আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: কথায় আছে স্বাস্থ্যই জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। আমাদের খাদ্যাভ্যাস জীবনযাত্রা স্বাস্থ্যের উপর বিশেষ প্রভাব ফেলে। আপনি যদি স্বাস্থ্যকর খাবার খান তাহলে সর্বদা সুস্থ এবং ফিট থাকবেন। তবে যদি ডায়েটে ট্রান্স ফ্যাট এবং পরিশোধিত পণ্য বেশি থাকে তাহলেই স্বাস্থ্যের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিবে। অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস আমাদের স্বাস্থ্যের উপর ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলে। লিভার, কিডনি এবং হার্ট সম্পর্কিত রোগের কারণ হতে পারে। এমনকি ক্যান্সারের ঝুঁকি পর্যন্তও বৃদ্ধি করতে পারে।
জেনে নিন যেসব খাবার ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়:
দুগ্ধজাত পণ্য: গবেষণায় দেখা গেছে, যে দুধ, চিজ এবং দইয়ের মতো কিছু দুগ্ধজাত পণ্যের সেবন, প্রস্টেট ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি করতে পারে। ২০১৪ সালের একটি পর্যালোচনা অনুসারে, দুগ্ধজাত পণ্যের সেবন ইনসুলিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে।
প্রক্রিয়াজাত মাংস: মাংস, পোলট্রি, মাছ এবং ডিম এই সবই স্বাস্থ্যকর তবে যদি ঠিকভাবে রান্না করা হয় এবং পরিমিত পরিমাণে খাওয়া হয়। তবে যেকোনও অ্যানিমেল-বেসড প্রোডাক্ট যদি স্মোকড এবং লবণ দ্বারা সংরক্ষিত থাকে তাহলে সেগুলি আমাদের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত ক্ষতিকর। এগুলি খেলে ওজন বৃদ্ধি থেকে ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। প্রক্রিয়াজাত মাংসে, কার্সিনোজেন নামক যৌগ থাকতে পারে এবং কোলোরেক্টাল ও পেটের ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি করতে পারে।
ফ্রায়েড ফুডস: ফ্রায়েড জাতীয় খাদ্যের অতিরিক্ত সেবন শরীরে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি করতে পারে। আলু কিংবা মাংসের মতো খাদ্য যখন উচ্চ তাপমাত্রায় ভাজা হয়। তখন acrylamide নামে একটি যৌগ তৈরি হয়। গবেষণায় দেখা গেছে যে, এই যৌগটিতে কার্সিনোজেনিক বৈশিষ্ট্য বর্তমান। এমনকি এটি ডিএনএ-কেও ক্ষতিগ্রস্ত করতে সক্ষম। তাছাড়া ভাজা খাবারের সেবন শরীরের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এবং প্রদাহকে বাড়িয়ে তোলে, যা ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধির সাথে জড়িত।
পরিশোধিত পণ্য: পরিশোধিত ময়দা, চিনি, তেল, প্রভৃতি শরীরে ক্যান্সার কোষ বিকাশের ঝুঁকি বৃদ্ধি করতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রক্রিয়াজাত চিনি এবং কার্বোহাইড্রেট, শরীরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এবং প্রদাহের ঝুঁকিও বাড়ায়। যার ফলে বিভিন্ন ধরণের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। যাদের ডায়েটে পরিশোধিত পণ্য বেশি থাকে, তাদের ডিম্বাশয়, এন্ডোমেট্রিয়াল (জরায়ু) কিংবা স্তনে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
অ্যালকোহল এবং কার্বোনেটেড পানীয়: অ্যালকোহল এবং কার্বোনেটেড পানীয়তে, ক্যালোরির পরিমাণ বেশি থাকার পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে রিফাইন্ড সুগারও থাকে। যদি অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণ করা হয় তাহলে শরীরে ফ্রি রেডিক্যালের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যার ফলে প্রদাহ সৃষ্টি হতে পারে। তাছাড়া অতিরিক্ত মাত্রায় অ্যালকোহলের সেবন, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দিতে পারে। যার ফলে ক্যান্সারের কোষ সনাক্ত করা কঠিন হয়ে যায়।
ক্যান এবং প্যাকেটজাত খাবার: ক্যান এবং প্যাকেটজাত খাবারের চাহিদা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইনস্ট্যান্ট পোহা, নুডলস, ইডলি, উপমা, পাস্তা, ফ্রায়েড ফুডস, পোলাও-এর মতো বিভিন্ন ধরণের প্যাকেটজাত খাবারে আজ বাজার ভরে গেছে। এই ধরনের খাবারে Bisphenol A (BPA) নামক রাসায়নিক উপস্থিত। এই যৌগটি যখন খাদ্যে দ্রবীভূত হয়, তখন হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, ডিএনএতে পরিবর্তন এবং ক্যান্সার হতে পারে।
-এসআর