আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: বর্ষাকালে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ দেখা দেয়। এখন ডেঙ্গুর মৌসুম। সতর্ক না হলে শিশু থেকে সব বয়সি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হতে পারেন। ডেঙ্গুর সবচেয়ে ঝুঁকি হচ্ছে রক্তের প্লাটিলেট কমে যাওয়া। শিশুসহ যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের এতে মৃত্যুঝুঁকি আছে।
ডেঙ্গু রোগ মশার কামড়ে ছড়ায়। তাই এগুলো সাধারণত বর্ষাকালে হয়, যা মশার বেঁচে থাকা এবং প্রজনন উভয়কেই সাহায্য করে। অন্য সব জ্বরের বিপরীতে যেখানে জ্বরের সময় বিপদ, ডেঙ্গুর বিপদের সময় জ্বর কমে যাওয়ার সময়। বমি, পেট ব্যথা, অস্থিরতা বা অলসতা এবং যেকোনো স্থান থেকে রক্তপাতের মতো সতর্কতা চিহ্নসহ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত শিশুদের নিবিড় পর্যবেক্ষণের জন্য হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন।
ব্যক্তিগত নিরাপত্তা: ঘুমের সময় বিছানায় মশারি ব্যবহার করতে হবে। শিশুকে হালকা রঙের ফুলহাতা জামা ও ফুলপ্যান্ট পরাতে হবে, যাতে হাত ও পা পুরোপুরি ঢেকে যায়। স্কুলের ইউনিফর্মও যাতে পুরো হাত ও পা ঢেকে যায়। পা পুরোপুরি ঢেকে রাখতে মোজা এবং জুতা পরাতে হবে।
মশা নির্মূল: এক. বাসায় নিয়মিত মশা নিরোধক প্রয়োগ করতে হবে। মশার স্প্রে ব্যবহার করুন। সম্ভাব্য স্থান যেখানে মশা থাকে যেমন- আসবাবপত্রের নিচে, পর্দার আড়ালে এবং বাইরের জায়গা যেমন গ্যারেজ, ঝোপঝাড়, বিছানা এবং বাড়ির চারপাশে পুরু গাছপালা।
দুই. স্কুলের জানালা ও দরজায় পর্দা লাগান।
তিন. স্যাঁতসেঁতে এবং অন্ধকার জায়গা তৈরি করা এড়িয়ে চলুন যেখানে মশা থাকে।
চার. নিয়মিতভাবে ছুটির সময় শ্রেণিকক্ষ, খেলার মাঠ এবং স্কুলের চারপাশে ফগিং করুন। মশার কার্যকলাপ সবচেয়ে বেশি হলে সন্ধ্যা বা ভোরের দিকে করা হলে সবচেয়ে ভালো হয়।
মশা নিয়ন্ত্রণ: এক. বাগান পরিষ্কার-পরিছন্ন ও পরিপাটি রাখতে হবে এবং ঝোপঝাড় যতটা সম্ভব ছোট করে ছাঁটাই করে দিতে হবে। যদিও এটি প্রজনন ক্ষেত্র নয় তবে এটি প্রাপ্তবয়স্ক মশার জন্য সম্ভাব্য লুকানোর জায়গা হিসাবে কাজ করে যা ভবিষ্যতের প্রজননকারী।
দুই. গাছের টবে, বালতি, পুরোনো টায়ার কিম্বা কোনো পাত্রে পানি জমিয়ে রাখা যাবে না।
তিন. টিন, পাত্র এবং টায়ারের মতো জল ধারণ করতে পারে এমন সব আবর্জনা সরাতে হবে যা মশার প্রজনন ক্ষেত্র।
চার. কৃত্রিম পুকুর বা জলাশয় নির্মাণ করবেন না। যদি আগে থেকে পুকুর বা জলাশয় তৈরি থাকে তবে তাতে লার্ভিসাইডাল এজেন্ট বা লার্ভিসাইডাল মাছ ব্যবহার করুন।
পাঁচ. আটকে থাকা বৃষ্টির নালা ও ড্রেনগুলো পরিষ্কার করুন।
জটিলতা: ডেঙ্গু জ্বর সাধারণত চতুর্থ দিনের মধ্যেই কমে যায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই জ্বরের পরই অনেকে সুস্থ হয়ে যান। পঞ্চম থেকে সপ্তম দিন পর্যন্ত সংকটকালীন পর্যায়। তখন প্লাজমা লিকেজ শুরু হয় এবং পরবর্তী জটিলতাগুলো ধারাবাহিকভাবে দেখা দেয়। তখন রক্তক্ষরণ বা শক হতে পারে।
মনে রাখবেন
এক. জ্বর হলে জ্বর কমাতে শুধু প্যারাসিটামল খাওয়াতে হবে।
দুই. কুসুম গরম পানি দিয়ে শরীরে স্পঞ্জ করতে হবে।
তিন. পর্যাপ্ত পানি, স্যালাইন ও তরল পান করাতে হবে।
চার. জটিলতা এড়াতে শিগগিরই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
পাঁচ. ঘুমের সময় মশারি ব্যবহার করতে হবে।
ছয়. বাড়ির পরিষ্কার-পরিছন্নতার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। বিশেষ করে কোথাও যেন পানি না জমে থাকে।
-এএ
