আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: যশোরের চৌগাছায় মায়ের লাশ দাফন নিয়ে মারামারিতে জড়িয়েছেন ছেলেরা। পরে চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) হস্তক্ষেপে ওই নারীর লাশ দাফন করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলাপর হাকিমপুর ইউনিয়নের তজবীজপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শতবর্ষী আছিরণ বেগমের কাছ থেকে ২ কোটি টাকা মূল্যের ৮ বিঘা জমি লিখে নেন তার দুই ছেলে বজলুর রহমান (৬৫) ও ফজলুর রহমান (৭০)।মায়ের সম্পদ থেকে বঞ্চিত করা হয় অন্য দুই ছেলে ও দুই মেয়েকে। পরে তারা তাদের মাকে একটি ভাঙাচোরা টিনের ঘরে মলমূত্রের মধ্যে রেখে দেন।
পরে গত ২২ জুন সংবাদ পেয়ে চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইরুফা সুলতানা বিভিন্ন ধরনের ফল কিনে নিয়ে গিয়ে ওই বৃদ্ধাকে দেখে আসেন। পরে মলমূত্রের মধ্যে থেকে তাকে তার ছেলে বজলুর রহমানের ফ্ল্যাটে উঠিয়ে দিয়ে আসেন ইউএনও। এরপরও মাকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করতে থাকে বজলুর রহমান ও ফজলুর রহমান।
পরে ওই বৃদ্ধার এক মেয়ে তাকে তার বাড়িতে নিয়ে যান। তবে ওই বৃদ্ধা সেখানে না থাকতে চাওয়ায় কয়েকদিন আগে আবারও ছেলের বাড়িতে দিয়ে যান তাকে। এরপরই ছেলে বজলুর রহমান ও ফজলুর রহমান আবারও তাদের মাকে সেই টিনের ঘরে রেখে আসেন। সেখানেই গতকাল দুপুরে মারা যান ওই বৃদ্ধা।
দুপুরে আছিরণ বেগমের মৃত্যু হলেও তার নির্দিষ্ট করে যাওয়া জায়গার বদলে অন্য জায়গায় কবর খোঁড়ার ব্যবস্থা করেন দুই ছেলে বজলুর রহমান ও ফজলুর রহমান।
এনিয়ে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন সেঝ ছেলে জামির হোসেন, দুই মেয়ে ও হারিয়ে যাওয়া অন্য ছেলের মেয়েরা। তারা আছিরণের ঠিক করে যাওয়া জায়গায় তার স্বামীর কবরের পাশে (চৌগাছা-কোটচাঁদপুর) সড়কের তজবীজপুর গ্রামে কবর দিতে যান। তবে বজলুর রহমান ও ফজলুর রহমান অন্য নির্জনস্থানে কবর খুঁড়ে রেখে সেখানে তাদের মাকে কবর দিতে নিজেদের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন।
এনিয়ে, তাদের মধ্যে মারামারি লেগে যায়। পরে বিষয়টি থানা-পুলিশ পর্যন্ত গড়ায়। চৌগাছা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম সবুজের নির্দেশে পুলিশ বজলুর রহমান, ফজলুর রহমান, জামির হোসেনসহ নাতি-নাতনিদের থানায় নিয়ে আসেন।
সেখানে রাত দশটা ১৫ মিনিটের দিকে আপস-মিমাংসা শেষে বজলুর রহমান ও ফজলুর রহমানদের খুড়ে রাখা কবরেই আছিরণকে কবর দেওয়ার অন্যরা একমত হন। পরে রাত ১১টায় তজবীজপুর গ্রামের বাড়িতে জানাজা শেষে ওই বুদ্ধাকে দাফন করা হয়। ওসি সাইফুল ইসলাম সবুজও জানাজায় অংশ নেন।
বিষয়টি নিশ্চত করে ওসি সাইফুল ইসলাম সবুজ বলেন, আপস-মিমাংসা শেষে রাত ১১টায় ওই মায়ের জানাজা সম্পন্ন হয়। পরে বড় দুই ছেলের খুঁড়ে রাখা কবরেই সবার সম্মতিতে তাকে দাফন করা হয়।
-এটি