووٹ کے لیے راہ ہموار کرنا ہوتا ہے کہ لوگ انھیں ووٹ دیں،اگرچہ وہ زبان سے اپنے لیے ووٹ نہ مانگیں یا یہ کہہ دیں کہ ووٹ جس کو چاہو دو، اور ووٹ شریعت کی نظر میں بعض پہلووٴں سے شہادت کی حیثیت رکھتا ہے۔ اور شہادت پر کسی قسم کا کوئی معاوضہ لینا جائز نہیں(جواہر الفقہ جدید، ۵: ۵۳۵، ۵۳۶، مطبوعہ: مکتبہ زکریا دیوبند)؛
اس لیے الیکشن کے موقع پر کسی امیدوار کی کوئی مٹھائی وغیرہ نہیں کھانی چاہیے اور نہ ہی اس طرح کی دعوت میں شریک ہونا چاہیے بالخصوص علما، صلحا، ائمہ مساجد اور اہل مدارس کو، یہ صریح رشوت نہ ہو تو کم از کم اس میں رشوت کا شائبہ ضرور ہے۔
অর্থাৎ নির্বাচনের সময় প্রার্থীর পক্ষ থেকে যে মিষ্টি কিংবা উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়, সেটার উদ্দেশ্য একেবারে স্পষ্ট। এগুলো দেওয়ার উদ্দেশ্য হলো, আপনি যেন তাকে ভোট প্রদান করেন। শরীয়তের দৃষ্টিতে ভোট শাহাদাত তথা সাক্ষীপ্রদানের অন্তর্ভূক্ত। আর সাক্ষী প্রদান করে কোন বিনিময় নেওয়া জায়েজ নেই। (জাওয়াহিরুল ফিকহ: ৫/৫৩৫)
এজন্য ভোটের সময় কোন প্রার্থীর মিষ্টি খাওয়া, তার দাওয়াতে অংশগ্রহণ করা কিংবা কোন হাদিয়া গ্রহণ করা বিশেষত আলেম, ইমাম এবং পূণ্যবান মানুষদের জন্য এড়িয়ে চলা জরুরী। কারণ, এটা স্পষ্ট ঘুষ না হলেও ঘুষের সম্ভাবনা থেকে মুক্ত নয়। দারুল উলূম দেওবন্দের ওয়েবসাইট: ফতোয়া নং: ১৭৭৭৬৩
আল্লামা ইউসুফ বানুরী রাহি. প্রতিষ্ঠিত জামেয়াতুল উলূমিল ইসলামিয়া উপমহাদের একটি বিখ্যাত দ্বীনী প্রতিষ্ঠান। তাদের প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইটে ‘ভোট কী শারয়ী হাইছিয়্যাত” নামে একটি বিশাল প্রবন্ধ রয়েছে। আমরা সে প্রবন্ধের উল্লেখযোগ্য অংশ আপনাদের সামনে পেশ করছি। সেখানে বলা হয়েছে:
ووٹ امانت ہے اور اس کا صحیح استعمال دینی فریضہ ہے۔ اگر اہلِ وطن اس دینی امانت اور اسلامی فریضہ کی ادائیگی میں ہمیشہ کی طرح سُستی اور کاہلی برتتے رہے تو نہ ملک کا کوئی طبقہ محفوظ رہے گااور نہ ہی کوئی مقام۔اگر ووٹ کا استعمال اسلامی فریضہ کی بجائے اپنے ذاتی مفادات کو مد نظر رکھتے ہوئے کیا جاتا رہاتو خدا نہ کرے یہ ملک ہی باقی نہ رہے گا۔ اہل وطن کی یہ روش جو ملک میں چل پڑی ہے، اگر یکسر تبدیل نہیں کی جائے گی تو ملک سے بد امنی ، غربت و افلاس ، بے روزگاری کا خاتمہ نا ممکن ہوگا
অর্থাৎ ভোট হলো আমনাত। এটি সঠিক জায়গায় প্রয়োগ করা অবশ্যই আপনার দায়িত্ব। যদি দেশবাসী এ পবিত্র আমানত এবং ইসলামি দায়িত্ব আদায়ে আগের মতো আলসেমি প্রদর্শন করে, তাহলে রাষ্ট্রের কোন স্তর এবং জায়গা অবশিষ্ট থাকবে না। ভোটের ক্ষেত্রে যদি আপনি শারয়ী দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি খেয়াল না করে নিজের ব্যক্তি স্বার্থের প্রতি খেয়াল করেন, তাহলে আল্লাহ না করুন এ দেশ অবশিষ্ট থাকবে না। বর্তমানে যেভাবে রাষ্ট্র চলছে, সেটার পরিবর্তন না হলে রাষ্ট্র খে*য়া*নত এবং দরিদ্রতায় ভরে যাবে। এটার সমাপ্তি কোনভাবে সম্ভব হবে না।
এরপর ভোট সম্পর্কে শারয়ী দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করে শেষে বলা হয়েছে:
آپ کے ووٹ اور شہادت کے ذریعے جو نمائندہ کسی اسمبلی میں پہنچے گا، وہ اس سلسلہ میں جتنے اچھے یا بُرے اقدامات کرے گا، اُن کی ذمہ داری آپ پر عائد ہوگی، آپ بھی اُس کے ثواب یا عذاب میں برابر شریک ہوںگے۔ ۲:ৃاس معاملہ میں یہ بات خاص طور پر یاد رکھنے کی ہے کہ شخصی معاملات میں کوئی غلطی بھی ہو جائے تو اس کا اثر بھی شخصی اور محدود ہوتا ہے، ثواب بھی محدود، عذاب بھی محدود ،لیکن قومی اور ملکی معاملات سے پوری قوم متاثر ہوتی ہے۔ ۳:ৃسچی شہادت کا چُھپانا از روئے قرآن حرام ہے، اس لئے کسی حلقۂ انتخاب میں اگر کوئی صحیح نظریہ کا حامل اور دیانت دار نمائندہ کھڑا ہے تو اس کو ووٹ دینے میں کوتاہی کرنا گناہ کبیرہ ہے۔ ۴:ৃجو امیدوار نظریۂ اسلامی کے خلاف کوئی نظریہ رکھتا ہے، اس کو ووٹ دینا ایک جھوٹی شہادت ہے، جو گناہ کبیرہ ہے ۔ ۵:ৃووٹ کو پیسوں کے معاوضے میں دینا بد ترین قسم کی رشوت ہے اور چند ٹکوں کی خاطر اسلام اور ملک سے بغاوت ہے۔ دوسروں کی دُنیا سنوارنے کیلئے اپنا دین قربان کردینا کتنے ہی مال و دولت کے بدلے میں ہو، کوئی دانشمندی نہیں ہو سکتی۔ رسو ل پاک ا نے فرمایا ہے کہ:’’ وہ شخص سب سے زیادہ خسارے میں ہے جو دوسرے کی دنیا کے لئے اپنا دین کھو بیٹھ
অর্থাৎ আপনার ভোট পেয়ে যে প্রার্থী সংসদে যাবে, সে যত ভাল এবং মন্দ কাজ করবে, সেগুলোর দায়ভার আপনার উপরও আসবে। সাওয়াব কিংবা শাস্তির ক্ষেত্রে আপনিও শরিক থাকবেন।
ভোটের ক্ষেত্রে একটি কথা ভাল করে স্মরণ রাখবেন। ব্যক্তিগত কোন বিষয়ে ভুল করলে সেটার ক্ষতি ব্যক্তির মাঝে সীমাবদ্ধ থাকে। কিন্তু সামষ্টিক কোন বিষয়ে ভুল করলে সেটার ক্ষতি সকলকে বহন করতে হয়। সত্য সাক্ষীকে গোপন করা কুরআনে হারাম সাব্যস্ত করা হয়েছে। কোন জায়গায় যদি বিশুদ্ধ চিন্তা লালনকারী, আমানতদার প্রার্থী দাঁড়ায়, তাহলে তাকে ভোট দেওয়ার ব্যাপারে ত্রু*টি করা কবিরা গুনাহ। যে ব্যক্তি ইসলামী আদর্শ লালন করে না, এমন ব্যক্তিকে ভোট দেওয়ার অর্থ হলো, মি*থ্যা সাক্ষী প্রদান করা। যেটা হলো কবিরা গুনাহ। ভোটের বিনিময়ে কারও থেকে টাকা নেওয়া নিকৃষ্ট পর্যায়ের ঘু*ষ। কিছু দিক থেকে সেটা স্পর্শকাতর এবং রাষ্ট্রের সাথে বি*দ্রোহের অন্তর্ভূক্ত। অন্যের দুনিয়াবি উন্নতির জন্য নিজের দ্বীন উৎসর্গ করে দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হতে পারে না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লা বলেন: “ওই ব্যক্তি সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মাঝে রয়েছে, যে অন্যের দুনিয়ার জন্য তার দ্বীন বিক্রি করে দেয়।”
পাকিস্তানের মুফতীয়ে আযম মুফতী শফী রাহি. তার জগদ্বিখ্যাত কিতাব “জাওয়াহিরুল ফিকহ” এর ৫ম খণ্ডে “ভোট কী শারয়ী হাইছিয়্যাত” নামে একটি রিসালা লিখেছেন। সেখানে তিনি ভোট নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। তার আলোচনার সারাংশ দারুল উলূম দেওবন্দের ফতোয়ায় চলে এসেছে। এজন্য পূণরায় আর উল্লেখ করলাম না। আগ্রহী পাঠকরা চাইলে সে পুস্তিকাটি অধ্যয়ন করতে পারেন। আশা করি আপনার মনের কোণে জমে থাকা অনেক প্রশ্নের জবাব পেয়ে যাবেন।
বর্তমান পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ আলেমদের একজন শায়খুল ইসলাম জাষ্টিস তাকি উসমানী হাফি.। ভোটের ব্যাপারে তার একটি লেখা “ইনতেখাবাত মে ভোট কী শারয়ী হাইছিয়্যাত” নামে ছেপেছে। জাওয়াহিরুল ফিকহ ২য় খণ্ডে সে রিসালাটি ছেপেছে। সে বইয়ে তিনি ভোটের ব্যাপারে অনেক মৌলিক কথা লিখেছেন। শুরুতেই তিনি কিছু লোকের সন্দেহের অপনোদন করেছেন।
তিনি লিখেন: “কিছু লোকের অন্তরে ভোটের ব্যাপারে সংশয় তৈরী হয়েছে তাদের ভদ্রতার কারণে। মূলত তাদের নিয়ত খারাপ নয়। তাদের এ ভুল চিন্তা লালনের কারণ হলো, বর্তমানে রাজনীতির ধো*কা*বাজীর অপর নামে পরিণত হয়েছে। এজন্য সম্মানী লোকেরা রাজনীতি করে না, নির্বাচনে প্রার্থী হয় না এবং ভোট দিতে চায় না। নেক নিয়ত থেকে এ সংশয় তৈরী হলেও সেটা ভুল। রাষ্ট্রের জন্য এবং ধর্মের জন্য অনেক ক্ষ*তিকর বিষয়। অতীতে আমাদের রাজনীতি খারাপ লোকদের দ্বারা কলুষিত হয়েছে। এখন কিছু পূণ্যবান মানুষ এগিয়ে না আসলে পরিবর্তন সম্ভব নয়। এভাবে চলতে থাকলে একদিন দেখা যাবে, নাপাক নিজের ঘর পর্যন্ত চলে এসেছে। এজন্য বুদ্ধিমানের কাজ নয় রাজনীতি ছেড়ে দেওয়া। বরং বুদ্ধিমানের কাজ হলো এ ধরণের অপবিত্র লোকের হাত থেকে রাজনীতি থেকে ছিনিয়ে আনা।” ইনতেখাবাত মে ভোট কী শারয়ী হাইছিয়্যাত: পৃষ্ঠা নং ২।
চাইলে আরও অসংখ্য ফকীহ আলেমের রেফারেন্স দেওয়া যেতে পারে। কুরআন, সুন্নাহ রিসার্চ করে যারা বিশেষ পরিস্থিতির স্বীকার হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে এ ধরণের ফতোয়া দিয়েছেন। আব্বাসি হাফি. যদি মনে করেন যে, তারা এ ধরণের ফতোয়া দিয়ে কু*ফ*র করেছেন এবং আমরা সমর্থন করে কা*ফে*র হয়ে গেছি, তাহলে সরাসরি তার সাথে জনসমক্ষে আলোচনায় বসতে আমি রাজি আছি ইনশাআল্লাহ। কারণ, তিনি এক ফতোয়ায় উপমহাদেশের শত শত ফকীহ আলেমদের কা*ফে*র বানিয়ে দিয়েছেন। ফেইস দ্যা পিপলসে শায়খের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান রেখে অন্তত আমার ভুল সংশোধনের জন্য আমি বসতে রাজি আছি ইনশাআল্লাহ।