সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
চিকিৎসকরা বছরে দুইবারের বেশি বিদেশ যেতে পারবেন না ঢাকা থেকে ভাঙ্গা হয়ে খুলনায় গেলো পরীক্ষামূলক ট্রেন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন প্রধান উপদেষ্টা: প্রেস উইং ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সাম্যের ভিত্তিতে সংবিধান রচনার আহ্বান নেপালে ফের কুরআন প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে সৌদি আগামীকাল সংবিধান সংস্কার কমিশনে প্রস্তাবনা পেশ করবে ইসলামী আন্দোলন ‘আল্লামা আতহার আলী রহ. জীবন, কর্ম, অবদান’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন আগামীকাল হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী রহ. : কে এই মহান ব্যক্তি হাজিদের স্বার্থ রক্ষায় সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : ধর্ম উপদেষ্টা মহানবীকে সা. নিয়ে কটূক্তি করলে সংবিধানে শাস্তির বিধান রাখার প্রস্তাব পার্থের

নীলফামারীতে আলেমদের উদ্দেশ্যে মাওলানা জুবায়ের আহমদের বয়ান

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুতাসিম বিল্লাহ
সৈয়দপুর থেকে>

তাবলিগ জামাত-কাকরাইল মসজিদের মুরব্বি মাওলানা জুবায়ের আহমদ ও মাওলানা আব্দুল বার হাফি দুই দিনের এক দ্বীনি সফরে উত্তরবঙ্গে এসেছেন। সফরের অংশ হিসেবে সৈয়দপুর দারুল উলুম মাদরাসা অডিটরিয়ামে আজ মঙ্গলবার আসর নামাযের পর উলামায়েকেরামের উদ্দেশ্যে বয়ান পেশ করেন।

মাওলানা আব্দুল বার সাব তার সংক্ষিপ্ত বয়ানে বলেন, আল্লাহ তায়ালার রহমতসমূহের মধ্যে অন্যতম এক রহমত তার নবীগণ। আর আমাদের বিশ্ব নবী -সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এই রহমতের মধ্যে সর্বোশ্রেষ্ঠ।

তিনি পশু পাখির জন্যও রহমত। পশুরাও তার কাছে এসে করুণা চাইতো।গাছ পালা তরুলতার জন্য তিনি রহমত।তিনি সবার জন্য রহমত।
এই জন্যই তো শত কষ্ট সয়েও মানুষকে কাছে টেনে নিয়েছেন।দূরে ঠেলে দেন নি।তায়েফের মানুষ তো তার পবিত্র রক্ত ঝরিয়েছে।ক্ষোভে প্রতিশোধ নেননি।ধ্বংসের জন্য বদদোয়া করেননি।

সাহাবারা যখন বললেন,তারা আপনাকে এতটা কষ্ট দেয় আপনি তাদের জন্য বদ দোয়া করুন। কিন্তু নবীজি বদ দোয়া করেন নি।দূরে ঠেলে দেননি। নবীজি তাদের হেদায়াতের দোয়া করেছেন।তাদের কল্যাণের প্রার্থনা করেছেন।

কারণ,তিনি স্বয়ং রহমত।তাকে রহমত হিসেবে পাঠানো হয়েছে। প্রিয় উলামায়ে কেরাম,আপনারা নবীজির ওয়ারিস।নবীজির ইলমের ওয়ারিস।রহমতের ওয়ারিস।রহমতের এই মহৎ গুণটিও আল্লাহ তায়ালা আহলে ইলমদের দিয়েছেন।নবীজি বলেছেন,আমার উপমা হলো বৃষ্টির মতো। অর্থাৎ বৃষ্টি যেমন অনাবাদি মৃতপ্রায় জমিনকে সজিব করে উৎপাদন উপযোগী করে তুলে,তেমনিভাবে নবীজির হেদায়াতের নুর যে অন্তরে বোনা হবে তাতে মৃত আত্মাকে জিবিত হবে।কুফুরী ও পাপের কালিমা দূর করবে।

নবীজি হেদায়াতের এই নুর দ্বারা অবুঝ মানুষগুলোর মৃত আত্মাকে সন্জিবিত করেছেন। জাগ্রত করেছেন। সুতরাং নবীজির এই মহান দায়িত্বে নবীর ওয়ারিস হিসেবে ওযলামায়েকেরামের এগিয়ে আসার বিকল্প আর কিছুই হতে পারেনা।

মাগরিবপূর্ব সংক্ষিপ্ত বয়ানে মাওঃ জোবায়ের বলেন, উলামায়ে কেরামকে উদ্যেশ্যে করে বলেন, ইলম মানুষকে দুনিয়া বিমুখ করে দেয়।এই জন্যই তো হাদিসে দোয়া শিক্ষা দেওয়া হয়েছে, হে আল্লাহ,আমাকে ইলমের মাধ্যমে অমুখাপেক্ষী করে দাও'।
আর বিমুখ করবে না কেন?

স্বয়ং আল্লাহ তায়ালাই তো কুরআনে বলেছেন,وأن من شي الا عندنا خزاينه সব কিছুর ভান্ডার আল্লাহর কাছে। সব কিছুর খাজানা যেহেতু আল্লাহর কাছে।তাহলে দুনিয়ার মুহতাজ কেন হবে?আহলে ইলমের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট।

আল্লাহর কাছে নেয়ার রাস্তা কি তা আলেমরা জানেন। যে নেককাজ করবে সে কল্যাণ প্রাপ্ত হবে।আর যে মন্দ কাজ করবে সে অকল্যাণ প্রাপ্ত হবে। দুনিয়াদাররা মনে করে টাকা হলে সব হয়ে যায়।বিপদ-আপদ দূর হয়।অথচ টাকা দিয়ে কখনো বিপদ দূর হতে পারে না। ঔষধ দিয়ে কখনো রোগ ঠেকানো যায় না।টিকা দিয়ে রোগ আটকানো যায় না।

কিন্তু ইলমহীন অবুঝ মানুষগুলো এটা বুঝতে চায় না।তারা বুঝতে চায় না যে,বিপদ আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে। সুতরাং বিপদ থেকে বাঁচতে হলে আল্লাহ র দিকে রুজু করতে হবে।

তারা এমনটি মনে করে কারণ,তাদের মধ্যে ইলম নাই।তাদের মধ্যে জাহালত বাসা বেঁধেছে।আর জাহালত হলো বিনাশ।ইলমহীনতার কারণে তারা অজ্ঞতাপূর্ণ কথা বলে।

আর ইলম হলো হায়াত।যারা ইলমের এই বিশেষ হায়াত বা রহমত প্রাপ্ত হয়েছেন তারা বড় এক নেয়ামত প্রাপ্ত হয়েছেন।তার ইলমের
আবেদন কী?এর দাবি কী? স্বয়ং আল্লাহ কুরআনে বলেছেন, হে নবী ,আপনার উপর যা অবতীর্ণ হয়েছে আপনি তা পৌঁছে দিন।

সুতরাং যারা ইলমওয়ালা তাদের দায়িত্ব হলো,সর্বোস্তরের মানুষের কাছে এই ইলম পৌঁছানো। আল্লাহ তায়ালা ইলমের এই মহান দৌলত সকলকে দেন না।যাদের দেন তাদের দায়িত্ব হলো,ইলমের তাকাযা পুরা করা।

আজ অগণিত মানুষ জাহালতের কারণে ইবাদত করেও ইবাদত হীন থেকে যাচ্ছে। হজ্জ করে যাকাত দেয় নামায পড়ে কিন্তু কোনটাই সে শুদ্ধভাবে আদায় করেনা।আসলে তার ইবাদতেই যে হচ্ছে না এবিষয়টিও জানে না।

এখন যদি তাদের কাছে বিশুদ্ধ ইলম পৌঁছানো না হয় তাহলে এক সময় তারা বিশুদ্ধ ইলমের শত্রু হয়ে যাবে।কারণ প্রবাদ আছে, মানুষ যে বিষয়ে অজ্ঞ তার শত্রু হয়। মানুষ সহীহ ইলম থেকে দূরে থাকতে থাকতে এক সময় সহীহ ইলমকে নিজেদের প্রবৃত্তির প্রতিবন্ধক মনে করে ইলম ও আহলে ইলমদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যাবে।

আমার শ্রদ্ধেয় উলামায়ে কেরাম, মাদরাসার খেদমত বড় জিম্মাদারী কোন সন্দেহ নেই কিন্তু এর সাথে সাথে কিছু সময় যদি সাধারণ মানুষের জন্য বের করা না হয় তাহলে এই উম্মত এক সময় নবীর ইলমের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে দ্বিধা করবে না। আল্লাহ তায়ালা সকলকে হেফাজত করুন।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ