আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: ফেনীতে বিশ্ব কিডনি দিবস পালিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার এ উপলক্ষ্যে জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি ফেনী জেলা শাখার কার্যালয়ে সকাল ১১টায় আলোচনা সভা ও বিনামূল্যে ঔষধ বিতরণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভা ও বিনামূল্যে ঔষধ বিতরণ কর্মসূচি সংগঠনের জেলা সদস্য মুহাম্মাদ রফিকুল ইসলাম'র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট গবেষক ও জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ডা.মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ।
উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটির উপদেষ্টা ডা. শাহাদাৎ হোসাইন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম চৌধুরী,মাওলানা আবদুল কাদের, মুহাম্মাদ আনোয়ার হোসাইন সুমন কমলনগরী,মুহাম্মাদ তাসজিদুর রহমান পিয়াল সহ জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, প্রতিবছরের মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের বৃহস্পতিবার দিবসটি পালিত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় এবার পালিত হয়েছে বিশ্ব কিডনি দিবস-২০২২। বর্তমান বিশ্বে অসংক্রামক ব্যাধিগুলোর মধ্যে কিডনি রোগ অন্যতম। সারা বিশ্বে বেড়েই চলেছে কিডনি রোগীর সংখ্যা। পুরুষের তুলনা এ রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে নারী। বাংলাদেশে দিন দিন কিডনি রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
‘একজন কিডনি রোগী তার শরীরের দু’টি কিডনিই যখন ৬০ থেকে ৭০ ভাগ বিকল হয়ে পড়ে তখনই তিনি এ রোগ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেন। এ কারণে রোগ ধরা পরার পর রোগী চিকিৎসার জন্য খুব কম সময়ই পান। দীর্ঘমেয়াদি ও বহুমূল্যের ডায়ালিসিস করানোর মাধ্যমে কিডনিকে সচল রাখা যায়। তবে এর খরচ ব্যয়বহুল। ডায়ালিসিস এবং প্রতিস্থাপন ব্যয়বহুল হওয়ায় বেশির ভাগ রোগীর পক্ষেই এর চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব হয় না। এ ছাড়া কিডনি পাওয়া সাপেক্ষে কিডনি প্রতিস্থাপনের খরচ কমবেশি হলেও ৫-৭ লাখ টাকা এবং পাশাপাশি সারা জীবন ওষুধের খরচ চালাতে হয়।’
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী কিডনি রোগীর সংখ্যা এবং এর কারণে মৃত্যুর সংখ্যা সঠিক ভাবে গণনা করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। কারণ একজন রোগী হৃদরোগে মারা গেলে তাকে হৃদরোগী ধরা হয়, কিডনির জন্য হৃদরোগের কারণ ধরা পড়ে না। অনেকেরই কিডনি ধীরে ধীরে বিকল হয়ে পড়ে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কোনও উপসর্গ থাকে না। ফলে রোগীরা বুঝতে পারে না এ রকম একটি ভয়াবহ রোগ তার শরীরে বাসা বেঁধেছে। যাদের ডায়াবেটিস আছে অথবা যাদের পরিবারে ডায়াবেটিস আছে, যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে বা পরিবারের কারও কিডনি সমস্যা আছে, তাদের বছরে অন্তত একবার কিডনি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
তিনি আরও বলেন, কিডনি অকার্যকর হওয়ার প্রধান কারণগুলো হলো ডায়াবেটিস, নেফ্রাইটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনিতে জীবাণুর আক্রমণ, সিসটিক ডিজিজিস, বিশৃঙ্খল জীবনযাপন। আর ভেজাল ও কৃত্রিম খাবারের এ যুগে বড় একটি সমস্যা হল কিডনিতে পাথর। রক্তের ইউরিয়া ক্রিয়েটিনিন লেভেল পরীক্ষা, আলট্রাসনোগ্রাম ইত্যাদির মাধ্যমে কিডনি সমস্যা পরীক্ষা করা যায়। রোগ ধরা পড়লে নিয়ম অনুযায়ী চলাফেরা ও খাওয়া-দাওয়া করলে সুস্থ থাকা যায়। দৈনিক ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা, নিয়মিত ব্যায়াম ও শারীরিক পরিশ্রম করার মাধ্যমে কিডনি রোগী স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে। মনে রাখতে হবে কিডনিকে সুস্থ রাখতে হলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
-এএ