নুরুদ্দীন তাসলিম।।
প্রায় এক দশক পর ২৫ জুন চালু হতে যাচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু। পদ্মা সেতু দিয়ে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যাতায়াত সহজ হবে, সময়ও কমবে। পদ্মা সেতু এই অঞ্চলের মানুষের জন্য অপার সম্ভাবনা খুলে দেয়ার বিষয়টি আলোচানায় উঠে এসেছে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে। এতে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি মাদরাসা শিক্ষার্থীদের ভোগান্তিও কমে আসবে অনেকাংশে। মাওয়া অথবা আরিচা হয়ে যাতায়াতের বিপরীতে সহজেই তারা চলে আসতে পারবেন রাজধানীতে। রাজধানী থেকে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে পড়তে যাওয়া শিক্ষার্থীরাও পাবেন সুবিধা।
এ বিষয়ে চরমোনাই জামিয়া রশিদিয়া ইসলামিয়া আহসানাবাদ মাদরাসার মুহাদ্দিস ও বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ডের মহাসচিব আল্লামা নুরুল হুদা ফয়েজী আওয়ার ইসলামকে বলেছেন, ‘পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মাধ্যমে রাজধানীর সাথে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের যাতায়াত সুবিধা বাড়বে। এতে সাধারণের পাশাপাশি মাদরাসা শিক্ষার্থীদের ভোগান্তিও কমবে। তবে সেতু পারাপারের যে ব্যয় এতে মানুষ কতটা সুবিধা ভোগ করতে পারবে তা ভাবার বিষয়।
তিনি বলেন, সেতুর টোল আদায়ের যে বিবরণ সামনে এসেছে, এতে সাধারণ মানুষ আসলে কতটা সুবিধা ভোগ করতে পারবেন তা নিয়ে আরো ভাবতে হবে।
একই বিষয়ে মাদারীপুর জেলার শিবপুরে অবস্থিত জামিয়াতুস সুন্নাহ মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা নেয়ামতুল্লাহ ফরিদী বলেছেন, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মাদরাসাগুলোতে এই অঞ্চলের ছাত্রদের উপস্থিতিই বেশি। তবে দেশের উত্তর-পূর্ব অংশের ছাত্ররাও এই অঞ্চলে পড়াশোনা করতে আসে। এতো দিন তাদের পাঠানোর ক্ষেত্রে অভিভাবকেদের যেই আশঙ্কা ছিল তা এখন আর থাকবে না। সহজেই তারা যাতায়াত করতে পারবে। এদিক থেকে এটা একটা ভালো ও সম্ভবনাময় দিক।
তবে ব্যয়ভারের বিষয়টি সামনে এনে তিনিও বলেছেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে পদ্মা সেতু নির্মাণ হয়েছে নিজস্ব অর্থায়নে। এর মানে এতে জনগণের অর্থই ব্যয় করা হয়েছে। তাই জনগণের অর্থে নির্মিত সেতুর সুবিধা ভোগ করতে টোল অবশ্যই তাদের জন্য সহনীয় মাত্রায় হওয়া উচিত। কিন্তু যেভাবে টোল ধরা হয়েছে তা দুঃখনজক’ বলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনে পদ্মা সেতু পারাপারে যানবাহনের টোলের হার জানিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, মোটরসাইকেল নিয়ে পদ্মা সেতু পার হতে চাইলে টোল দিতে হবে ১০০ টাকা। কার ও জিপের জন্য ৭৫০ টাকা আর পিকআপের জন্য ১২০০ টাকা দিতে হবে। মাইক্রোবাসে লাগবে ১৩০০ টাকা।
বাসের জন্য আসনের ভিত্তিতে তিন ধরনের টোল নির্ধারণ করা হয়েছে। ছোট বাসে (৩১ আসন বা এর কম) ১৪০০ টাকা, মাঝারি বাসে (৩২ আসন বা এর বেশি) ২০০০ টাকা এবং বড় বাসে (৩ এক্সেল) ২৪০০ টাকা টোল দিতে হবে।
পণ্যবাহী বাহনের ক্ষেত্রে ছোট ট্রাক (৫ টন পর্যন্ত) ১৬০০ টাকা, মাঝারি ট্রাক (৫ থেকে ৮ টন) ২১০০ টাকা, মাঝারি ট্রাক (৮ থেকে ১১ টন) ২৮০০ টাকা, ট্রাক (৩ এক্সেল পর্যন্ত) ৫৫০০ টাকা এবং ট্রেইলার (৪ এক্সেল পর্যন্ত) পার হতে ৬০০০ টাকা টোল দিতে হবে।
৪ এক্সেলের বেশি হলে ট্রেইলারে ৬ হাজার টাকার সঙ্গে প্রতি এক্সেলে বাড়তি ১৫০০ টাকা দিতে হবে টোল বাবদ।
-কেএল