বেলায়েত হুসাইন।।
পাকিস্তানি বাইকার ও ব্লগার আবরার হুসাইন ৮০টিরও বেশি দেশ ভ্রমণ করেছেন। যার মধ্যে অন্তত ১২টি দেশে গিয়েছেন মোটরসাইকেলে চড়ে। কিন্তু এ বছর তিনি বুঝতে পারলেন, তার সবচেয়ে আকাঙ্খিত স্থানে ভ্রমণের সময় এসে গেছে। তাই স্বপ্ন পূরণে মোটরসাইকেলে চড়ে বেরিয়ে পড়লেন মক্কার পথে। উদ্দেশ্য- পবিত্র ওমরাহ আদায়।
চলতি বছরের ৯ ফ্রেব্রুয়ারি তিনি পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের নিজ শহর নানকানা সাহেব থেকে মক্কাভিমুখে রওনা হন এবং একেক করে তিনটি মহাদেশ পাড়ি দিয়ে ৫০ দিন অতিবাহিত করার পর ২৭ মার্চ মদিনা মুনাওরাহতে পৌঁছান। পরে মদিনাহ থেকে মক্কা গমন করেন এবং পবিত্র ওমরাহ আদায়ের সৌভাগ্য লাভে ধন্য হন।
মদিনায় অবস্থানকালে আবরার হুসাইন আরব নিউজকে বলেন, ‘এটি আমার সব সময়ের জন্য স্বপ্ন ছিল (মোটরসাইকেলে চড়ে সৌদি আরব ভ্রমণ)। এ বছর তা পূর্ণ হলো। হয়তো কিছু অনুভূতি আছে, যা আপনি বলে বোঝাতে পারবেন না। এখানের প্রতিটি মুহূর্তের সাথেই আমার প্রেমময় সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।’
আবরার হুসাইন পেশায় একজন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। চাকরি করেন একটি জার্মান কোম্পানিতে। শৈশব থেকেই এই পাকিস্তানি বাইকারের অ্যাডভেঞ্চার ও ফটোগ্রাফির প্রতি প্রবল ঝোঁক ছিল। তার ভাষায়, ‘বিভিন্ন সীমান্ত অতিক্রম করা ও চলতি পথে নানা ধরনের মানুষের সাথে মিলিত হওয়া একটি ‘আশ্চর্যজনক অভিজ্ঞতা’ ছিল। তবে বিশেষ বরকত এটাই ছিল যে, রমজানের কয়েক দিন আগেই আমি মদিনায় পৌঁছে যাই এবং প্রথম রোজা এখানেই রাখি।’ এ সময় সৌদি নাগরিকদের উষ্ণ অভ্যর্থনা ও তাদের আন্তরিক ভালোবাসা পাওয়ায় তাদের প্রতি বিশেষ শুকরিয়া আদায় করেন আবরার হুসাইন।
সৌদি আরব সফরে দেশটির নাগরিকদের মেহমানদারি প্রসঙ্গে আরব নিউজকে চমকপ্রদ একটি ঘটনা শুনিয়েছেন আবরার। তিনি জানান, দেশটিতে প্রবেশের পরই তার সাক্ষাৎ হয় একদল নারীর সাথে, যারা পেশায় চা-বিক্রেতা। যখন ওই নারীরা জানতে পারেন যে, আবরার মোটরসাইকেলে চড়ে তাদের দেশে এসেছে পবিত্র ওমরাহ করতে, তখন-ই তারা তাকে সাফ জানিয়ে দেন, ‘তুমি আমাদের মেহমান। চায়ের কোনো বিনিময় দেবে না কিন্তু।’
ওই নারীদের সাথে আবরার হুসাইনের এই কথাবর্তার একটি ভিডিও ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যার কারণে সৌদি আরবেও আবরার এখন পরিচিত।
তিনি বলেন, ‘যখন আমি মোটরসাইকেল নিয়ে রাস্তায় বের হই, তখন যে পরিমাণ সহযোগিতা ও ভালোবাসা পাই তা অবিশ্বাস্য।’ আবরার জানালেন, সৌদীদের অকৃত্রিম ভালোবাসা পেয়ে তিনি নির্ধারিত সময়ের চেয়ে আরো বেশি দিন দেশটিতে অবস্থান করবেন এবং সেখানকার বিভিন্ন শহর ঘুরবেন।
সৌদি সফর নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি এখন পর্যন্ত রিয়াদ, মদিনা ও মক্কায় ভ্রমণ করেছি। কিন্তু আগামী কয়েক দিনে দেশটির অন্যান্য শহরে সফর শুরু করব। যার মধ্যে জেদ্দা, আলবাহা, জাজান ও আলআলা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
এনটি