আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: হজের মূল আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে একটি হলো হাজিদের আরাফার ময়দানে অবস্থান করা। দিনটিকে হজের দিনও বলা হয়। আরাফার দিনটি হলো জিলহজ মাসের নবম দিন, যা চলতি বছর ৮ জুলাই পালিত হচ্ছে।
আজ সারা বিশ্ব থেকে ১০ লাখ মুসলমান ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দানে সমবেত হচ্ছেন। তাদের কণ্ঠে 'লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান্নি’মাতা লাকা ওয়ালমুক' ধ্বনিত হচ্ছে।
জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিন হলো পুরো ইসলামী বছরের শ্রেষ্ঠ দিন। রাসুল (সাঃ) বলেছেন, 'জিলহজের এই (প্রথম) দশদিনের চেয়ে মহান এবং আল্লাহর কাছে প্রিয় আর কোনো দিন নেই।'
৯ জিলহজ তীর্থযাত্রীরা আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করবেন। এখানে তারা জুহর ও আসরের নামাজ আদায় করবেন এবং সারা দিন দু'আ করে কাটাবেন। তারা কিবলামুখী হয়ে সূর্যাস্ত পর্যন্ত দাঁড়িয়ে তাদের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে। এ দিন আল্লাহ সবচেয়ে বেশি মানুষকে ক্ষমা করেন। এ বছর আরাফার মসজিদে নামিরা থেকে হজের খুতবা দেবেন শায়খ ড. মোহাম্মদ বিন আবদুল করিম আল ঈসা। হজযাত্রীরা সূর্যাস্তের সময় আরাফাত থেকে রওনা হবেন এবং মুজদালিফায় যাত্রা করবেন। সেখানে তারা মাগরিব ও এশার নামাজ পড়বেন।
করোনভাইরাস মহামারিজনিত বিধিনিষেধের কারণে দুই বছর সংখ্যা হ্রাসের পরে এবার বিদেশ থেকে সাড়ে আট লাখসহ মোট ১০ লাখ পূর্ণ ডোজ টিকাপ্রাপ্ত মুসলমান নিয়ে হজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বুধবার (৬ জুন) লাখ লাখ মুসলমান ইসলামের পবিত্রতম স্থান মক্কার গ্র্যান্ড মসজিদে কাবা শরীফ প্রদক্ষিণ (তাওয়াফ) করেন। বৃহস্পতিবার হজযাত্রীরা আরাফার ময়দানে মূল অনুষ্ঠানের আগে গ্র্যান্ড মসজিদ থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে মিনায় অবস্থান করেন।
হজযাত্রীদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন করেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। হজযাত্রীদের জন্য মক্কা ও মদিনায় ২৩টি হাসপাতাল এবং ১৪৭টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রস্তুত করেছে সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এ ছাড়া মিনায় হজযাত্রীদের চিকিৎসার জন্য চারটি হাসপাতাল ও ২৬টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। রোগীদের নিবিড় পরিচর্যার জন্য এক হাজারেরও বেশি শয্যা রয়েছে এবং বিশেষ করে হিটস্ট্রোক করা রোগীদের জন্য ২০০টিরও বেশি শয্যা রয়েছে। একই সঙ্গে ২৫ হাজারেরও বেশি স্বাস্থ্যকর্মী কেউ অসুস্থ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
২০১৯ সালে সারাবিশ্ব থেকে প্রায় ২৫ লাখ মুসলমান হজে অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু এরপরে মহামারি সংখ্যা হ্রাস করতে বাধ্য করেছিল।
২০২১ সালে মাত্র ৬০ হাজার সম্পূর্ণ টিকাপ্রাপ্ত সৌদির বাসিন্দা হজে অংশ নিয়েছিল, যা ২০২০ সালে ছিল মাত্র কয়েক হাজার।
-কেএল