আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গণহত্যায় সম্পৃক্ততার অভিযোগ এনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক কর্তৃপক্ষের (মেটা) বিরুদ্ধে প্রায় ২০ হাজার কোটি ডলারের ক্ষতিপূরণ মামলা করেছে রোহিঙ্গারা।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সুপিরিয়র আদালতে গতকাল সোমবার রোহিঙ্গাদের পক্ষের আইনজীবীরা ওই মামলা করেন।
এদিকে ব্রিটিশ আইনজীবীদলও মামলা শুরুর উদ্যোগের কথা জানিয়ে ফেসবুককে গণহত্যার তথ্য না মুছতে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক রোহিঙ্গাদের সংগঠন বার্মিজ রোহিঙ্গা অর্গানাইজেশন, ইউকে (ব্রুক)-এর সভাপতি তুন খিন গতকাল সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
তুন খিন বলেন, ‘জেনোসাইডের শিকার হওয়া রোহিঙ্গাদের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের দু’টি আইনি সেবা প্রতিষ্ঠান গতকাল সমন্বিত আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছে। আমিও এর সঙ্গে আছি।’
উল্লেখ্য, রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন তদন্তে জাতিসংঘ গঠিত স্বাধীন, সত্যানুসন্ধানী কমিশনের ২০১৮ সালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জেনোসাইডের পক্ষে ফেসবুকে ঘৃণ্য প্রচারণা চালানো হয়েছে। কিন্তু ফেসবুক কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে যথেষ্ট উদ্যোগ নেয়নি। এর মাধ্যমে তারা কার্যত মিয়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ে। ফেসবুক কর্তৃপক্ষও পরে বিষয়টি স্বীকার করে। যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটের শুনানিতে মেটার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ঠেকাতে তাদের আরো কাজ করা উচিত ছিল।
ব্রুক সভাপতি তুন খিন বলেন, ‘রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ন্যায়বিচারের জন্য আমরা চেষ্টা করছি। ফেসবুক রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ঘৃণ্য প্রচারণা চালানোর সুযোগ দিয়েছে। ফলে রোহিঙ্গাদের ওপর অবর্ণনীয় সহিংসতা হয়েছে।’
তুন খিন বলেন, ‘ফেসবুককে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। প্রভাবশালী এই বৈশ্বিক কম্পানি মানবাধিকারের চেয়ে তাদের লাভকেই বড় করে দেখেছে।’
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ফেসবুক অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য উসকানিমূলক ভিডিও, সহিংসতা এবং অপপ্রচারের ভিডিও ও তথ্য সংবলিত পেজগুলোকে ব্যবহারকারীদের দেখতে উৎসাহিত করেছে। এতে ঘৃণ্য অপপ্রচার আরো বেড়েছে এবং তা গণহত্যায় উসকানি হিসেবে কাজ করেছে।
আর্জেন্টিনার আদালত সম্প্রতি রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচার করার পক্ষে রায় দিয়েছেন। ব্রুক সভাপতি তুন খিন বলেছেন, তারা আর্জেন্টিনার আদালতে মামলা চালানোর পাশাপাশি রোহিঙ্গা গণহত্যায় উসকানিদাতাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছেন।
-এএ