রফিকুল ইসলাম জসিম
কারাদণ্ড শেষ হওয়ার আগেই আরব আমিরাতের বাণিজ্যিক শহর দুবাইয়ের সংশ্লিষ্ট কারাগারে মাত্র ২ বছরের কুরআনুল কারিম মুখস্থ করার সৌভাগ্য অর্জন করেছেন কারাগার বন্দি ৬০৫ জন। বন্দী জীবনের পর কুরআনের বিধান বাস্তবায়ন করে আলোকিত জীবনে ফিরে আসবে তারা। কারা কর্তৃপক্ষের আশাও এমনটি।
বন্দীদের জন্য এমন অভিনব ও সুন্দর আয়োজন নিঃসন্দেহে অপরাধ প্রবণতা কমাতে সহায়ক হবে। আর তা যদি দেশে দেশে বাস্তবায়িত হয় তবে সমাজের চিহ্নিত কারাবন্দী অপরাধীরাও নিজেদেরকে পরিবর্তনের সুযোগ পাবে।
‘দুবাই অ্যাওয়ার্ড’ খ্যাত আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতা কমিটির তত্ত্বাবধানে দুবাইয়ের কারাগারে কুরআনিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করা হয়েছে গত ২ বছর আগে। এ কমিটি কারাবন্দীদের মধ্যে পরীক্ষা নিয়ে দেখেছেন যে কারাবন্দীরাও কুরআন মুখস্ত করতে সক্ষম। ফলে দুই বছরে ধর্ম শিক্ষা প্রোগ্রামে অংশ নিয়ে পবিত্র কোরআন হিফজ করেছেন ৬০৫ বন্দি। এছাড়াও ২০২১ সালে ২৭৫ জন এবং ২০২০ সালে ৩৩৩ জন এই প্রোগ্রামে অংশ নিয়ে উপকৃত হয়েছেন।
বুধবার (১২ জানুয়ারি) খালিজ টাইমসে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে।
দুবাই কারাবন্দিদের পুনর্বাসনে বিভিন্ন প্রোগ্রামের ব্যবস্থা করে থাকে আরব আমিরাত সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের আওতায় ধর্ম, খেলাধুলা ও পেশাদার বিষয়ক বিভিন্ন প্রোগ্রাম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। জানা গেছে, দুবাইয়ের এডুকেশনাল জোন, স্থানীয় ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কলেজের সহায়তায় বন্দিরা নিজেদের শিক্ষা কার্যক্রম সম্পন্ন করেন এবং নিয়মিত তাদের কাছে সর্বশেষ প্রকাশিত প্রয়োজনীয় সব বই সরবরাহ করা হয়।
আরব আমিরাতে বন্দিদের জন্য বিভিন্ন কোর্স ও প্রোগ্রামের ব্যবস্থা রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কোর্স হলো সম্প্রদায়ভিত্তিক উদ্যোগ শিল্প কোর্স, গ্রাফিক ডিজাইন, ফিল্ম মেকিং, ইংরেজি ভাষা, চীনা ভাষা, রাগ নিয়ন্ত্রণ, চ্যালেঞ্জ ও সাফল্যের পথ, ক্রিয়েটিভ কোর্স ইত্যাদি। এর আগে ২০২০ সালে সায়েন্টিফিক কোর্স থেকে উপকৃত হয়েছেন ১৭০ জন বন্দি এবং শিক্ষা কোর্স থেকে উপকৃত হয়েছেন ১৯১ জন বন্দি।
দুবাই পুলিশের শাস্তি ও সংশোধন প্রতিষ্ঠানের সাধারণ বিভাগের পরিচালক মেজর জেনারেল আলি আল শামালি বলেন, এসব প্রোগ্রামের মাধ্যমে বন্দিদের দক্ষতা ও সক্ষমতার বিকাশ, পুনর্বাসন এবং তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসকে শক্তিশালী করা। এসব প্রোগ্রামের প্রধান উদ্দেশ্য হলো বিভিন্ন মনস্তাত্ত্বিক ও মানসিক সমস্যার মোকাবেলা করা এবং বন্দিদের মুক্তির পর ভয় ও দ্বিধাদ্বন্দের বাধা অপসারণে সহায়তা করা, যেন বন্দিরা সহজেই সমাজের মূলধারায় পুনরায় সংগঠিত হতে পারে।
কারাবন্দীদের এ উদ্যোগ অনেক প্রশংসনীয় এবং কারাবন্দীরা কুরআনের প্রতি আকর্ষিত হবে।কুরআনের আলোকে জীবন গড়তে উদ্বুদ্ধ হবে।
বিশ্বের প্রতিটি জেলখানায় এ ধারা অব্যাহত থাকলে নিঃসন্দেহে অপরাধ প্রবণতা কমে আসবে।কুরআনের আলোকিত জীবনের সন্ধান পাবে মানুষ।
-এটি