আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর) বলেছেন, দেশে মাদকের অবাধ বিস্তারে আওয়ামী লীগ সরকার মাদক বিধিমালা আইন করে মাদকের পক্ষে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে। এই সরকার দেশ পরিচালনার যোগ্যতা হারিয়েছে, তারা জাতির সাথে ভারসাম্যহীন আচরণ করছে।
তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব আজ হুমকির মুখে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতে গিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারকে রক্ষার জন্য যা যা করার তা-ই করে হলেও। এ বক্তব্য দিয়ে তিনি রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে সাব্যস্ত হয়েছে। সরকারের উচিত ছিলো তাকে বরখাস্ত করা। দুর্নীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার দেশকে দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে।
বিরোধী দল দমনে সরকার মরিয়া হয়ে উঠছে। এক পক্ষকে অপর পক্ষ খেলার আহ্বান করে রাজনৈতিক শিষ্টাচার পরিপন্থি কাজ করছেন। যা কোনভাবেই সুস্থ রাজনীতি হতে পারে না। এধরনের তামাশা বন্ধ হওয়া উচিত।
গতকাল বিকেলে রাজধানীর রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ইসলামী যুব আন্দোলন আয়োজিত মাদক, সন্ত্রাস, উগ্রবাদ ও দূর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনে যুব সমাজের ভূমিকা শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ নেছার উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল প্রকৌশলী আতিকুর রহমান মুজাহিদের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির আলোচনা করেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমদ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন ও অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, এবি পার্টি যুগ্ম আহবায়ক এডভোকেট তাজুল ইসলাম, জাগপা-এর ভাইস চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান ও মুহা. আমিনুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক কেএম আতিকুর রহমান, প্রচার ও দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক যুব আন্দোলন এর সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান হাবিব, যুব জাগপার কেন্দ্রীয় সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবলু, যুব অধিকার পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম, এবি যুব পার্টির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এম ইলিয়াছ আলী। আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী যুব আন্দোলনের জয়েন্ট সেক্রেটারি জেনারেল এ আর খান, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগ) ইলিয়াস হাসান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শেখ মারুফ, দফতর সম্পাদক মুফতী আবদুজ্জাহের আরিফী, প্রকাশনা সম্পাদক মাষ্টার মাহবুবুর রহমান, প্রচার সম্পাদক মুফতী আবু বকর সিদ্দীক, যুব কল্যাণ ও কর্মসংস্থান সম্পাদক মুহাম্মাদ ইউনুছ তালুকদার, মানবাধিকার সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার এহতেশামুল হক পাঠান, আইন সম্পাদক এ্যাড. বায়েজিদ হোসাইন, উপ-সম্পাদক আলহাজ্ব শফিকুল ইসলাম ও এম এ হাসিব গোলদার প্রমুখ।
চরমোনাই পীর আরও বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশে বর্তমানে মাদকসেবীর সংখ্যা অন্তত দেড় কোটি। এদের ৮০ শতাংশ হচ্ছে যুবক। এমতাবস্থায় মাদক বিধিমালা ২০২২ মাদকাসক্তিকে আরও উসকে দেবে বলে মন্তব্য করেন তিনি এবং অবিলম্বে এই আইন বাতিল চেয়ে সরকারের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারিও উচ্চারণ করেন।
এছাড়াও পীর সাহেব চরমোনাই সরকারের দূর্নীতি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বেসামাল উর্ধ্বগতি নিয়ে আওয়ামী সরকারকে দূর্নীতির বরপুত্র আখ্যা দিয়ে বলেন, সরকারের লাগামহীন দূর্নীতি দেশকে দুর্ভিক্ষের দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে ইসলামী হুকুমত কায়েমের বিকল্প নাই।
মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক বলেন, স্বাধীনতার অর্ধশতক পেরিয়ে গেলেও জনগণ তাদের মৌলিক অধিকারগুলো থেকে বঞ্চিত। যেই ভোটাধিকারের জন্য বাঙালী জাতি পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছিল, স্বাধীনতার ধ্বজাধারী দল আবারও পাকিস্তানিদের সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটিয়েছে, গোটা জাতির জন্য এটা লজ্জার। মানুষের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলার পরিণতি ভয়াবহ হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমদ বলেন, ছাত্রলীগ দেশের নিরীহ মানুষের জন্য ত্রাস হয়ে ওঠেছে।
চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মাদক, ধর্ষণ, হল দখল ও ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষম পরিবেশ নষ্ট করাসহ যাবতীয় অপরাধে সরকারের পোষ্য ছাত্র সংগঠনটির নাম সবার আগে আসে, এরাই আসল জঙ্গি।
ধর্মানুরাগী ও আলেম ওলামারা দেশের জন্য নিরাপদ, ইনিয়ে বিনিয়ে তাদেরকে জঙ্গি বলা বন্ধ করুন। ক্যাম্পাসে ধর্মীয় রাজনীতি বন্ধ নিয়ে সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি আরো বলেন, ধর্ম নিয়ে রাজনীতি তো তারা করে, আমরা ধর্ম মেনে রাজনীতি করি ধর্ম নিয়ে নয়।
আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা মুহাম্মাদ নেছার উদ্দিন বলেন, দেশের ৫ কোটি যুবকের মধ্যে প্রায় ১ কোটি যুবক মাদকাসক্ত। এদিকে মাদক বিধিমালা আইনে বলা হয়েছে, ২১ বছরের বেশি বয়সী যে কেউ পারমিটের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
হোটেল, রেস্তোরাঁয় বা যেসব স্থানে সাধারণ খাবার পরিবেশনের পাশাপাশি অ্যালকোহল সংরক্ষণ, প্রদর্শন ও পরিবেশন করা হয় তারা বার স্থাপনের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এসব অনৈতিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সরকার দেশটাকে মাদকের নেশায় বুঁদ করে ক্ষমতার মসনদ আঁকড়ে থাকার স্বপ্ন দেখে। কিন্তু এ দেশের সচেতন যুব সমাজ তাদের সেই আশার গুড়ে বালি ঢেলে দেবে।
-এটি