শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


ছুটির সময়গুলো যেভাবে কাজে লাগাতে পারেন শিক্ষার্থীরা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

।।আব্দুল্লাহ আফফান।।

শেষ হলো কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের ৪৫তম কেন্দ্রীয় পরীক্ষা। সেই সঙ্গে অনেক কওমি মাদরাসার বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে। দীর্ঘ ছুটি নিয়ে বাড়ি ফিরছে শিক্ষার্থীরা। মাদরাসার শিক্ষার্থীরা এই অবসরকে কিভাবে কাজে লাগাবে এ বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন স্বপ্নচারী লেখক ও গবেষক আলেম মাওলানা মুহাম্মদ যাইনুল আবিদীন


শিক্ষার্থীদের জন্য প্রথম পরামর্শ, শিক্ষার্থীদের মাথায় রাখতে হবে- তাদের একটি নিজস্ব পরিচয় আছে। তারা রাসূল সা. এর ওয়ারিস বা উত্তরাধীকারি। মানুষ তাদের ওই ভাবে দেখে মানুষ আনন্দিত হবে, তাদের পেয়ে মানুষ সম্মানিত হবে- তারা যেন এমনভাবে সমাজে নিজেকে উপস্থাপন করে। এই জায়গায় ছোট কিছু কাজের কথা বলব।

এক. প্রত্যেক শিক্ষার্থী তার ঘরে মা-বাবার জন্য সহযোগী হয়। তার পড়াশুনা থেকে শুরু করে ঘরের কাজকর্ম- সব ক্ষেত্রেই যেন মা-বাবার জন্য সহযোগিতা করে। তারা যেন এটা বোধ করে, আমার ছেলে ঘরে থাকলে আমাদের সুখ হয়। আরাম হয়।

দুই. তার বাড়ির কাছের মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ তাকবির উলার সাথে পড়ার চেষ্টা করে।

তিন. তার পড়াশুনার দ্বারা তার মহল্লাবাসীদের সামান্য হলেও উপকৃত করার চিন্তা করবে। অজু শেখানো যেতে পারে। সূরা শেখানো যেতে পারে। যাদের নামাজ টেকনিকালি সুন্দর হয় না, তাদের নামাজ শেখানে যেতে পারো।

চার. হযরত মুহাম্মদ সা. একজন কমপ্লিট মানুষ। একটি সুন্দর, আদর্শ, সমৃদ্ধ, সুশৃঙ্খল, শান্তিপূর্ণ সমাজ বির্নিমানে রাসূল সা. এর শিক্ষা অতুলনীয়। আমাদের শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা একটু বড়।

শরহে বেকায়া বা তার উপরে পড়ে। তাদের এই জায়গায় এসে ভাবতে হবে- আমি একজন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ পরিপূর্ণতম মানুষের ওয়ারিস। তাই সমাজের মধ্যে কোন ধরণের কল্যানকর কাজ করা যায়, এটা সে দেখবে।

সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে এই সময়ে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বন্ধ রয়েছে, সেসব শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু করা। আরেকটি হলো- স্থানীয়দের সাথে নিয়ে সমাজের উপকারী কাজ করা। এমন কোন কাজ যেটা থেকে সমাজের ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষ উপকৃত হয়। তার উদ্যোগ নিবে।

নিজের জীবন নির্মান, নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য প্রত্যেক শিক্ষার্থী নিজের সামর্থ অনুযায়ী তার পূর্বসূরী আকাবীর ও আসলাফের জীবনী পড়বে। যারা উর্দূ পড়তে পারে তাদের জন্য অবশ্যই পাঠ্য, যেটা না পড়ে কমপ্লিট আলেম হওয়া যায় না, সম্ভব না। সেটা হলো- শাইখুল হাদীস হযরত মাওলানা যাকারিয়া রহ. এর ‘আপবীতি’।

যে ভবিষ্যতে বড় আলেম, বড় মুহাদ্দিস হিসেবে দাড় করাতে চায়, তার জন্য এটা অনিবার্য পাঠ্য কিতাব। যারা নিজের ভেতরে সমাজ সংস্কার রাজনীতি জাতীয় ভাবনা ধারণ করে- তারা শাইখুল ইসলাম সাইয়েদ হুসাইন আহমদ মাদানী রহ. এর আত্মজীবনী ‘নখশে হায়াত’।

যাদের এগুলো পড়া হয়েছে। তারা তাদের পছন্দ অনুযায়ী ওলামায়ে কেরামের জীবনী পড়বে। আসলাফ, মুহাদ্দিসিনের জীবনী পড়বে। তাদের মেহনত, সাধনা সম্পর্কে অবগত হবে। এবং সে অনুযায়ী তারানিজের জীবনকে কীভাবে আগাতে পারে সে বিষয়ে তারা ভাববে।

উপরের বইগুলোই পড়ুক বা মাদরাসা থেকে যে সিলেবাস দিয়েছে সেটাই পড়ুক। প্রায় ২, আড়াই মাসের ক্লাস বিরতিতে তালিবুল এলেমরা যা পড়ে তাই যেন নোট করে। লেখার অভ্যাস যেন থাকে।

হাতের লেখা সকল ব্যক্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই র্দীঘ সময়ে যদি তারা না লিখে তাহলে হাতের লেখাও নষ্ট হয়ে যায়। পরবর্তি সময়ে ভালো ফলাফলের জন্য এই জায়গায় এসে বাঁধা প্রাপ্ত হয়।


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ