আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের দায়ে প্রতিমন্ত্রীর পদ হারানো ডা. মুরাদ হাসান এমপির দেড়মাস পর দেখা মিললো চাচার জানাজায়। জানাজায় অংশগ্রহণ উপলক্ষে শনিবার (২২ জানুয়ারি) তিনি নিজবাড়িতে এলে বাদ্যবাজনা সহকারে তার কর্মী-সমর্থকরা উল্লাস করে। বিষয়টি নিয়ে তার নির্বাচনী এলাকা জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে নতুন করে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
জানা গেছে, মুরাদ হাসানের চাচা বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুর রহমান তালুকদার নান্নু শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) রাত ১০.২০টার দিকে সরিষাবাড়ী পৌরসভার বীর ধানাটা এলাকার নিজবাসায় ইন্তেকাল করেন। শনিবার দুপুর ১২টায় সরিষাবাড়ী অনার্স কলেজ মাঠে তার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাজার কিছুক্ষণ আগে ডা. মুরাদ হাসান ও তার বড়ভাই হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি মাহমুদুল হাসান তালুকদার ঢাকা থেকে বীর ধানাটা গ্রামস্থ প্রয়াত চাচার বাসায় যান। সেখানে কয়েক মিনিট থাকার পরই নিজবাড়ি সরিষাবাড়ী উপজেলার আওনা ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামে পৌঁছেন।
এসময় তার কর্মী-সমর্থকরা স্লোগান ও হাততালি সহকারে উল্লাস প্রকাশ করে। পাশেই উচ্চশব্দে বাঁশি বাজার শব্দ শোনা যায়।
মুরাদ হাসান হাত নেড়ে তাদের উল্লাসের জবাব দেন। এসময় আওয়ামী লীগ বা অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের পদস্থ কোনো নেতাকে তার পাশে দেখা যায়নি। তবে মুরাদ হাসানের নিজস্ব বাহিনী ও তার প্রতিনিধি হিসেবে খ্যাত সাখাওয়াত আলম মুকুলকে সার্বক্ষণিক তার পাশে দেখা যায়। সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মীর রকিবুল হক এসময় ওইবাড়িতে উপস্থিত ছিলেন।
দুপুর ২টায় এডভোকেট মতিয়র রহমান তালুকদার কলেজ মাঠে তার চাচা প্রয়াত আমিনুর রহমান তালুকদার নান্নুুর দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় মরহুমের কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন মুরাদ হাসান ও তার ভাই অতিরিক্ত বিচারপতি মাহমুদুল হাসান তালুকদার। গার্ড অব অনার প্রদান করেন উপজেলানির্বাহী অফিসার উপমা ফারিসা। জানাজার আগে মুরাদ হাসান চাচার স্মৃতিচারণ করে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন।
উল্লেখ্য, রাজনৈতিক ব্যক্তি, নারীজাতি ও সংবিধান নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্য এবং সর্বশেষ নায়িকা মাহিয়া মাহির সাথে আপত্তিকর অডিও ভাইরাল হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ডা. মুরাদ হাসান তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে গত ৭ই ডিসেম্বর পদত্যাগ করেন। ওইদিনই জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগ তাকে স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেয়। এর পরদিন ৮ই ডিসেম্বর তাকে সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগ ও তার নিজ ইউনিয়ন আওনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়।
তার পদত্যাগের খবরে এলাকায় দলীয় নেতাকর্মীরা তার কুশপুত্তলিকা দাহ, আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করে। এরপর থেকেই তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। ৬ জানুয়ারি স্ত্রী ডা. জাহানারা এহসান বিজলীকে নির্যাতনের ঘটনায় ধানমন্ডি থানায় তার বিরুদ্ধে জিডি হলে ফের আলোচনায় আসেন। তবে এতদিন তিনি লোকচক্ষুর আড়ালে ছিলেন।
-কেএল