আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: অনেকেই মনে করেন শসা খেলে চর্বি কাটে। দেহের মেদ বা চর্বি কমানোর জন্য শসা খাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো—শসা কি আসলেই চর্বি কমাতে সক্ষম? আবার সক্ষম যদি নাইবা হবে তাহলে চর্বি কমাতে শসা খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয় কেন? চলুন জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত।
পুষ্টিবিদদের মতে, শসা হচ্ছে মূলত একটি লো ক্যালরি বা খুব কম ক্যালরিযুক্ত একটি খাবার। শসার মধ্যে পানির পরিমাণ অনেক। ১০০ গ্রাম শসাতে পানির পরিমাণ ৯৪.৯ গ্রাম এবং ক্যালরি ২২ কিলো ক্যালরি এছাড়াও শসা একটি ভাল মানের এন্টিঅক্সিডেন্ট জাতীয় খাবার। শসাতে কিছু পরিমাণ ভিটামিন, মিনারেলস এবং আঁশ থাকে।
এছাড়া শসার ‘এনার্জি ডেনসিটি’ কম। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘এনার্জি ডেনসিটি’ কম এমন খাবার খাওয়ার সঙ্গে ওজন কমার গভীর সম্পর্ক আছে। আর শসায় পানির মাত্রা বেশি হওয়া তা খাওয়া পেট ভরা অনুভূতি থাকে, ফলে খাওয়া কম হয়।
তাহলে তো উত্তর মিলেই গেল, তাই না? হ্যাঁ, শসা খেলে ওজন কমবে। তবে এখানে একটা ‘কিন্তু’ আছে। সেটি হলো—আমরা অনেকেই শসা খাওয়াকে ওজন কমানো বা মেদ ঝরানোর মোক্ষম উপায় মনে করি। শসা খেয়ে মেদ কমানোর তত্ব এতটাই প্রচলিত হয়ে গেছে যে, সামান্যতম পুষ্টি জ্ঞান রাখেন না, এমন ব্যক্তিও চর্বি কমাতে শসা খাওয়ার পরামর্শ দেন। আসলে বিষয়টি আরও বিস্তারিত জানার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। না জানলেই বিপত্তি ঘটতে পারে।
জানার ভুলে এই উপকারী খাবার শসাও মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর হয়ে যেতে পারে। যখন কেউ মনে করে শুধুমাত্র শসা খেয়ে ওজন কমানো যায়। শসাকে ওজন কমানোর একমাত্র ওষুধ মনে করলেই বিপদ।
ডায়েটিশিয়ানরা বলছেন, ডায়েট চার্টে আমরা শসাটা রাখি। কিন্তু শুধু শসা খেয়ে আমরা ওজন কমাতে বলি না। তবে অনেকেই ওজন কমানোর জন্য শসাকে ওষুধ হিসবে ধরে নিয়ে সারাদিন ধরে শসা খেতে থাকেন। যখনই ক্ষুধা লাগে শসা খেতে শুরু করে।
তারা বলছেন, যেহেতু শসা একটি কম ক্যালরিযুক্ত খাবার তাই শসা কেন অন্য যেকোনও কম ক্যালরি যুক্ত খাবার একনাগাড়ে খেতে থাকলে ওজন কমে যাবে। সেই হিসেবে শসাকে ডায়েট চার্টে রাখা হয়। তাই বলে এটিই যে চর্বি কমানোর প্রধান উপায়, তা নয়।
নিয়ম না মেনে শসা খেলে আপনার শরীরে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। অন্য খাবার কম খেয়ে সারাদিন বা অতিরিক্ত পরিমাণে শসা খেতে থাকলে বা ক্ষুধা লাগলেই শসা খেলে বদহজম, গ্যাসের সমস্যাসহ পেট ফাঁপা, পেট ব্যথা, বমি বমি ভাব ইত্যাদি দেখা দেয়।
দীর্ঘ দিন ধরে ওজন কমানোর আশায় সারাক্ষণ শসা খেলেই ঘটবে নানা বিপত্তি। শরীরে পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাবে শরীর ভীষণ দুর্বল হয়ে যাবে। কাজ করার শক্তি পাবেন না। রক্ত কমে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। এছাড়াও রক্তে গ্লুকোজের অভাবে মাথা ঘুরে পরে যাওয়ার মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাও ঘটতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শসার একটি উপাদান হল ‘কিউকারবিটাসিন’। কুমড়া, তরমুজ ইত্যাদিতেও এই উপাদানটি পাওয়া যায়। আর এর কারণেই কিছু শসা তেতো হয় এবং এর কারণেই শসা খাওয়ার কারণে পেটে গ্যাস হতে পারে। তাই শসার উপকার পেতে হলে দরকার নিয়ম মেনে এটি খাওয়া।
-কেএল