|| মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া ||
জোট হয় নানা ইস্যুকে কেন্দ্র করে। ইস্যু শেষ, জোটও শেষ। কখনো জোট হয় নির্বাচন কেন্দ্রিক। নির্বাচনী বৈতরণী পার হতেই জোটের আবেদন হ্রাস পেতে থাকে। আবার কখনো জোট হয় আন্দোলন কেন্দ্রিক। আন্দোলন নেই, জোটও হয়ে যায় অপাঙ্ক্তেয়।
জোট হবে, ভাঙ্গবে। কখনো বটবৃক্ষের ন্যায় জোটের দেহ হবে। কখনো হবে ক্ষুদ্র দেহবিশিষ্ট। কখনোবা এক জোট ত্যাগ করে অন্য দলের সাথে জোটবদ্ধ হতে হয়। কখনোবা জোট গঠনে দলীয় মৌলিক কর্মনীতির প্রতি গুরুত্ব দিতে হয়। পরিবেশ, পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করেই রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনগুলোর জোট হয়ে থাকে। এটাই স্বাভাবিক। এটাই তো চিরাচরিত নিয়ম। এ নিয়ে এতো মাতামাতির কি আছে! জোট ত্যাগের কারণে এমন কিছু লোককে সমালোচনার গোলা নিক্ষেপ করতে দেখা যায়, যাদের আদর্শিক আইডেন্টিফাই চিহ্নিত করা দুষ্কর।
আদর্শিক জোট হয় না। যদি আদর্শিক জোট করতে হয়, তাহলে ভিন্ন ভিন্ন দলের অস্তিত্ব থাকবে কেন? বহু দলে বিভক্ত না থেকে এক দলভুক্ত হওয়ার কথা। জোট গঠনে আদর্শকে প্রাধান্য দেয়ার প্রয়োজন হয় না। ভিন্ন মত, ভিন্ন আদর্শ, ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের সাথেও জোট হতে পারে। যেহেতু জোটবদ্ধ হওয়া সাময়িক, স্থায়ী নয়। তবে যে আমার অস্তিত্ব, আমার বোধ-বিশ্বাসকে ছুরিকাঘাতে রক্তাক্ত, ক্ষতবিক্ষত করে, তার সাথে জোটবদ্ধ হওয়া থেকে বিরত থাকাই মঙ্গলজনক।
জোটের প্রাপ্তি, ক্ষতি, উপকারিতা, অপকারিতা বিবেচনায় থাকা দরকার। বিবেচনায় না রাখলে জোটের দ্বারা প্রাপ্তির ঝুড়ি শুন্য থাকবে। জোটের উদ্দেশ্য যদি হয় অন্যের স্বার্থ সংরক্ষণ, অপরের ক্ষমতার মসনদে সমাসীন হওয়ার সহায়তা, আদর্শিক অর্জন শুন্যের কোঠায়, তাহলে সেই জোটের দ্বারা একটি আদর্শিক সংগঠনের অপমৃত্যুর পথ প্রশস্ত করা বৈ আর কিছু নয়।
কেএল/