আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: মূসা আ. ‘কালীমুল্লাহ’ (যিনি দুনিয়াতে আল্লাহর সাথে কথা বলেছেন) হওয়ায় মূসা আ. ও আল্লাহর কথোপকথন শিরোনামে সমাজে অনেক বানোয়াট কিসসা প্রচলিত হয়েছে। একটি কিসসা হল-
একবার মূসা আলাইহিস সালাম আল্লাহর সাথে কথোপকথনের জন্য যাচ্ছিলেন। পথে আবেদের সাথে দেখা হলে সে বলল, আল্লাহকে জিজ্ঞেস করবেন, আমার জন্য আল্লাহ কোন্ জান্নাত প্রস্তুত রেখেছেন? তারপর দেখা হল, এক পাগলের সাথে। সে বলল, আল্লাহকে জিজ্ঞেস করবেন, আমি কি জাহান্নামে যাব?
আল্লাহকে জিজ্ঞেস করলে আল্লাহ বললেন, আবেদ জাহান্নামে যাবে আর পাগল জান্নাতে যাবে। মূসা আ. বিষয়টি বুঝতে পারলেন না। ফেরার সময় পথিমধ্যে দেখলেন, এক রাখালকে বাঘ তাড়া করেছে তখন রাখাল দৌড়াতে দৌড়াতে একটি বদনার মধ্যে প্রবেশ করল এবং বদনার নল দিয়ে বের হয়ে গেল। তা দেখে বাঘও বদনার মধ্যে প্রবেশ করে কিন্তু সে আর নল দিয়ে বের হতে পারে না।
এরপর পাগলের সাথে দেখা হলে মূসা আ. পাগলকে এ ঘটনা বললেন, তখন পাগল তা বিশ্বাস করল এবং বলল, আল্লাহ চাইলে সবই সম্ভব। তারপর আবেদের সাথে দেখা হলে আবেদকেও মূসা আ. ঐ ঘটনা বললেন। কিন্তু আবেদ তা বিশ্বাস করল না; সে বলল, এমনটি সম্ভব না। এবার মূসা আ. বুঝতে পারলেন- কেন আল্লাহ বলেছেন, আবেদ জাহান্নামে যাবে আর পাগল জান্নাতে যাবে। কারণ, পাগল নবীর কথা বিশ্বাস করেছে, আবেদ করেনি।
নবীর কথা বিশ্বাস করা-না করার বিষয়টি সামনে আনতে এ কিসসার অবতারণা করা হয়। কিন্তু তা একটি বানোয়াট কিসসা।
নবীর কথা বিশ্বাস করা ঈমানের অপরিহার্য অংশ। এটা স্বতঃসিদ্ধ বিষয়। নবীগণ হক এবং তাঁরা সবসময় সত্য বলেন। নবীর দেয়া দৃশ্য-অদৃশ্য সকল খবরই বিশ্বাস করা বাঞ্ছনীয়। কিন্তু এর অর্থ এটা নয় যে, নবীর নামে যে যা-ই বলবে, শুদ্ধাশুদ্ধি যাচাই করা ছাড়াই মানুষকে তা বিশ্বাস করতে হবে। তেমনি নবীর কথা বিশ্বাস করা-না করার বিষয়টি সামনে আনার জন্য এজাতীয় বানোয়াট কিসসার অবতারণা করার প্রয়োজন নেই; ইসলামে বিষয়টি স্বতঃসিদ্ধ এবং কুরআন-হাদীসে বিষয়টি স্পষ্টরূপে বিবৃত হয়েছে। সূত্রে- মাসিক আল কাউসার।
-কেএল