।।খাদিজা ইসলাম।।
পোশাক মানুষের সুষ্ঠু রুচির বহিঃপ্রকাশ। প্রত্যেক মানুষ তার রুচি অনুযায়ী পোশাক পরিধান করার স্বাধীনতা রয়েছে। তেমনিভাবে হিজাব ও এক ধরনের শালীন পোশাক। মুসলিম নারীর আভিজাত্যের প্রতীক! সভ্যতার প্রতীক! সম্মানের প্রতীক এই হিজাব। তবে কেন এই হিজাব নিয়ে এত বাঁধা, আলোচনা, সমালোচনা, বিপত্তি!
এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাবি আরবি বিভাগের অধ্যাপক(নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন- বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের কোনো বাঁধাধরা পোশাক নেই। যার যার রুচি অনুযায়ী পোশাক পরিধান করতে পারবে। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে যদি বলি হিজাব মার্জিত পোশাক। একজন মেয়ে অবশ্যই হিজাব পরে ক্লাসে যোগ দিতে পারবে। বাঁধা দেওয়ার বিন্দু মাত্র অধিকার নেই।
তিনি বলেন, অপরদিকে যারা অশালীন পোশাক পরে তাদের কিন্তু কোনো ভাবে কোথাও হেয় করা হয় না। কারণ হিসেবে আমার মনে হয় একজন মুসলিম নারীকে ইসলামের গন্ডি থেকে বের করে আনতে হলে হিজাব ত্যাগ করা জরুরী। হিজাব থেকে বের করে আনতে পারলে ইসলামের ক্ষতিসাধন করা যাবে।
তিনি আরো বলেন, কর্নাটের মুসকান প্রসঙ্গে যদি বলি মেয়েটার ইমানি শক্তি কতটা প্রখর হলে, উগ্রপন্থী শত তরুণের তোপের মুখে আল্লাহু আকবার বলা বেশ কঠিন ব্যাপার।শুধুমাত্র ইমানি শক্তির বলিয়ানে এমন টা সম্ভব হয়েছে। হিজাবে বাঁধা দেওয়ার একটাই কারণ বলে আমার মনে হয় মুসলিম মিল্লাতের ক্ষতিসাধন করা। হিজাবকে তারা চিরতরে নিষিদ্ধ করতে চাই।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী ফারিয়া ইসলাম হিজাবের গুরুত্ব বলতে গিয়ে বলেন,হিজাব তো শালীন পোশাক।আল্লাহ পাকের বিধান। মুসলিমদের ধর্মীয় বিধান।পৃথিবীতে প্রত্যেক মানুষ নিজ নিজ ধর্ম পালন করতে পারে। তাহলে একজন মুসলিম হিসেবে হিজাব কেন পরা যাবে না!
তিনি বলেন, অনেকে তো অশালীন পোশাক পরে ক্যাম্পাসে চলে আসে। এখানো তো কাউকে আপত্তি করতে দেখা যায় না! নারীকে খাদক বানাতে চাই, ভোগ বিলাসের বস্তু বানানোর জন্যই উলঙ্গপনাকে উস্কে দিয়ে চরিতার্থ হাসিল করতে চাই তথাকথিত কোর্ট টাই পরা ভদ্রতার মুখোশে অমানুষেরা। তাই উল্লেখপনা মেয়ে দেখলে তাদের ভালো লাগে,আর হিজাব পরা মেয়ে দেখলে পরিক্ষার হল থেকে নিয়ে সব জায়গায় ঝামেলা পোহাতে হয় হিজাবি নারীদের।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্যের শিক্ষার্থি সাকিলা জাফর বলেন, সাহিত্যের শিক্ষার্থী হয়ে অন্তত এতটুকু বলতে পারি হিজাব শালীন পোশাক। আপত্তি থাকলে অশালীন পোশাক নিয়ে আপত্তি থাকতে পারে। রাস্তাঘাট,ক্যাম্পাস,প্রতিষ্ঠান সব জায়গায় তো যে যার মতো পোশাক পরে। কোনো সমস্যা হয় না। কেননা সবার পছন্দ মতো পোশাক পরার অধিকার রাখে। মুক্তবুদ্ধি, সংস্কৃতি মনা মানুষ হিসেবে আমি হিজাবে আপত্তি থাকার কোনো মানেই দেখি না।
তিনি বলেন, হিজাব পরিহিত কোনো নারীকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ডুকতে বাঁধা দেয়, কিংবা ক্লানে বাঁধা দেওয়া হলে এটা অন্যায়। একজন মানুষ কে ধর্মীয় কারিকুলাম পালনে বাঁধা দেওয়া। তার ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের সমতুল্য। প্রত্যকের ধর্ম পালনের অধিকার রয়েছে। শালীন মার্জিত পোশাক পরার অধিকার রয়েছে।
হিজাব নিয়ে নানা প্রশ্নের তোপে শিক্ষাবিদ, শিক্ষার্থীরা মন্তব্য নানা করেন। সবাই একযোগে বলেন হিজাব শালীন পোশাক। হিজাবে বাধা দেওয়া মানে একজন নারীর পোশাক পরার অধিকার কে খর্ব করা। শুধু তাই নয় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত,ধর্মীয় বিধান পালনে বাধা দেওয়ার কোনো অধিকার নেই কারো। হিজাবে নারী নিরাপত্তা লাভ করে, তাই হিজাব নিষিদ্ধের কোনো যুক্তিকতা নেই।
লেখক, শিক্ষার্থী ও গণমাধ্যমকর্মী
-কেএল