মুফতি মুহাম্মাদ ইবরাহীম আল খলীল
কালিমা বা তাওহীদ ইসলামী সমাজ ব্যবস্থার বিশেষ চাহিদাগুলো বাস্তব একটা চিত্র পেশ করে। যে সমাজে কালিমার মূল রূপ পরিস্ফুট হয় না সে সমাজ কখনোই ইসলামী সমাজ হতে পারে না।
কালিমা হচ্ছে একটি পরিপূর্ণ জীবনাদর্শের ভিত্তি। এ ভিত্তির উপরেই উম্মতের বিরাট প্রাসাদটি গড়ে উঠেছে। এ ভিত্তিটি সুদৃর ভাবে প্রতিষ্ঠিত না হলে তার উপর কিছুতেই জীবনযাত্রার প্রণালী রচিত হতে পারেনা।
এ ভিত্তির বদলে অন্য কোন ভিত্তি অবলম্বন অথবা ভিত্তির সাথে অন্য কোন আদর্শের আংশিক সংমিশ্রণ ঘটিয়ে জীবন বিধান রচনার প্রচেষ্টায় যে সমাজ গড়ে উঠবে তাকে কিছুতেই ইসলামী সমাজ আখ্যা দেয়া যাবে না।
আল্লাহ তাআলা বলেন, إن الحكم إلا لله أمر ألا تعبدوا إلا إياه ذلك الدين القيم ولكن أكثر الناس لا يعلمون অর্থ: আইন-বিধান জারী করার অধিকার একমাত্র আল্লাহ তাআলার। আর তিনি আদেশ দিচ্ছেন যে, তোমরা আল্লাহ তা'আলাকে ছাড়া অন্য কারো গোলামী করবে না। এটাই হচ্ছে সঠিক জীবন বিধান। (সূরা ইউসুফ, আয়াত: ৪০)
ইসলাম বা ঈমানের অন্যান্য ভিত্তি সমূহ:- ঈমানের মোট ভিত্তি বা বুনিয়াদ হল ৫ টি। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
بُنِيَ الإسْلامُ على خَمْسٍ: شَهادَةِ أنْ لا إلَهَ إلّا اللَّهُ وأنَّ مُحَمَّدًا رَسولُ اللَّهِ، وإقامِ الصَّلاةِ، وإيتاءِ الزَّكاةِ، والحَجِّ، وصَوْمِ رَمَضانَ.
(صحيح البخاري: ٨ )
আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ইসলামের স্তম্ভ হচ্ছে পাঁচটি। ১. আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন উপাস্য নেই এবং নিশ্চয়ই মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল এ কথার সাক্ষ্য প্রদান করা। ২. নামাজ কায়েম করা। ৩. যাকাত আদায় করা। ৪. হজ সম্পাদন করা। ৫. রমজানের রোযা রাখা।
ঈমানের রুকনসমূহ:- ঈমান বা তাওহীদের রুকন ২টি। এক. كفر بالطاغوت বা তাগুতকে অস্বীকার করা। দুই. إيمان بالله বা এক আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা। এর দলিল হচ্ছে আল্লাহ তাআলার নিন্মোক্ত বাণী,
فمن يكفر بالطاغوت ويؤمن بالله فقد استمسك بالعروة الوثقى لا انفصام لها والله سميع عليم
অর্থ: যে তাগুতকে (আল্লাহ বিরোধী সবকিছুকে) অস্বীকার ও অমান্য করে এবং আল্লাহর উপর ঈমান আনে, সে এমন এক সুদৃঢ় ও মজবুত অবলম্বনকে আঁকড়ে ধরে, যা ভাঙ্গার নয়। (সূরা বাকারা, আয়াত:২৫১)
উল্লেখিত আয়াতেفمن يكفر بالطاغوت (তাগুতকে অস্বীকার করা) হচ্ছে প্রথম রুকন। আরويؤمن بالله (আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা) হচ্ছে দ্বিতীয় রুকন। এবং العروةالوثقى (শক্ত রুজ্জু) বলতে لا اله الا الله কালিমাকে বুঝানো হয়েছে। আর এটাই মূলত তাওহীদের কালিমা।
-এটি