সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


চেতনার বাতিঘর ‘জামিয়াতুল উস্তায শহিদুল্লাহ ফজলুল বারী রাহি.’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম: প্রতিটি শিক্ষার্থীর জীবনে শিক্ষাঙ্গন একটি মধুময় জায়গা। তবে অধ্যায়নরত অবস্থায় শিক্ষাঙ্গনে থাকা কিছুটা পিড়াদায়ক মনে হলেও বিদায়ের সময় যখন ঘনিয়ে আসে তখন মন আনচান করে ওঠে। চোখ অশ্রুসজল হয়ে যায়। অজান্তেই কপোল বেয়ে অশ্রু গড়ায়।

আমরা একঝাঁক তরুণ আরবী ভাষাপ্রেমিক আরবী ভাষা শিক্ষার জন্য জামিয়াতুল উস্তাযের প্রাঙ্গণে জড়ো হয়েছিলাম। সময় তো বহতা নদীর মতো—নদী যেমন তার আপন গতিতে বয়ে চলে ঠিক সময়ও তাই—দেখতে দেখতেই বছরটা শেষ পর্যায়ে। এখন বিদায়ের পালা...।

জাদিদ আরবিতে পারঙ্গমতা অর্জনে মাওলানা শফিকুল ইসলাম ইমদাদী রচিত ৬ বই

আকাশ বাতাস বিদায়ের করুণ মর্মধ্বনিতে ভারী হয়ে উঠেছে— মন না চাইলেও সময় আমাদেরকে বাধ্য করছে ; আরবী ভাষার এই সবুজ-সতেজ পুষ্পকানন ছেড়ে চলে যেতে। তবে এতদিনে জামিয়াতুল উস্তায আমাদেরকে পৌঁছে দিয়েছে আরবী ভাষার এক নিজস্বতায়।

আমরা এই জামিয়ায় এসে ছিলাম এমন এক অবস্থায় যে, শুরুতে আমাদের ইবারত পড়তেই কাঁটাযুক্ত পথে হাটবার মত কষ্ট হতো—কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় জামিয়াতুল উস্তায এবং এই বাগানের পরিচর্যাকারী আমাদের প্রাণপ্রিয় উস্তায শফিকুল ইসলাম আল ইমদাদী হা. ফি. এর রাত-দিনের মেহনত ও পরিশ্রমের বদৌলতে আজ শুধু ইবারতিই নয়— আরবী ভাষার বিস্তৃত পথে বিচরণ করার মতো হিম্মত-সাহস পেয়েছি। আলহামদুলিল্লাহ।

জামিয়াতুল উস্তায শুধু একটি আরবী প্রতিষ্ঠানের নামই নয়, একটি চেতনা ও অনুপ্রেরণার পরিপূর্ণ বাতিঘর। শিক্ষা, প্রজ্ঞা ও জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করাই তার কাজ।

No description available.

উস্তায শফিকুল ইসলাম আল ইমদাদী ২০১৭ সালে একাডেমিক লেখাপড়া শেষ করে বাংলাদেশে আরবী ভাষার করুণ অবস্থা দেখে তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হলেন একটি আরবী প্রতিষ্ঠান গড়ার—সেই প্রত্যয় নিয়ে শুরু করলেন অগ্রযাত্রা। তাই তিনি আর বিলম্ব না করে প্রতিষ্ঠা করলেন অচেনা অজানা এই ঢাকা শহরে আরবী ভাষার অনন্য প্রতিষ্ঠান " জামিয়াতুল উস্তায শহিদুল্লাহ ফজলুল বারী রহ. "। তিনি তাঁর বন্ধুবান্ধব ও হিতাকাঙ্ক্ষীদের সাপোর্ট এবং আল্লাহর অশেষ কৃপায় এগিয়ে যেতে থাকেন জোরকদমে— আজ পুরো দেশে তিনি এক ও অনন্য।

অল্প দিনেই উস্তায শফিকুল ইসলাম আল ইমদাদীর অসাধারণ দক্ষতা, যোগ্যতা ও আল্লাহর অশেষ রহমতে এ জামিয়ার শুহরত বাংলার আনাচে-কানাছে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতি বছরেই অসংখ্য আরবী ভাষাপ্রেমিকদের ভিড় জমে এই জামিয়ার উঠোনে ।

উস্তায শফিকুল ইসলাম আল ইমদাদী— বহুমুখী এক প্রতিভার নাম। অল্প বয়েসেই তিনি আরবী জগতের এক বিস্তৃত ময়দান দখল করে নিয়েছেন। ইতিমধ্যেই তিনি আরবী ভাষায় ১০ টিরও অধিক কিতাব রচনা করেছেন। বাংলাদেশে তাকে আরবী জগতের মহানায়ক বলা যায়।

জামিয়াতুল উস্তায-এর আরবি ভাষা ও সাহিত্য কোর্সের রেজিস্ট্রেশন চলছে

উস্তায শফিকুল ইসলাম আল ইমদাদী— একজন ছাত্র প্রিয় উস্তায। তিনি ছাত্রদেরকে আপন করে নেন পরম মমতায়। আমার ভাষায় আমি তাকে বলি; তিনি ছাত্র গড়ার এক মহত্তম নায়ক। আমি তাঁর ছাত্র হয়ে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। আমি তাঁর ভালবাসায় চিরজীবন ঋদ্ধ হয়ে থাকবো। আমার জীবনে তাঁর অবদান চিরভাস্বর হয়ে থাকবে।

প্রসঙ্গত, এখনো জামিয়ার কোনো নিজস্ব আবাসনের ব্যবস্থা হয়নি—মহান প্রভুর কাছে কায়মনোবাক্যে আরজী জানায়! হে আল্লাহ! তুমি অতিদ্রুত প্রিয় প্রতিষ্ঠান: জামিয়াতুল উস্তাযের নিজস্ব,স্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করে দাও। আমীন।

লেখক : শিক্ষার্থী, জামিয়াতুল উস্তায শহিদুল্লাহ ফজলুল বারী রহ. ওয়াশপুর, মুহাম্মদপুর, ঢাকা।

-কেএল


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ