|| মুফতি যুবায়ের আহমাদ ||
কেউ তার বান্ধবীকে নিয়ে হোটেলে রাত কাটাবার আগে হালাল করার জন্য একটি কাগজে নিজেরা সাক্ষর করল, কিন্তু ঝামেলা মনে করে বিয়ের শরয়ি পদ্ধতি মেনে ইজাব-কবুল করল না (অথচ ইজাব কবুল বিয়ের রুকন), কেবল কাগজপত্রে সাক্ষর করলেই কি তাদের দৈহিক সম্পর্ক ইবাদত হবে?
এটি যেমন হবে না, ঠিক তেমনি ইসলামী ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে শুধু ভাউচার করে, ভাউচার নিয়ে পণ্য না দিয়ে ঝামেলা এড়াতে গ্রাহকের হাতে নগদ টাকা দিয়ে এবং কিস্তির ভিত্তিতে বাড়িয়ে ফের নগদ টাকাই ফেরত নিলে তা-ও সুদই থাকবে। বাস্তবে শরয়ি বিয়ে না হলে যেমন সম্পর্ক হারাম, মুরাবাহায় বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাস্তবে বাই' না করে কাগুজে কেনাবেচাতেও তা হারামই থাকবে।
সুদের হারামটি এমন, যার বিরুদ্ধে আমাদের রব নিজে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। বর্তমানে ইসলামী ব্যাংকগুলোর বেশিনভাগই কষ্ট কমাতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে শরিয়াহ লঙ্ঘন করছে। মুরাবাহায় পন্য না দিয়ে সরাসরি টাকাই দিয়ে দিচ্ছে। মাল কবজ (হস্তগত) না করেই তা গ্রাহকের কাছে বিক্রি করছে। অথচ ব্যবস্থাপক ও কর্মকর্তারা একটু আন্তরিক হলেই তা মেন্টেইন করতে পারতেন।
সুদি ব্যাংকে হিসাব খোলা মানে সুদি চুক্তির অন্তর্ভুক্ত হওয়া। আর ‘সুদ গ্রহণ’ যেমনিভাবে হারাম, তেমনিভাবে সুদী ব্যাংকে সঞ্চয়ী হিসাব খোলাও সম্পূর্ণ হারাম। তাই Conventional (প্রচলিত/সুদী) Banking ত্যাগ করে ইসলামী ব্যাংকিয়ে লেনদেনে জনগণকে উৎসাহিত করা দরকার, কিন্তু ইসলামী ব্যাংকগুলো যে সদিচ্ছার অভাবেও শরিয়াহ লঙ্ঘন করছে এ ব্যাপারে তাদের সতর্কও করা দরকার। পাশাপাশি ব্যাংকিংয়ে শরিয়াহ পালনে গ্রাহকদেরকেও সতর্ক করা দরকার। গ্রাহকরাও মুরাবাহার ক্ষেত্রে পণ্য না নিয়ে টাকা নেওয়ার চেষ্টা করে। এ মনোভাব পরিহার করা। এমনকি ইসলামী ব্যাংক থেকে একান্ত বিনিয়োগ (মুরাবাহায়) নিতেই হলে ব্যাংককে নগদ টাকা না দিয়ে পণ্য দিতে বাধ্য করতে হবে।
আমার কথায় কোনো দ্বীনী ভাই/বোন কষ্ট নেবেন না। সুদের বিষয়টি খুবই সেনসেটিভ। আল্লাহ সরাসরি এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। এ ব্যাপারে আমাদের অনেক সতর্কতা প্রয়োজন। আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন!
কেএল/