সাইমুম সাদী।।
ধারণা করি ইসলামিক মোটিভেশনাল স্পিকার প্রচুর দেখতে পাব আমরা অচিরেই, যারা আলেম নন কিন্তু দ্বীনের পথে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য বক্তব্য দিবেন, কথা বলবেন। এই উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। দ্বীনের পথে যুবকরা এগিয়ে এলে লাভ আমাদেরই।
কিন্তু এ ব্যাপারে পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, কিছু মোটিভেশনাল বক্তা ভাই ও তাদের ভক্তবৃন্দ আকারে ইংগিতে আলেমদেরকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেন। তাদের খেদমতকে খুবই হেয় হিসেবে উল্লেখ করার চেষ্টা করেন। এক্ষেত্রে ঢালাওভাবে একটা অভিযোগ ভক্তবৃন্দ বলে থাকেন যে, আলেমরা সংকীর্ণমনা ও হিংসুক।
এই যে আলেম নন আলেম বিভাজন সৃষ্টি করা হচ্ছে তাতে আলেমদের তেমন ক্ষতি না হলেও ক্ষতি হবে উম্মাহর। মানুষ আলেম থেকে বিচ্ছিন্ন হলে লাভ শয়তানেরই।
এটা সত্য কোনও ননআলেম ইসলামী বক্তা যদি ভুল কথা বলেন তাহলে তাকে দরদী ভাষায় ভুলটুকু ধরিয়ে দেওয়া উচিত। এবং আমরা সবসময়ই এভাবেই বলার চেষ্টা করি। দু একজন যদি রূঢ়ভাবে বলেই থাকেন তাহলে একে উপলক্ষ করে আলেমরা খারাপ এমন মন্তব্য ও বক্তব্য উচিত না৷
আলেম থেকে জনগনকে বিচ্ছিন্ন করার অনেক অপকার। এরমধ্যে বড় সমস্যা হচ্ছে দ্বীনের অরিজিনাল রূপ ও সৌন্দর্য থেকে মানুষ বঞ্চিত হবে। দ্বীনের বিকৃতি সহজ হবে।
আল্লাহ আলেমদের ব্যাপারে একটি সার্টিফিকেট দিয়েছেন। এরশাদ করেছেন,
إِنَّمَا يَخْشَى اللَّهَ مِنْ عِبَادِهِ الْعُلَمَاءُ إِنَّ اللَّهَ عَزِيزٌ غَفُورٌ
নিশ্চয়ই তাঁর বান্দাদের (মধ্যে) আলেমগণই আল্লাহকে সত্যিকার অর্থে ভয় করে। নিশ্চয়ই আল্লাহ শক্তিশালী ও ক্ষমাশীল। সূরা আল-ফাতিরঃ ২৮।
এক্ষেত্রে এসে ভাই বেরাদাররা বলবেন, প্রকৃত আলেম কারা?
তাহলে সেটা নিয়ে কথা বলেন। আলেমের সংজ্ঞা নিয়ে বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করেন। কিন্তু গোটা আলেম সমাজ হিংসুক এই কথা বলে আলেম থেকে বিচ্ছিন্ন করার প্রবণতা একটা শয়তানি ওয়াসওয়াসা ছাড়া কিছুনা।
বক্তা ভাইদের বলব, এই যে সুন্দর মাঠে বয়ান করছেন, এই মাঠ তৈরির পেছনে উলামায়ে কেরামের হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম রয়েছে। আলেমরা যেখানেই গিয়েছেন প্রথমেই মাদ্রাসা তৈরি করেছেন। এইসব মাদ্রাসা ছিলো বলেই আজ আমরা গবেষক, চিন্তাবিদ এবং বক্তা ও স্কলার। এই মাঠ তো অনলাইন ছাড়াই তারা তৈরি করে গিয়েছেন। তারা অনলাইন ছাড়াই ভাইরাল ছিলেন তাদের জামানায়, আলহামদুলিল্লাহ।
এক বক্তাকে ক'দিন আগে মাদ্রাসা শিক্ষকদের অল্প বেতন নিয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতে দেখলাম। অথচ তিনি নিজেও জানেন না, যে মঞ্চে ওয়াজ করে চল্লিশ পঞ্চাশ হাজার টাকা নিয়ে চলে আসেন সেই মঞ্চ এবং মাঠ তৈরিতে করতেও অল্প বেতনের আলেমদের অবদান রয়েছে।
বাংলাদেশে প্রচুর ইসলামী বক্তা দরকার, কিন্তু তা আলেমদের তত্বাবধানেই হওয়া উচিত । আপনি স্থানীয় কওমি, আলিয়া মাদ্রাসার আলেমদের সাথে কথা বলতে পারেন। ইলিম অর্জনের চেষ্টা করতে পারেন। আলেম থেকে বিচ্ছিন্ন হবেন কেনো? তাতে বিকৃতির সম্ভাবনা বেশি।
নতুন প্রজন্মের ইসলামী বক্তাদের আমরা স্বাগত জানাই । আহলান সাহলান। মোবারকবাদ। তাদের নেক মাকসুদকে আল্লাহ কবুল করুন।
এনটি