শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
‘প্রকৃতপক্ষে ভুল হলে ক্ষমা চাইতে প্রস্তুত আ.লীগ’ সিইসিসহ নবনিযুক্ত নির্বাচন কমিশনাররা শপথ নেবেন রোববার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য হলেন মুন্সিগঞ্জের নিরব ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু বাজারে এলো ইনফিনিক্সের সবচেয়ে স্লিম স্মার্টফোন বৈষম‌বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন: বেঁচে ফেরার আশা করেনি সানিয়াত মুসলিম কমিউনিটি কমলগঞ্জ উপজেলা শাখার কমিটি গঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন: অর্থের অভাবে অনেক আহতের হচ্ছে না চিকিৎসা কোটি টাকার সহায়তা নিয়ে ফিলিস্তিনিদের পাশে হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি ফরিদপুরে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ‘কুরআন সবক অনুষ্ঠান’র উদ্বোধন

গণকমিশনের মূল লক্ষ্য দেশের মানুষকে ধর্মবিমুখ করা: ড. আফম খালিদ হুসাইন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

।।কাউসার লাবীব।।

জঙ্গি অর্থায়ন ও দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অভিযোগে ১১৬ ওয়ায়েজিনের একটি তালিকা দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) জমা দিয়েছে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সমন্বয়ে গঠিত মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস তদন্তে ‘গণকমিশন’।

বুধবার (১১ মে) দুদক চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আবদুল্লার হাতে একটি শ্বেতপত্র তুলে দেন গণকমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও সদস্য সচিব ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজসহ পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।

এ তালিকা থেকে বাদ পড়েননি বর্ষীয়ান আলেমেদ্বীন আল্লামা মুফতি আব্দুল হালিম বুখারী, আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জীর মতো দেশের শীর্ষ আলেমরাও। তালিকায় আছেন বেশ কয়েকজন কারাবন্দিরা আলেম। দুদক চেয়ারম্যানের কাছে দেওয়া ২২শ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনের ৭৬০ ও ৭৬১ পৃষ্ঠায় তাদের নাম প্রকাশ করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জঙ্গি অর্থায়ন ও ওয়াজের মাধ্যমে তারা ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ঠ করছেন।

গণকমিশনের এ তালিকা নেট মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ইতোমধ্যেই দেশের ধর্মপ্রিয় মানুষের মাঝে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। ১১৬ জনের তালিকায় আছেন দেশের অন্যতম গবেষক আলেম ও ইসলামিক স্কলার ড. আফম খালিদ হুসাইন। গণকমিশনের এ তালিকা বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছিলাম তার কাছে।

তিনি বলছেন, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি কর্তৃক গঠিত গণকমিশনের এই তালিকা এদেশের ইসলাম, মুসলিম এবং ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের বিষয়ে এক গভীর চক্রান্ত। এ তালিকায় রয়েছেন জামিয়া পটিয়ার মুহতামিম মুফতি আব্দুল হালিম বোখারী, মাওলানা সালাহ উদ্দীন নানুপুরীর মতো আলেমগণ। তারা তো কোনো ধরনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। শুধু ওয়াজ-নসিহত, তাজকিয়ায়ে নফস এবং দরস তাদরিসের সঙ্গে তারা আছেন।

‘স্বাধীনতার পর থেকে একটি মহল এদেশের ইসলাম ও মুসলমানদেরকে নানাভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে যাচ্ছে। অনেকে এটাকে প্রায় পেশা হিসেবে নিয়ে নিয়েছে। এর বিরুদ্ধে আমরা মুফতী আমিনী রহ., আল্লামা আশরাফ আলী রহ. ও আল্লামা নূর হুসাইন কাসেমী রহ. থাকতে অনেক আন্দোলন করেছি। বর্তমানে ওই মহলটি চাচ্ছে ওয়াজ-নসিহতের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষ যে দিনের আলো পাচ্ছে সেটিকে নষ্ট করে দেয়ার। এগুলো ইসলামী সংস্কৃতি এবং মূল্যবোধ যারা সমাজে ছড়িয়ে দিচ্ছে তাদেরকে দমিয়ে দেয়ার একটি অপকৌশল।’- বলেন, ড. আফম খালিদ হুসাইন

নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, আমি গত ২০ বছর ধরে ওয়াজ নসিহত ও বক্তৃতা করে থাকি। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি আমার কোন বক্তৃতায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হয় এমন কোন কথা নেই। বরং আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য মানুষকে আহবান করে থাকি। আমরা অনেক সময় ফ্রি ওয়াজ করে থাকি। অনেক জায়গায় দাওয়াত দেয়। যাই। কিন্তু মাহফিল কমিটি আর্থিকভাবে সঙ্কটে থাকায় শুধু গাড়ি ভাড়াদিয়ে দেয়। হাদিয়ার টাকা দিতে পারে না। কিন্তু কিছুই বলি না। কেননা আমাদের লক্ষ তো একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি।

তিনি বলেন, এ তালিকা দেখলে দেখবেন এদেশের সব ঘরণার উলামায়ে কেরামকে এতে যুক্ত করা হয়েছে। মোটকথা এদেশে যারা ইসলামকে ফোকাস করে তাদের সবাইকেই টার্গেট করা হয়েছে। দেওবন্দী, আলিয়া, বেরলবী, আহলে হাদিস কাউকেই বাদ দেয়া হয়নি। গণকমিশনের এই পদক্ষেপকে ধিক্কার জানানোর পাশাপাশি আমি মনে করি সব মাসলাকের আলেমদের একসঙ্গে হয়ে এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে হবে। প্রেস কনফারেন্স করতে হবে। দুদকে স্মারকলিপি দিতে হবে। তাদের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে বিদেশি কোনো ষড়যন্ত্র আছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখতে হবে।

‘আর আজকে যারা এই তালিকা দুদকের কাছে পেশ করেছে তারা নিজেরাই তো বিতর্কিত। বিভিন্ন অভিযোগের কারণে ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজকে যুদ্ধাপরাধীর বিচারের মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাছাড়া বিচারপতি মানিক তো বিতর্কিত। তিনি কোনো সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ নন। এই গণকমিশনের কোন আইনগত ভিত্তি নেই। এদের মূল লক্ষ্য হলো দেশের মানুষকে ধর্মবিমুখ করা। এবং ওয়াজ-নসিহত বন্ধ করে দেয়া।’-বলেন, এই গবেষক আলেম

প্রসঙ্গত, দুদকের কাছে দেওয়া ১১৬ আলেমের রয়েছেন, ১. মাওলানা নূরুল ইসলাম ওলিপুরী, ২. মাওলানা সাজিদুর রহমান, ৩. মুফতি রেজাউল করিম, ৪. মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিম, ৫. মাওলানা খোরশেদ আলম কাসেমী, ৬. মাওলানা আবুল কালাম আজাদ (বাশার), ৭. মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, ৮. মুফতি দিলওয়ার হোসাইন সাইফী, ৯. মাওলানা সাইয়্যেদ কামাল উদ্দিন জাফরী, ১০. মাওলানা মাহমুদুল হাসান ভূজপুরী, ১১. মাওলানা মাহমুদুল হাসান ফতেহপুরী, ১২. মাওলানা মুহিব খান, ১৩. মুফতি সাঈদ আহমদ কলরব, ১৪. মুফতি দিলাওয়ার হোসাইন, ১৫. মাওলানা গিয়াস উদ্দিন তাহেরী, ১৬. মাওলানা আব্দুর রহিম বিপ্লবী, ১৭. মাওলানা আরিফ বিল্লাহ, ১৮. মাওলানা বজলুর রশিদ, ১৯. মুফতি নাজিবুল্লাহ আফসারী, ২০. মাওলানা ওয়াসেক বিল্লাহ নোমানী, ২১. মুফতি নূর হোসেন নুরানী, ২২. মুফতি কাজী ইব্রাহিম, ২৩. মাওলানা গোলাম রাব্বানী, ২৪. মাওলানা মুজাফফর বিন মহসিন, ২৫. মাওলানা মোস্তফা মাহবুবুল আলম, ২৬. মাওলানা মাহমুদুল হাসান গুনবি, ২৭. মাওলানা শায়েখ সিফাত হাসান, ২৮. মাওলানা মোহাম্মদ রাকিব ইবনে সিরাজ, ২৯. মাওলানা ফয়সাল আহমদ হেলাল, ৩০. মাওলানা মতিউর রহমান মাদানী, ৩১. মাওলানা মুজিবুর রহমান, ৩২. মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, ৩৩. মাওলানা হাফিজুর রহমান ছিদ্দীকী, ৩৪. মাওলানা আজিজুল ইসলাম জালালী, ৩৫. মাওলানা মেরাজুল হক কাসেমী, ৩৬. মুফতি মুহসিনুল করিম, ৩৭. মাওলানা আব্দুল বাসেত খান, ৩৮. মাওলানা আবদুল খালেক সাহেব শরিয়তপুরী, ৩৯. মুফতি মাহমুদ উল্লাহ আতিকী, ৪০. মুফতি উসমান গণি মুছাপুরী, ৪১. মাওলানা আবু নাঈম মুহাম্মাদ তানভীর, ৪২. মুফতি শিহাবুদ্দীন, ৪৩. মুফতি মুসতাঈন বিল্লাহ আল-উসওয়ায়ী, ৪৪. মাওলানা আশরাফ আলী হরষপুরী, ৪৫. মাওলানা জাকারিয়া, ৪৬. মুফতি আমজাদ হোসাইন আশরাফী, ৪৭. মুফতি আনোয়ার হোসাইন চিশতী, ৪৮. মাওলানা আতিকুল্লাহ, ৪৯. মাওলানা বশির আহমদ, ৫০. মাওলানা সিরাজুল ইসলাম মিরপুরী, ৫১. মাওলানা রিজওয়ান রফিকী, ৫২. মাওলানা আবরারুল হক হাতেমী, ৫৩. মাওলানা রাফি বিন মুনির, ৫৪. মাওলানা আনোয়ারুল ইসলাম জাবেরী, ৫৫. মাওলানা মোতাসিম বিল্লাহ আতিকী, ৫৬. মুফতি শেখ হামিদুর রহমান সাইফী, ৫৭. মাওলানা আজহারুল ইসলাম আজমী, ৫৮. মাওলানা কামাল উদ্দিন দায়েমী, ৫৯. মাওলানা কামাল উদ্দিন কাসেমী, ৬০. মাওলানা মুফতি রুহুল আমিন নুরী, ৬১. মাওলানা মাজহারুল ইসলাম মাজহারী, ৬২. মাওলানা মাহমুদুল হাসান ফেরদাউস, ৬৩. মুফতি এহসানুল হক জিলানী, ৬৪. মাওলানা মাহবুবুর রহমান জিহাদি, ৬৫. মুফতি আব্দুল হক, ৬৬. মুফতি শাহিদুর রহমান মাহমুদাবাদী, ৬৭. মাওলানা ইসমাঈল বুখারী, ৬৮. মাওলানা জয়নুল আবেদীন হাবিবী, ৬৯. মাওলানা ইউসুফ বিন এনাম, ৭০. মাওলানা শাববীর আহমদ উসমানী, ৭১. মুফতি জাহিদুল ইসলাম যায়েদ, ৭২. মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম জামী, ৭৩. মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, ৭৪. মাওলানা ইসমাইল হোসাইন, ৭৫. মুফতি আব্দুর রহিম হেলালী, ৭৬. মুফতি ওমর ফারুক যুক্তিবাদী, ৭৭. মাওলানা মুশাহিদ আহমদ উজিরপুরী, ৭৮. মাওলানা কাজিম উদ্দীন (অন্ধ হাফেজ), ৭৯. মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান, ৮০. মুফতি হারুনুর রশিদ, ৮১. মাওলানা আবুল কাসেম, ৮২. মুফতি ওয়ালী উল্লাহ, ৮৩. মাওলানা আবু নাঈম মুহাম্মাদ তানভীর, ৮৪. মাওলানা জাকারিয়া নাটোর, ৮৫. মাওলানা আবুল হাসান (সাদী), ৮৬. মুফতি রুহুল আমিন নুরী, ৮৭. মুফতি মামুনুর রশিদ কামালী, ৮৮. মাওলানা আবদুল কালাম আজাদ, ৮৯. মাওলানা ডা. সিরাজুল ইসলাম সিরাজী (নওমুসলিম), ৯০. মাওলানা শামসুল হক যশোরী (নওমুসলিম), ৯১. মুফতি হাবিবুর রহমান মিসবাহ, ৯২. মাওলানা মুফতি ওলিউল্লাহ, ৯৩. মাওলানা বেলাল হুসাইন ফারুকী, ৯৪. মুফতি ওমর ফারুক যুক্তিবাদী, ৯৫. মাওলানা আমির হামজা, ৯৬. মাওলানা মিজানুর রহমান আযহারী, ৯৭. মাওলানা তারেক মনোয়ার, ৯৮. মাওলানা আব্দুল হালিম বোখারী, ৯৯. মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, ১০০. মাওলানা আফম খালিদ হোসেন, ১০১. মাওলানা মামুনুল হক, ১০২. মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, ১০৩. মাওলানা মুশতাকুন্নবী, ১০৪. মাওলানা সালাহ উদ্দীন নানুপুরী, ১০৫. মাওলানা কুতুব উদ্দীন নানুপুরী, ১০৬. মাওলানা বেলাল উদ্দীন, ১০৭. মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী, ১০৮. মাওলানা রুহুল আমিন যুক্তিবাদী, ১০৯. মাওলানা আবুল কালাম বয়ানী, ১১০. মাওলানা রফিকুল্লাহ আফসারী, ১১১. মাওলানা আব্দুল্লাহ আল-আমিন, ১১২. মাওলানা মোয়াজ্জেম হোসাইন সাইফী, ১১৩. মাওলানা আলাউদ্দীন জিহাদি, ১১৪. মাওলানা আবু বকর মোহাম্মদ জাকারিয়া, ১১৫. জৈনপুরী সিলসিলার মাওলানা এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী, ১১৬. মাওলানা মাহবুবুর রহমান জৈনপুরী প্রমুখ।

-কেএল


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ