আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করার আগে এবং পরে পাকিস্তানের রাজনীতিতে তোলপাড়। অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ। এরই মধ্যে ঘটে গেছে ন্যক্কারজনক এক ঘটনা। মসজিদে নববীতে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ ও সফরসঙ্গীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ ও অশালীন স্লোগান দেয়ার ঘটনা বিরল। সরকার অবশ্য এ জন্য ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফের দিকে আঙ্গুল তুলেছে। ইমরান খান সহ কমপক্ষে ১৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। এ ঘটনায় অবশ্যই ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করা হবে বলে জোর দিয়ে দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ।
জবাবে ইমরান খান বলেছেন, মসজিদে নববীতে যা ঘটেছে, তা জনপ্রতিক্রিয়া। নেতারা যার যোগ্য তাই তারা পেয়েছেন। কিন্তু কথা সেখানে নয়। কথা এখন ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করলে কি ঘটবে পাকিস্তানে! নিশ্চয়ই পরিস্থিতি আরও ঘোলা হবে।
তাতে কে ফায়দা লুটবে তা বলা মুশকিল। ওদিকে ইমরান খান ইসলামাবাদমুখী লংমার্চ ঘোষণা করেছেন। নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
একই সঙ্গে তার সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ আহমেদ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, ইমরান খানের ওই লংমার্চ রক্তাক্ত হতে পারে। এতে দেশের পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। এর একদিন আগে তিনি দাবি করেন, ইমরান খানকে হত্যা করা হতে পারে। তিনি সোমবার দাবি করেন, ক্ষমতাসীন পিএমএলএনের নেতারা ইমরান খানকে হত্যার পরিকল্পনা করছে। লংমার্চেই তার ওপর হামলা চালানোর চেষ্টা করছে সরকার। শেখ রশিদ আরও বলেন, ইমরান খানের জীবন ঝুঁকিতে। কারণ, শরীফ পরিবার এবং পিএমএলএনের অন্য নেতারা তার হাত থেকে মুক্তি পেতে চান।
বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহকে উদ্দেশ্য করে মঙ্গলবার বিকেলে রাওয়ালপিন্ডিতে শেখ রশিদ বলেন, যে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একজন মাদকের ডিলার, সেখানে শান্তি আসতে পারে না। তিনি আরও বলেন, এসব মানুষ দেশের পরিস্থিতিকে যেকোনো অবস্থায় নিয়ে যেতে চায়। তবে আমাদের প্রার্থনা শান্তি বিজয়ী হবে। যদি রাজপথে সহিংসতা হয় তার জন্য দায়ী থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ।
শেখ রশিদ আবারও ইমরান খানের প্রতি তার সমর্থন প্রকাশ করেন। বলেন, লংমার্চে তিনি ইমরান খানের পাশে থাকবেন।
তিনি আরও বলেন, যেসব মানুষের চেহারা মানুষ দেখতে চায় না, তাদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে ক্ষমতা। দেশের অবস্থা খুব খারাপ। ৩১শে মের মধ্যে দেশের এসব সমস্যার সমাধান হতে হবে। বলেন, এ সময়ের মধ্যে দেশে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন চূড়ান্ত করতে হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তিনি পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর পক্ষে আছেন। যদি ইমরান খান তাকে যোগাযোগ স্থাপনের দায়িত্ব দেন, তাহলে তা পালন করতে প্রস্তুত তিনি।
ওদিকে একদিন আগে অর্থাৎ সোমবার তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খান আগাম নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। ভয়েস অব আমেরিকাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে শেখ রশিদ বলেন, পিটিআই এবং এস্টাবলিশমেন্টের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির বিষয়টি পরিষ্কার করার উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। শেখ রশিদ বলেন, সেনাবাহিনীর সঙ্গে তিনি শান্তির পক্ষে। কিন্তু একটি ‘ওয়্যারের’ ক্ষেত্রে তিনি পিটিআই চেয়ারম্যানের পাশে থাকবেন। তিনি আরও জানান, পিটিআইয়ের লংমার্চ অন্য কোনো উদ্দেশ্যে নয়। আগাম নির্বাচন ঘোষণার দাবিতে। কারণ, নতুন সরকারকে মেনে নিতে পারেননি ইমরান খান।
এনটি