|| হাসান মুরাদ ||
সুরা ইখলাস পবিত্র কোরআনের ১১২ নম্বর সুরা। এর আয়াত সংখ্যা ০৪। সুরা কাওসারের পর ইখলাসই সবচেয়ে ছোট সুরা । ইখলাস অর্থ একনিষ্ঠতা, ভক্তিপূর্ণ আনুগত্য। ইসলামের প্রাথমিক সময়ে সুরাটি অবতীর্ণ হয়। ইখলাস বলা হয়, শিরক থেকে মুক্ত হয়ে তাওহিদ তথা একত্ববাদে বিশ্বাসী হওয়াকে। এ মর্মার্থের ভিত্তিতে নামকরণ করা হয়েছে সুরা ইখলাস।
হযরত আবু সাঈদ খুদরি রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, এক ব্যক্তি অন্য ব্যক্তিকে রাতে বারবার সুরা আল-ইখলাস পড়তে শুনেছেন। অতঃপর সকালে নবী সা.-কে এ বিষয়টি অবহিত করা হয়। তখন নবী সা. বলেন,ঐ সত্তার শপথ! যার কুদরতি হাতে আমার জীবন, অবশ্যই এ সুরা কোরআন মাজিদের এক-তৃতীয়াংশের সমান। (সহিহ বুখারি : ৫০১৩)
এ সুরার মাধ্যমে আল্লাহর ভালোবাসা লাভ হয়। একবার রাসুল সা. কিছু সাহাবিকে যুদ্ধে পাঠালেন। তাদের একজনকে সেনাপতি নিযুক্ত করলেন। তিনি যুদ্ধকালীন দীর্ঘ সময়ে কেবল সুরা ইখলাস দিয়ে নামাজ পড়িয়েছেন। যুদ্ধ থেকে ফেরার পর সাহাবীরা নবী সা.-কে বিষয়টি জানানো হলো। তখন নবী সা. তাদের বলেন,তোমরা তাকে জিজ্ঞেস করো কেন সে এরূপ করেছে? সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলে সেনাপতি উত্তর দিলেন, এ সুরায় আল্লাহর গুণাবলি বর্ণিত হয়েছে। তাই আমি এ সুরাকে ভালোবাসি।নবী সা. তখন সাহাবিদের বলেন, তোমরা তাকে বলো, আল্লাহও তাকে ভালোবাসেন। (সহিহ বুখারি- ৭৩৭৫)
সুরা ইখলাস জান্নাত লাভের কারণ নবী সা.-এর কাছে একবার এক সাহাবি এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসুল সা. আমি সুরা ইখলাসকে ভালোবাসি। তখন রাসুল(সা. বলেন, এ ভালোবাসা তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে (সহিহ বুখারি-: ৭৭৪)
সাহল ইবন সাদ সায়েদি (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসুল সা.-এর কাছে এসে দারির্দ্যের অভিযোগ করল। তখন নবী সা. তাকে বললেন, যখন তুমি ঘরে ফিরবে, তখন সালাম দেবে এবং একবার সুরা ইখলাস পড়বে। এ আমল করার কিছুদিনের মধ্যে তার অভাব দূর হয়ে যায়। (কুরতুবি )রাসুল সা.আরো বলেন, যে ব্যক্তি প্রতিদিন ২০০ বার সুরা ইখলাস পড়বে, তার ৫০ বছরের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। তবে ঋণ থাকলে তা মাফ হবে না। (তিরমিজি- ২৮৯৮)
আল্লাহ আমাদের অধিক পরিমাণে এই সুরা পাঠ করার তাওফিক দান করেন। আমিন।
কেএল/