রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
ঢাকা থেকে ভাঙ্গা হয়ে খুলনায় গেলো পরীক্ষামূলক ট্রেন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন প্রধান উপদেষ্টা: প্রেস উইং ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সাম্যের ভিত্তিতে সংবিধান রচনার আহ্বান নেপালে ফের কুরআন প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে সৌদি আগামীকাল সংবিধান সংস্কার কমিশনে প্রস্তাবনা পেশ করবে ইসলামী আন্দোলন ‘আল্লামা আতহার আলী রহ. জীবন, কর্ম, অবদান’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন আগামীকাল হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী রহ. : কে এই মহান ব্যক্তি হাজিদের স্বার্থ রক্ষায় সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : ধর্ম উপদেষ্টা মহানবীকে সা. নিয়ে কটূক্তি করলে সংবিধানে শাস্তির বিধান রাখার প্রস্তাব পার্থের নতুন নির্বাচন কমিশন প্রত্যাখ্যান জাতীয় নাগরিক কমিটির

ডায়াবেটিস ও কিডনি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর আখের রস

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: গরমে এক গ্লাস আখের রস প্রাণ জুড়িয়ে দেয়। আখের রসকে প্রাকৃতিক শক্তিবর্ধক পানীয়ও বলা হয়। শুধু ক্লান্তি দূর করতেই নয়, ত্বকের জন্য এবং শরীরের জন্যও যথেষ্ট উপকারী আখের রস। আখের রস এমন একটি পানীয় যা ১০০ শতাংশ প্রাকৃতিক এবং এতে বিন্দুমাত্র ক্ষতিকারক উপাদান নেই। আখের রস পান করলে শরীর ঠান্ডা থাকে এবং ভাইরাস ও ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণের ঝুঁকি কমে।

পানিশূন্যতা দূরীকরণে ও জন্ডিস রোগের মহৌষধ হিসেবেও কাজ করে বহুবর্ষজীবী এ উদ্ভিদটি। আখে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে। দেহের টক্সিন বের করে শরীরে শক্তি জোগায় এই সুস্বাদু পানীয়। আখের রসে প্রচুর ফাইবার এবং খনিজ রয়েছে যা শরীরের নানা উপকার করে।

সব ঋতুতেই পাওয়া যায় আখের রস। আখের রসে রয়েছে ২৫০-৩০০ মিলিলিটার আখের রসে সাধারণত ১১১ ক্যালরি থাকে। এর মধ্যে কার্বোহাইড্রেট থাকে ২৭ গ্রাম, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও পটাসিয়াম থাকে ০.২৭ গ্রাম। আখের রস রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে এবং বহু রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা যোগায়। দেখে নিন আখের রসের উপকারিতা-

শক্তি বৃদ্ধি করে: গরমকালে ঘাম বেশি হয়, ফলে শরীরে পানির ঘাটতি দেখা দেয়। অনেকেই খুব ক্লান্ত বোধ করেন। এই সময়ে আখের রস পান করলে শরীরে কার্বোহাইড্রেট পাওয়া যায়, যা শক্তির মাত্রা বাড়ায়।

ওজন কমাতে: আখের রস মিষ্টি হলেও এই রস ওজন কমাতে সাহায্য করে। এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। যা ওজন কমাতে সাহায্য করে। এমনকি কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমিয়ে দেয়।

ক্যানসার প্রতিরোধ: জার্নাল অফ ফাইটোকেমিস্ট্রি’তে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা যায়, আখের রসে বিদ্যমান ফ্লেভোনস দেহে ক্যানসারের কোষ বৃদ্ধি ও ছড়ানো প্রতিরোধ করতে বিশেষভাবে কার্যকরী। আখের রসে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ থাকে যা প্রোস্টেট ও স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক।

কিডনির সুস্থতা নিশ্চিত করে: আখের রস প্রাকৃতিক অ্যাল্কালাইন যা অ্যান্টিবায়োটিক এজেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং কিডনির সুস্থতা নিশ্চিত করতে সহায়তা করে। এছাড়াও আঁখের রস পানের অভ্যাস বুক জ্বালা পোড়া ধরণের সমস্যা এবং মুত্র নালীর ইনফেকশন প্রতিরোধ করে।

হৃদরোগ উপশম: হার্ট ভালো রাখতে সাহায্য করে এই রস। হার্ট অ্যাটাক রুখতেও সাহায্য করে এই রস। এমনকি শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের নিঃসরণ কমাতেও সাহায্য করে।

প্রজনন ক্ষমতা বাড়ায়: নারী ও পুরুষ, উভয়ের ক্ষেত্রেই প্রজননের নানা সমস্যার সমাধানে বেশ কার্যকরী আখের রস। বিশেষজ্ঞদের মতে, পুরুষদের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা বাড়াতে আখের রস বেশ উপযোগী। মহিলাদের নির্ঝঞ্ঝাট ভাবে সন্তান প্রসবেও সহায়তা করে আখের রস। স্তনদুগ্ধ নিঃসরণেও আখের রস সহায় হয় বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

লিভার ভাল রাখে: লিভার ভাল রাখতে ও কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে আখের রস বেশ উপকারী। জন্ডিসের রোগীদের ক্ষেত্রেও আখের রস একটি প্রচলিত পথ্য। প্রস্রাবের সংক্রমণ-জনিত সমস্যায় ভুগলেও আখের রস খেলে উপকার পেতে পারেন।

ত্বক পরিচর্যায়: ত্বক ও চুল ভাল রাখার ক্ষেত্রেও বেশ কার্যকর আখের রস। আখের রসে থাকে আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড, যা ত্বক ভাল রাখতে সাহায্য করে, ব্রণর সমস্যা দূর করে। মাথার খুশকির সমস্যা কমাতেও এর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

দাঁত ও মাড়ির সমস্যা প্রতিরোধ: আখের রসের প্রাকৃতিক অ্যাল্কালাইন অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে যা দাঁতের ক্ষয় বা মাড়ির ইনফেকশন প্রতিরোধে সহায়তা করে থাকে। এছাড়াও আখের রস মুখের দুর্গন্ধ দূর করতেও বিশেষভাবে সহায়ক।

কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে: আখে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। যা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। ফাইবার নিয়ন্ত্রণে রাখে কলেস্টেরলের সমস্যাকেও।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে: যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা আখের রস এড়িয়ে চলেন। আখের রস খেতে মিষ্টি হলেও এটি ডায়াবেটিসের পক্ষে খুবই কার্যকরি। এতে জিআই-এর পরিমাণ খুব কম থাকে। যার জন্য ডায়াবেটিস রোগীরা নিয়মিত এই আখ খেতেই পারেন।

বিভিন্ন গবেষণায় জানা গিয়েছে, আখের মধ্যে আইসোম্যাল্টোজ নামক একটি উপাদান রয়েছে যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। টাইপ-টু ডায়াবিটিসের ক্ষেত্রে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ করে নেমে গেলে আখের রস খেলে উপকার পেতে পারেন। হাইপোগ্লাইসিমিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের জন্যেও এই রস উপকারী।

-এএ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ