সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
চিকিৎসকরা বছরে দুইবারের বেশি বিদেশ যেতে পারবেন না ঢাকা থেকে ভাঙ্গা হয়ে খুলনায় গেলো পরীক্ষামূলক ট্রেন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন প্রধান উপদেষ্টা: প্রেস উইং ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সাম্যের ভিত্তিতে সংবিধান রচনার আহ্বান নেপালে ফের কুরআন প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে সৌদি আগামীকাল সংবিধান সংস্কার কমিশনে প্রস্তাবনা পেশ করবে ইসলামী আন্দোলন ‘আল্লামা আতহার আলী রহ. জীবন, কর্ম, অবদান’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন আগামীকাল হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী রহ. : কে এই মহান ব্যক্তি হাজিদের স্বার্থ রক্ষায় সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : ধর্ম উপদেষ্টা মহানবীকে সা. নিয়ে কটূক্তি করলে সংবিধানে শাস্তির বিধান রাখার প্রস্তাব পার্থের

গৃহহীনদের কাছে ২৬,২২৯টি ঘর হস্তান্তর করবেন প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: সরকারের ভূমি ও গৃহহীন মানুষের জন্য আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার অংশ হিসেবে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ের আওতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভূমি ও গৃহহীনদের কাছে আরও ২৬ হাজার ২২৯টি ঘর হস্তান্তর করবেন।

বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি এই গৃহ ও ভূমিহীন মানুষের কাছে ঘরের দলিল ও চাবি হস্তান্তর করবেন।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গতকাল সোমবার এক প্রেস ব্রিফিংকালে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

ড. কায়কাউস বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ভূমি ও গৃহহীন মানুষের কাছে ভার্চুয়ালি ঘরের দলিল ও চাবি হস্তান্তর করবেন। পাঁচটি জেলার পাঁচটি স্থানের সঙ্গে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত থাকবেন।

স্থানগুলো হচ্ছে: লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলাধীন চরকলাকোপা আশ্রয়ণ প্রকল্প, বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলাধীন গৌরম্ভা আশ্রয়ণ প্রকল্প, ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলাধীন চর ভেড়ামারা আশ্রয়ণ প্রকল্প, পঞ্চগড় জেলার পঞ্চগড় সদর উপজেলাধীন মহানপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্প ও মাগুরা জেলার মোহাম্মদপুর উপজেলাধীন জাঙ্গালিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্প।

আহমদ কায়কাউস জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পঞ্চগড় ও মাগুরা জেলার সব কটি উপজেলাসহ ৫২টি উপজেলাকে গৃহ ও ভূমিহীন উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করবেন।

তিনি আরও বলেন, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ে দেশব্যাপী মোট ৬৭ হাজার ৮০০টি ঘর দেয়া হচ্ছে। এই ৬৭ হাজার ৮০০ ঘরের মধ্যে ২০২২ সালের ২৬ এপ্রিল ৩২ হাজার ৯০৪টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে এবং বাকি ৮ হাজার ৬৬৭টি ঘর নির্মাণাধীন। প্রকল্পের আওতায় ২০২১-২২ পর্যন্ত ১ লাখ ৮৫ হাজার ১২৯টি বাড়ি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

প্রথম পর্যায়ে ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি ৬৩ হাজার ৯৯৯ গৃহ ও ভূমিহীন পরিবার তাদের মাথার ওপর ছাদ পায়। আর গত বছরের ২০ জুন আশ্রয়ণ প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে ৫৩ হাজার ৩৩০টি পরিবার ঘর পায়।

আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ে অধিকতর টেকসই ও জলবায়ু সহিষ্ণু করে গড়ে তুলতে ঘরগুলোর নকশা পরিবর্তন করা হয়। এতে ঘরগুলোর নির্মাণ খরচ বেড়ে যায়। আর এ জন্যই এখন গৃহ ও ভূমিহীন মানুষ দুই শতাংশ জমির ওপর আরও উন্নতমানের টিনশেডের আধা পাকা ঘর পাবে। ঘরগুলোকে অধিকতর টেকসই করে গড়ে তোলায় প্রতিটি ঘরের নির্মাণ ব্যয় ১ লাখ ৯১ হাজার টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২ লাখ ৫৯ হাজার ৫০০ টাকায় উন্নীত হয়। ঘরগুলো অধিকতর টেকসই করতে কড়ই কাঠ, পাথর ও রিইনফোর্স কংক্রিট কলাম (আরসিসি) পিলার ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

আহমদ কায়কাউস জানান, ২০২১-২২ অর্থবছর পর্যন্ত ঘরের নির্মাণের জন্য ৪০২৮ দশমিক ৯৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তৃতীয় পর্যায়ের আওতায় চরাঞ্চলের জন্য ১ হাজার ২৪২টির মতো বিশেষভাবে নকশা করা ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় কিংবা বন্যার মতো যেকোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিষয়টি মাথায় রেখে বিশেষভাবে স্থানান্তরযোগ্য করে ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়েছে, যাতে বাড়িগুলো অন্য স্থানে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে।

তিনি বলেন, ভূমি ও গৃহহীন মানুষের আবাসনের জন্য সরকার খাসজমি ছাড়াও ১৯১ দশমিক ৭৯ একর জমি ক্রয় করেছে। বিশ্বের এটা একমাত্র দৃষ্টান্ত যে, কোনো দেশের সরকার এ ধরনের কাজে জমি ক্রয় করেছে। জমি ক্রয়ের জন্য ১৩৪ দশমিক ৪৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ক্রয় করা জমিতে যে ঘরগুলো নির্মিত হয়েছে, সেখানে মোট ৮ হাজার ৪৬২টি গৃহ ও ভূমিহীন পরিবারের আবাসনের ব্যবস্থা হবে।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে সরকার এই প্রকল্পের জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে ৫ হাজার ৫১২ দশমিক ০৪ একর জমি উদ্ধার করে। উদ্ধার করা এই খাসজমির বাজারমূল্য ২ হাজার ৯৬৭ দশমিক ০৯ কোটি টাকা। আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ১৯৯৭ থেকে মোট ৫ লাখ ৯ হাজার ৩৭০টি পরিবারের বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় পুনর্বাসিত পরিবারগুলোকে তিন মাসের জন্য ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসা হবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, সরকারের নীতি অনুযায়ী, এ সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় বীর মুক্তিযোদ্ধা, বয়স্ক, বিধবা ও অসমর্থ মানুষকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের জন্য কমিউনিটি সেন্টার, মসজিদ, গোরস্থান, পুকুর ও রাস্তাঘাটও তৈরি করা হচ্ছে। প্রকল্প এলাকাগুলোতে বিভিন্ন ধরনের ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছ লাগানো হয়েছে। গৃহহীনদের কৃষিকাজে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্যও উৎসাহিত করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রস্তাবিত আশ্রয়ণ প্রকল্পটির একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, জাতিসংঘ টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি)-এর আবাসনের সঙ্গে এর একটি বিশেষ যোগাযোগ আছে।

বিভিন্ন টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে পথে কেবল এই গৃহ নির্মাণ প্রকল্পটিই হতে পারে প্রধান পদচিহ্ন। অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, নারীর ক্ষমতায়নের মতো ক্ষেত্রগুলোতে এই আবাসন প্রকল্প ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে ভূমিকা রেখেছে।

-এএ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ