আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: কোনো কাজ করার ইরাদা করলে কিংবা অত্যাসন্ন কোনো বিষয়ে আল্লাহর সাহায্য কামনা করতে তাঁরই দরবারে কায়মনোবাক্যে বিশেষ পদ্ধতিতে প্রার্থনা করার নাম ইস্তেখারা। অর্থাৎ ইস্তেখারার মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর কাছে এই প্রার্থনা করে যে, আমি যা করতে চাই তাতে যদি আমার কল্যাণ থাকে তাহলে তা আমার জন্য সহজ করে দিন এবং বরকত দান করুন। আর যদি তাতে কল্যাণ না থাকে তাহলে তা থেকে আমাকে বিরত রাখুন এবং যাতে আমার কল্যাণ তা-ই আমাকে দান করুন। এটিই হল ইস্তেখারার হাকীকত।
ইস্তেখারার জন্য দুটি করণীয়। দুই রাকাত নামায আদায় করা এবং ইস্তেখারার প্রসিদ্ধ মাসনূন দুআটি মনোযোগের সাথে পড়া।
সময়ের স্বল্পতা বা অন্য কোনো কারণে এই দুটি কাজ সম্ভব না হলে এই দুআ পড়েও ইস্তেখারা করা যায়-
اللّهُمَّ خِرْ لِيْ وَاخْتَرْ لِيْ
(দ্র. আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লাইলাহ, ইবনুস সুন্নী, হাদীস ৫৯৭, ৫৯৮)
অতঃপর যেদিকে কলবের ইতমিনান হবে, আল্লাহর উপর ভরসা করে সেই কাজ আরম্ভ করবে। এভাবে আমল করলে ইস্তেখারা হয়ে যায়।
এটা হল ইস্তেখারার সুন্নাহসম্মত পদ্ধতি। কিন্তু কিছু মানুষ নিজে থেকে ইস্তেখারার বিভিন্ন পদ্ধতি আবিষ্কার করেছে। তেমনই একটি পদ্ধতি হল-
ইস্তেখারার নিয়তে দুই রাকাত নফল নামাযের নিয়ত বাঁধবে। তারপর সূরা ফাতেহা তিলাওয়াত শুরু করবে। ‘ইহদিনাস সীরাতাল মুস্তাকীম’ পর্যন্ত পৌঁছলে সামনে আর তিলাওয়াত না করে এই আয়াতই বারবার পড়তে থাকবে। যে কাজের জন্য ইস্তেখারা করা হচ্ছে তা যদি কল্যাণকর হয় তাহলে উল্লিখিত আয়াত পুনরাবৃত্তি করতে করতে একসময় নামাযী নিজে নিজেই ডান দিকে ঘুরে যাবে আর ক্ষতিকর হলে বাম দিকে ঘুরে যাবে। এভাবে কল্যাণ-অকল্যাণের ফয়সালা নির্ণীত হবে।
এটি ইস্তেখারার একটি মনগড়া পদ্ধতি, এ থেকে বেঁচে থাকা জরুরি। হযরত মাওলানা রশীদ আহমদ লুধিয়ানবী রাহ. বলেন, এর মধ্যে বেশ কিছু খারাবী জমা হয়েছে। যেমন, এর মাধ্যমে আল্লাহর রাসূলের বাতলানো পদ্ধতির মোকাবেলায় নিজেদের বানানো পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। সুন্নত বর্জন করা হয় এবং নামাযের মত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতের সাথে মশকরা করা হয়। অর্থাৎ সে দুই রাকাত নামাযের নিয়ত করছে, কিন্তু দুই রাকাত নামায আদায় তার উদ্দেশ্য নয় ইত্যাদি।
সুতরাং আমরা এ থেকে বেঁচে থাকব এবং ইস্তেখারা করলে সুন্নাহসম্মত পদ্ধতিতে করব। (দ্রষ্টব্য : খুতুবাতুর রশীদ, মুফতী রশীদ আহমদ লুধিয়ানবী রাহ. ১/৪৫-৪৮)।
সূত্র: আল কাউসার।
এনটি