মো. সাখাওয়াত হোসেন
ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি>
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বাজার পাড়ের প্রধান সড়ক ও ঈদগাঁও মাদ্রাসার সামনে ভয়াবহ পৃথক দুটি অগ্নিকান্ডে ১১টি দোকান সম্পূর্ণ আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে। এতে কমপক্ষে পাঁচ কোটি টাকার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে দাবি করেন ব্যবসায়ীরা।
শুক্রবার (১ জুলাই) রাত পৌনে ১২টার দিকে দুটি দোকানে ও শনিবার (২ জুলাই) ভোর ৫টায় আরও ৯টি দোকান আগুনে পুড়েছে বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা।
বাজারের ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিদিনের মত তারা দোকান বন্ধ করে বাড়িতে ফিরে যায়। পরে রাত পৌনে ১১টার দিকে বিভিন্ন ব্যবসায়ীর মোবাইল ফোনে বাজারের অন্যান্য ব্যবসায়ীরা আগুন লাগার খবর জানালে তারা বাজারে ছুটে আসেন। সেসময় এসে দেখেন জীবনের শেষ সম্বলটুকু ধাউ ধাউ আগুনে পুড়ছে। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুনের ঘটনায় রাতে শত চেষ্টা করলেও শেষ রক্ষা করতে পারেনি ব্যবসায়ীদের সম্পদ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, রাতে আগুন লাগার কথা শুনে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌছালেও বিদ্যুৎ অফিস থেকে বিদ্যুৎ এর লাইন অফ করতে বিলম্ব করায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সমস্যা হয়।
এদিকে শনিবার (২ জুলাই) ভোর ৫টায় আগুনের ঘটনা ঘটে রাতের আগুনের ঘটনাস্থল থেকে মাত্র ১০০ গজ দূরে ভাঙ্গা বাজারের প্রধান সড়ক মিষ্টি ও ফলের গলিতে। ভোর বেলায় একটি মিষ্টির দোকান থেকে আগুনের কুন্ডলী উঠতে দেখে সাহা মিষ্টির দোকান মালিক ও হোটেল ব্যবসায়ী রবিউলসহ পাশের দোকানদাররা আগুন আগুন বলে চিৎকার করতে থাকে। পরে তারা স্থানীয় দমকল বাহিনীর সদস্যদের খবর দেন।
দমকল বাহিনীর সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে আসলেও আগুনের লেলীহীন শিখা ততক্ষণে একে একে সকল ঘরে লেগে যায়। এতে আগুনের ধোঁয়ায় গোটা এলাকায় অন্ধকারে পরিণত হয়ে উঠে। সময় বাড়তে থাকায় ব্যবসায়ীদের সাথে আগুন নেভাতে এসময় এগিয়ে আসে পথচারীরা। একপর্যায়ে দমকল বাহিনীর সদস্যরা ঘণ্টাব্যাপী অভিযান চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ আনতে পারলেও সাহা মিত্রর, আকতার ও বিসমিল্লাহ মিষ্টি ভান্ডার, সাইদুলের ফলের দোকান, জাহিদের চায়ের দোকান, রবিউল ও আরজুর হোটেল, একটি কনফেকশনারী, ঈদগাঁ মাদ্রাসার আরজুর ইলেকট্রনিক দোকান ও ডা. জাহিদের ওষুধের দোকান আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
এ ঘটনায় ভাঙ্গা ফায়ার সার্ভিস এর ষ্টেশন অফিসার জাফর আহমেদ বলেন, পৃথক দুটি স্থানে বৈদ্যুতিক সর্টসার্কিট থেকে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত ঘটে।
তিনি বলেন, পানি দেওয়ার সময় বিদ্যুতের সর্ট খেয়ে আমাদের এক অফিসার আহত হন এজন্য আগুন নিয়ন্ত্রনে আনতে বিলম্ব হয়েছে। তবে দোকান গুলো মিশানো ও ঘন ঘন থাকায় দ্রুত গতিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এ মূহুর্তে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তদন্ত না করে বলা যাচ্ছে না।
এ বিষয় ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব আজিম উদ্দিন রুবেল বলেন, আমি খবর পেয়ে সাথে সাথে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত দোকানীদের মাঝে ঢেউটিন ও কিছু নগদ অর্থ বিতরণ করা হবে। শত্রুতা মূলক বা নাশকতা মূলক অগ্নিকান্ড ঘটানোর বিষয়ে দোকানিদের মাঝে সন্দেহ থাকলে মামলা করার সুযোগ থাকবে।
-এএ