রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের সওগাত নিয়ে পবিত্র মাহে রমজান মুমিনের দ্বারপ্রান্তে। মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে মুমিনের জন্য শ্রেষ্ঠ উপহার এ মাস। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনায় একজন মুমিন তাকওয়ার গুনে গুনাণ্বিত হতে পারে। হতে পারে রাসুল সা. এর শ্রেষ্ঠ একজন উম্মত। লাভ করতে পারে ইহকালীন ও পরকালীন প্রভূত কল্যাণ। আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বাতলানো পন্থা ও সাহাবায়ে কেরামের নমুনায় রমজান পালনেই তা সম্ভব।
আওয়ার ইসলাম পাঠকের জন্য মাহে রমজান জুড়ে “মাসায়েলে রমজান” শিরোনামে প্রতিদিন গুরুত্বপূর্ণ কিছু মাসায়েল পাঠকের সমীপে উপস্থাপন করা হবে। নিয়মিত মাসায়েল লিখবেন, শেখ জনূরুদ্দীন র. দারুল কুরআন মাদরাসা চৌধুরীপাড়ার ইফতা বিভাগের মুশরিফ, মুফতি সাদেকুর রহমান।।
যেসব কারণে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায় এবং কাজা-কাফফারা উভয়টি ওয়াজিব হয় :- ১. রোজা অবস্থায় ইচ্ছাকৃত কোন খাদ্য আহার করলে অথবা ওষুধ খেলে অথবা সিঙ্গা কিংবা সুরমা লাগানোর পর অথবা গীবত করার পর রোজা ভেঙে গেছে মনে করে ইচ্ছাকৃত আহার করলে কিংবা পান করলে। আলমগিরি ১/২০৫ রদ্দুল মুহতার ৩/৩৮৬, ৩৮৮।
২. প্রিয়জনের প্রিয় থুথু ইচ্ছাকৃত গিলে ফেললে। ৩. ইচ্ছাকৃতভাবে বিড়ি, সিগারেট, হুক্কা ইত্যাদি খেলে। ৪. ইচ্ছাকৃত স্ত্রী মিলন করলে। এক্ষেত্রে স্ত্রী স্বতঃস্ফূর্ত থাকলে তার উপরও কাজা- কাফফারা ওয়াজিব হবে। আর স্ত্রী রাজি না থাকলে বরং তার সাথে জোরপূর্বক করা হলে শুধু কাজা ওয়াজিব হবে, কাফফারা নয়। আলমগিরি ১/২০৫।
৫.কামভাবের সাথে স্ত্রীকে স্পর্শ করল অথবা চুম্বল করল বা আলিঙ্গন করল, তবে বীর্যপাত হয়নি, কিন্তু সে মনে করল, রোজা ভেঙে গেছে, ফলে ইচ্ছাকৃত পানাহার করল,তাহলে তার উপর কাজা এবং কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব হবে। বাদায়িউস সানায়ে ২/৫৫৮।
৬. কেউ গোঁফে তেল লাগালো আর মনে করল রোজা ভেঙে গেছে, অতঃপর ইচ্ছাকৃত আহার করল, তাহলে তার উপর কাজা এবং কাফফারা উভয় ওয়াজিব হবে। বাদায়িস সানায়ে ২/২৫৮।
কাফফারা কী?
১. একটি কৃতদাস আজাদ করা। (এখন যেহেতু দাস প্রথার বিলুপ্তি ঘটেছে, তাই বাকি দুই ভাবেই কাফফারা আদায় করতে হবে)
২. লাগাতার ৬০ টি রোজা রাখবে। এর সামর্থ্য না থাকলে ৬০ জন মিসকিনকে দুই বেলা পেট ভরে খানা খাওয়াবে অথবা ৬০ জন মিসকিনকে সদকায়ে ফিতর পরিমাণ গম, আটা, চাউল ইত্যাদি অথবা সমপরিমাণ নগদ টাকা দিবে। একজন মিসকিনকে ৬০ দিন দু বেলা খাওয়ালে ও কাফফারা আদায় হয়ে যাবে। আলমগীরী ১/৩০৫ , রদ্দুল মুহতার ৩/৩৯০।
কাফফারার রোজা রাখতে গিয়ে কোন কারণবশত ১/২ টি রোজা রাখতে না পারলে পুনরায় ৬০ টি রোজা রাখতে হবে। তবে পিরিয়ডের কারণে মহিলারা লাগাতার রোজা রাখতে না পারলে পিরিয়ড শেষ হওয়া মাত্রই রোজা রাখা শুরু করবে। রদ্দুল মুহতার ৩/৩৯০।
-এটি