।।কাউসার লাবীব।।
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব অধ্যাপক মাওলানা মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
আওয়ার ইসলামকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সিনিয়র ইমাম হাফেজ মাওলানা মুফতি মিজানুর রহমান।
জানা গেছে, অনেক দিন ধরেই বার্ধক্যজনিত নানা রোগে আক্রান্ত ছিলেন মাওলানা সালাহউদ্দিন। তার হার্টে রিংও পরানো হয়েছিল।
২০০৯ সালের ১ জানুয়ারি বায়তুল মোকাররমের খতিব হিসেবে মাওলানা সালাহউদ্দিনকে নিয়োগ দেয় ধর্ম মন্ত্রণালয়। তবে শারীরিক অসুস্থতা ও বার্ধক্যজনিত কারণে কয়েক বছর ধরে তিনি নামাজ পড়াতে পারননি।
এদিকে ১৯৪৪ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের হাজরাদী গ্রামে জন্মগ্রহন করেন মাওলানা সালাহউদ্দিন। ১৯৬৬ সালে স্থানান্তর হয়ে বন্দর ইউনিয়নের কলাবাগ গ্রামে বসবাস শুরু করেন।
১৯৬৪ সালে পূর্বপাকিস্তান মাদ্রাসা বোর্ড হতে কামিল প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান ও ১৯৬৫ সালে একই বোর্ড হতে যথাক্রমে আদব ও আদব কামিল প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন তিনি।
১৯৭৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থানে উত্তীর্ণ হন। তিনি উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্য সৌদি আরবের মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন ও ১৯৮৪ সালে মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরবি ডিপ্লোমা প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন।
তিনি এক্সিম ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, আইসিবি ব্যাংক সাউথ ইস্ট ব্যাংক, যমুনা ব্যাংকের শরিয়াহ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও তিনি ঢাকা ব্যাংক, সিটি ব্যাংক শরিয়া কাউন্সিলের সদস্য ও ইসলামি ব্যাংক কেন্দ্রীয় শরিয়া বোর্ডের সদস্য ছিলেন।
এছাড়াও সন্ধানী লাইফ ইন্সুরেন্স ইসলামি তাকাফুলের শরিয়া কাউন্সিলের চেয়ারম্যান। ঢাকা সিটি কলেজ ও কাকলী উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য ও শ্রীপুর বাগনাহাটি কামিল মাদরাসার পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন।
মাওলানা সালাহউদ্দিনের বৈবাহিক জীবনে ৩ কন্যা ও এক পুত্র সন্তান রয়েছে। তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করলেও, তারা বর্তমানে ঢাকার ঝিগাতলায় স্থায়ী হয়েছেন।
মাওলানা সালাউদ্দিন ১৯৯৯ সালের শেষের দিকে মাদ্রাসা-ই-আলিয়া, ঢাকার অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি একই মাদরাসার হেড মাওলানা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি মহাখালী মসজিদে গাউসুল আজমের খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এদিকে জাতীয় মসজিদের খতিবের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বায়তুল মোকাররম মসজিদে জুমার নামাজের পর তার প্রথম জানাজা হবে। এরপর জিগাতলায় দ্বিতীয় জানাজা ও মিরপুরে তৃতীয় জানাজা শেষে দাফন করা হবে। মরহুম সালাহউদ্দিনের অসিয়ত অনুযায়ী মিরপুর এলাকায় তার একজন পীরের পাশে দাফন করা হবে বলে জানান তার শ্যালক হাবিবুর রহমান।
-কেএল