আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: প্রেমিক-প্রেমিকাকে একসঙ্গে দেখার পর বিষয়টি প্রেমিকার মাকে জানিয়ে দেয় ৯ বছরের শিশু লিজা।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে হবিগঞ্জ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মো. আল মামুন শিকদার।
এ কারণেই তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ বাঁশঝাড়ে ফেলে রেখে যায় ঘাতকেরা। হত্যাকাণ্ডের ৬ মাস পর গ্রেপ্তার তিন আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির মাধ্যমে এই রহস্য উদ্ঘাটন করেছে হবিগঞ্জ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
তিনি জানান, গত বছরের ২১ জুলাই ঈদুল আজহার দিন সন্ধ্যায় হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার গন্ধবপুর গ্রামের মো. সাগর আলীর মেয়ে লিজা আক্তারকে তার মা সেলিনা বেগম প্রয়োজনীয় কিছু দ্রব্যসামগ্রী আনতে গ্রামের পার্শ্ববর্তী বাজারে পাঠান।
কিন্তু রাত হয়ে গেলেও সে ফিরে আসেনি। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পায়নি পরিবার। পরে ওই দিন রাতেই শিশু লিজার বাবা সাগর আলী মাধবপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
নিখোঁজের চার দিন পর গ্রামের পার্শ্ববর্তী বাঁশঝাড়ে লাকড়ি কুড়াতে গিয়ে লিজার অর্ধগলিত মরদেহ দেখতে পান এক নারী। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে। রাতে লিজার বাবা সাগর আলী অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মাধবপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় হবিগঞ্জ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পরে পিবিআইয়ের সদস্যরা তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গত ৭ ও ৯ ফেব্রুয়ারি অভিযান চালিয়ে একই গ্রামের বাহার উদ্দিন, খাদিজা আক্তার তাজরীন ও আমেনা খাতুনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেন তারা।
পরে বুধবার আসামিদের আদালতে হাজির করলে বাহার ও তাজরীন হবিগঞ্জের সিনিয়র চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জুমুর সরকারের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
আসামিরা আদালতকে জানান, গ্রেপ্তার তাজরীনের ছোট ভাই তাকবীর হাসানের সঙ্গে প্রতিবেশী কিশোরী শান্তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সেই সুবাদে তারা দুজন প্রায়ই দেখা করত।
হত্যাকাণ্ডের কয়েক দিন আগে এক সন্ধ্যায় শান্তা ও তাকবির দেখা করার সময় লিজা তাদেরকে একসঙ্গে দেখে ফেলে এবং বিষয়টি সে শান্তার মাকে জানিয়ে দেয়। এরপর শান্তার মা শান্তাকে গালি-গালাজ করেন এবং তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি নিয়ে নেন।
রাগে ও ক্ষোভে লিজাকে শায়েস্তা করার সুযোগ খুঁজতে থাকেন শান্তা ও তাকবির। গত বছরের ২১ জুলাই ঈদুল আজহার দিন সন্ধ্যায় বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে লিজাকে চকলেটের লোভ দেখিয়ে একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে যায় ঘাতকরা। এ সময় তারা লিজাকে গলাটিপে হত্যা করে বাঁশঝাড়ে ফেলে রেখে আসে।
পুলিশ সুপার মো. আল মামুন শিকদার বলেন, ‘হত্যায় বেশ কয়েকজন অংশ নেয়। এর মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে।’
-এটি