আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের হার প্রায় তিন মাস পর ৫ শতাংশ ছাড়িয়েছে। রাজধানীতে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের গুচ্ছ সংক্রমণে বাড়তে শুরু করেছে রোগী। এমন পরিস্থিতিতে দেশে করোনা সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ শুরু হয়ে গেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সংক্রমণ ঠেকাতে খুব শিগগিরই কঠোর বিধিনিষেধ জারি করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
জাহিদ মালেক বলেছেন, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আপাতত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে। সংক্রমণ ঠেকাতে কারিগরি কমিটির প্রস্তাবনা অনুযায়ী দু-এক দিনের মধ্যেই কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে।
গতকাল মানিকগঞ্জ সদর ও সাটুরিয়ায় শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী আরও বলেন, দেশে নির্বাচন হচ্ছে, সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। রাত ৮টার মধ্যে দোকানপাট বন্ধ, বাস, ট্রেন, লঞ্চে অর্ধেক যাত্রী পরিবহন এবং সবাইকে মাস্ক পরার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা বাস্তবায়নে ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করবে। অমান্যকারীদের জেল-জরিমানা করা হবে। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, গতকাল দেশে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ১১৬ জন। শনাক্তের হার ৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ। ১৯ হাজার ২৭৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। মারা গেছেন একজন, সুস্থ হয়ে ফিরে গেছেন ১৫৪ জন।
গত শুক্রবার দেশে করোনা শনাক্তের হার ছিল ৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ। ২০ হাজার ২০৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করে এক হাজার ১৪৬ জনকে করোনা পজিটিভ শনাক্ত করা হয়েছিল। ডিসেম্বরের শুরু থেকেই ঊর্ধ্বমুখী করোনা সংক্রমণের হার। এর মধ্যে নতুন ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ায় দেখা দিয়েছে দুশ্চিন্তা। জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ে দেশে ২১ জনের শরীরে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে।
তবে আক্রান্তের তুলনায় জিনোম সিকোয়েন্সিং কম করায় সংক্রমণে দায়ী ভ্যারিয়েন্টের সঠিক চিত্র উঠে আসছে না। স্বাস্থ্যবিধি না মানায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে দ্রুত। হাটে-বাজারে, অফিসে, গণপরিবহনে কেউ মানছে না স্বাস্থ্যবিধি। মাস্ক ছাড়া চলাফেরা করছে মানুষ। শীতকালে বেড়েছে সামাজিক অনুষ্ঠান। যা করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে কয়েক গুণ।
কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেছেন, ‘করোনা শনাক্তের হার ৫ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। তাই আমার মনে হচ্ছে দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ শুরু হয়ে গেছে। শনাক্তের হার ২ শতাংশের নিচে থেকে মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ৫ শতাংশ ছাড়াল। সংক্রমণ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এটি তৃতীয় ঢেউয়ের সুস্পষ্ট লক্ষণ। এখন ঢাকায় ওমিক্রনের দু-একটি ক্লাস্টার সংক্রমণ চলছে, সেটি সারা দেশে ছড়াবে। কারণ মানুষ মাস্ক পরছে না। এখনই সতর্ক হতে হবে, না হলে সংক্রমণ দ্বিগুণ হারে বাড়বে।’
-কেএল