মুফতী এনায়েত কবীর।।
ইস্তিগফার। পরিচিত একটি শব্দ। কিন্তু পাপ মুক্তি ও সমৃদ্ধ জীবন লাভে ইস্তিগফারের রয়েছে অনন্য গুরুত্ব। ব্যক্তিজীবনে ইস্তিগফারের গুরুত্ব কতটুকু?
নবীজি এরশাদ করেন, আল্লাহর শপথ! আমি প্রতিদিন আল্লাহর কাছে সত্তর বারের অধিক ইস্তিগফার ও তওবা করি। -সহিহ বোখারি: ৬৩০৭
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাস্‘ঊদ রা থেকে বর্ণিত। নবীজি ইরশাদ করেন, গুনাহ হতে তাওবাহকারী ঐ ব্যক্তির মতো যার কোন গুনাহ নেই। ইবনে মাজাহ- ৪২৫০, মু‘জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী- ১০২৮১।
পৃথিবীতে মানুষের সমস্যা ও সংকটের কোন শেষ নেই। খাবার সমস্যা,টাকার সমস্যা, শত সমস্যায় জর্জরিত মানুষের জীবন। বহুমুখী দুশ্চিন্তা আর দুর্ভাবনা তো আছেই। তাই শারীরিক পরিশ্রমের সাথে সাথে ইস্তিগফারের আমল এনে দিতে পারে এ সকল সমস্যার সমাধান।
এক হাদীসে নবীজি এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তিগফার করবে, আল্লাহ তার সব সংকট থেকে মুক্তির পথ বের করে দেবেন, সব দুশ্চিন্তা দূর করে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন।আবু দাউদ: ১৫২০।
বিভিন্ন সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও সংকটে বিপর্যস্ত হয় পৃথিবী। এলোমেলো হয়ে যায় সব পরিকল্পনা। এসব প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও দুর্বিপাক থেকে নিরাপদ থাকার অন্যতম একটি মাধ্যম ইস্তিগফার। কুরআনে পাকে ইরশাদ হয়েছে, আল্লাহ তাআলা তাদের উপর আযাব দিবেন না যতক্ষণ তারা ইস্তিগফার করতে থাকবে। সূরা আনআম- ৩৩।
ব্যাপক ইস্তিগফার পাঠের মাধ্যমে মানুষের ব্যক্তি জীবনে আসে স্বাচ্ছন্দ। সমাজ জীবনে উপযুক্ত এবং সম্মানিত মানুষরা পায় মর্যাদা ও উপযুক্ত সম্মান। আল্লাহ তা'আলা বলেন, তোমরা তোমাদের রবের কাছে ইস্তিগফার করো তিনি তোমাদেরকে সমৃদ্ধ জীবন উপকরণ দান করবেন এবং সম্মান বাড়িয়ে দিবে। সূরা হুদ:- ৪।
অনাবৃষ্টি থেকে রেহাই এবং শক্তি বৃদ্ধির মাধ্যম এই ইস্তিগফার। আল্লাহ তা'আলা বলেন, তোমরা তোমাদের রবের কাছে ইস্তিগফার করো এবং তার দিকে মনোযোগী হও। তিনি আকাশ থেকে তোমাদের জন্য বৃষ্টি দিবেন এবং তোমাদের শক্তি বৃদ্ধি করে দিবেন। সূরা হুদ-৫৩।
ইস্তিগফারের মাধ্যমে শুধু গুনাহ মাফ হয় তা নয় বরং দুনিয়াবী বিভিন্ন কল্যাণ লাভ হয়। আল্লাহ তা'আলা বলেন, তোমরা তোমাদের রবের কাছে ইস্তেগফার করো, তাহলে তিনি ক্ষমা করে দিবেন।
তোমাদের উপর কল্যাণের বৃষ্টি বর্ষণ করবেন। ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দিবেন অর্থাৎ সু-সন্তান এবং এবং নিঃসন্তান দম্পতিকে সন্তান দান করবেন। তোমাদের জন্যে শস্য ফল ও বাগবাগিচা দান করবেন এবং নদী-নালার পানির সংকট দূর করে স্রোতধারা প্রবাহিত করবেন। সূরা নূহ:১৩।
আল্লাহর দেওয়া মাগফেরাতের এই সময়ে আসুন বেশি বেশি ইস্তিগফার করি। নিজেকে অতীত পাপের জঞ্জাল থেকে মুক্ত করি। কারণ এখুনি তো মুক্তির মোক্ষম সময়। তাই এই দশকের প্রতিটি মুহূর্ত কাটুক ইস্তিগফার ইস্তিগফারে।
এই দশক কাটুক অতীত পাপের লজ্জা ও গ্লানিতে অনুতপ্ত হয়ে চোখের পানিতে। অগণিত পাপের আবরণে বন্ধ হওয়া চোখে আবার আসুক পাপ মুক্তির অশ্রুধারা।
-এটি