ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি: ফরিদপুরের সালথার বুড়িদিয়া-খোয়াড় সড়কের মালঞ্চ বিলের ওপর নির্মিত সেতুর দুই পাশের সংযোগ সড়ক ভেঙ্গে গিয়ে বেহাল দশায় পরিনত হয়েছে। সংযোগ সড়কের বেহাল দশার কারনে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে কয়েক গ্রামের হাজার হাজার মানুষকে। সংযোগ সড়ক দিয়ে যান চলাচল তো দুরের কথা পায়ে হেঁটেও চলাচল করা দুষ্কর। আর এভাবে চলছে প্রায় অর্ধযুগ। এতে ওই পথ দিয়ে চলতে গিয়ে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে কয়েক গ্রামের হাজারো মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার গট্টি ও আটঘর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী বুড়িদিয়া ও খোয়াড় গ্রামের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে মালঞ্চ বিল। মালঞ্চ বিলের দক্ষিন পাশে রয়েছে সিংহপ্রতাপ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। যান চলাচল বন্ধ থাকায় দুই ইউনিয়নের সেনহাটি, খোয়াড়, বুরিদিয়া, নারানপুর, সিংহপ্রতাপ, মেম্বার গট্টি, গৌড়দিয়া গ্রামসহ আট থেকে দশটি গ্রামের হাজারো মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। কৃষকরা তাদের কৃষিপন্য মাথায় করে নিয়ে বাজারজাত করছেন। শতশত শিক্ষার্থী যানবাহন ব্যবহার করে তাদের শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে চলাচল করতে পারছে না।
সরেজমিনে গিয়ে যানা যায়, এক যুগ আগে এই দুই ইউনিয়নের মানুষের যাতায়াতের জন্য বিলের ওপর দিয়ে নির্মাণ করা হয় একটি সেতু। শুরুতেই সেতুর দুই পাশে নির্মাণ করা হয় ইটের সংযোগ সড়ক। কিন্তু দীর্ঘদিনেও সংযোগ সড়কের কোন সংস্কার না করায় ভেঙ্গে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে অত্র এলাকার স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের চলাচলের একমাত্র পথ এটি। প্রায় অর্ধযুগ ধরে সড়কের মাটি ভেঙ্গে সড়কটি ভেঙ্গে গেছে। সেই সাথে সড়কের বিভিন্ন স্থান থেকে ইটগুলোও উধাও হয়ে গেছে। ফলে বিলের ওপর সেতুটি ঠাঁই দাড়িয়ে থাকলেও যান চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে যানবাহন চলাচল। উপায়ন্তর না পেয়ে কোন মতে পায়ে হেঁটে চলাচল করছে পথচারীরা।
সিংহপ্রতাপ গ্রামের বাসিন্দা মো. সাদেকুর রহমান বলেন, ব্রিজ থাকলেও সংযোগ সড়কের বেহাল দশা। এভাবে প্রায় ৬ বছরের অধিক সময় ধরে সেতুর ওপর দিয়ে মানুষ বাধ্য হয়ে পায়ে হেঁঁটে চলাচল করলেও যানবাহন চলাচল প্রায় পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।
খোয়াড় গ্রামের কৃষক মোঃ আলী শেখ, আরশাদ মাতুব্বর, সাফিকুল ইসলাম, রাকিব হোসেন জানান, ব্রীজের সংযোগ সড়ক না থাকায় আমাদের চলাচলে চরম অসুবিধার সৃষ্টি হয়েছে। কৃষিপণ্য ও বিভিন্ন মালপত্র আনা নেওয়ায় সালথা উপজেলা সদরে যেতে হলে অন্য রাস্তা দিয়ে পাঁচ থেকে সাত কিলোমিটার পথ ঘুরে যেতে হয়। দীর্ঘ প্রায় পাঁচ থেকে ছয় বছর ধরে এভাবেই পড়ে আছে। রাস্তার ইটগুলো একে একে চুরি হয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে কারো মাথা ব্যাথা বা ভ্রুক্ষেপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে গট্টি ইউনিয়ন (ইউপি) পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান লাবলু বলেন, ব্রিজের সংযোগ সড়কের বেহাল অবস্থার কারনে কয়েক গ্রামের মানুষের কষ্টের যেন শেষ নেই। চলাচলে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। যানবাহন তো দুরে থাক পায়ে হেঁটে মানুষ চলতে পারে না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি একাধিকবার কিন্তু কাজের কাজ হয়নি কিছুই।
সালথা উপজেলা প্রকৌশলী (স্থানীয় সরকার বিভাগ) মো. তৌহিদুর রহমান বলেন, উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ-আলোচনা করে ওই সেতুর সংযোগ সড়ক দ্রুত মেরামত করার উদ্যোগ ও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছাঃ তাছলিমা আকতার বলেন, উপজেলা প্রকৌশলীকে বলা হয়েছে। এই ব্রিজ এবং রাস্তার বিষয়ে এস্টিমেট করে প্রকল্প অনুমোদনের জন্য ব্যবস্থা গ্রহনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
-এএ