আগামীকাল বৃহস্পতিবার ১১ নভেম্বর ৮৪৬ ইউপিতে দ্বিতীয় ধাপে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। দ্বিতীয় ধাপের এই নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, খেলাফত মজলিস-সহ বেশ কয়েকটি দল অংশগ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আগামীকাল অনুষ্ঠতিব্য ইউপি নির্বাচনের ঠিক শেষ মুহূর্তে ইসলামি দলগুলোর প্রস্তুতি কতটুকু। খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করেছেন আওয়ার ইসলামের প্রতিবেদক নুরুদ্দীন তাসলিম।
এ বিষয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আহমদ আবদুল কাইয়ূম আওয়ার ইসলামকে জানিয়েছেন, ৮৪৬ টি ইউনিয়নের মধ্যে ইসলামী আন্দোলনের পক্ষ থেকে অনেকেই প্রার্থী হিসেবে আবেদন করেছেন। তবে ৩৫৮ জন প্রার্থী ইউপি নির্বাচনের জন্য সুযোগ পেয়েছেন। এর মধ্যে জোর জবরদস্তি মূলকভাবে ৯ জনের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সুষ্ঠু সুশৃংখল নির্বাচনের সুযোগ পেলে প্রায় ১ থেকে দেড়শ’ জন প্রার্থী ইসলামী আন্দোলন থেকে বিজয়ী হবেন বলে আশাবাদী তিনি।
সিলেট, সুনামগঞ্জ, মানিকগঞ্জ- সহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ১৫ জনের মত প্রার্থী রয়েছে খেলাফত মজলিসের পক্ষ থেকে।
জনগণের সাথে সম্পৃক্ততা ও জনগণের কাছে যাওয়ার প্রচেষ্টা হিসেবে ইউপি নির্বাচনে দলটি অংশগ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন দলের নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী।
তিনি বলেছেন, নির্বাচনের স্বচ্ছতার বিষয়টি বর্তমানে সবার সামনে স্পষ্ট। বর্তমানে বিরোধী প্রার্থীরা বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। এরপরও আমরা নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি কারণ ইসলামী কোন দলের পক্ষ থেকে ১ জন প্রার্থীও বিজয়ী হলে তা জনগণের সঙ্গে ইসলামপন্থীদের সম্পৃক্ততা বাড়ানোর সুযোগ করে দেয়।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের পক্ষ থেকেও সিলেট, সুনামগঞ্জ-সহ বেশ কিছু এলাকায় প্রার্থী রয়েছে। সব মিলিয়ে মোট ৩৫ জনের মত প্রার্থী রয়েছে দলটির পক্ষ থেকে। সবার পক্ষ থেকেই সরব প্রস্তুতি রয়েছে বলে আওয়ার ইসলামকে জানিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী। বিগত নির্বাচনে কয়েকটি এলাকায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। সেই হিসেবে পরিরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে এবার ভালো কিছু হতে পারে বলে আশাবাদী জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম।
এদিকে ইসলামী ঐক্যজোটের সহকারী প্রচার সম্পাদক মাওলানা আনছারুল হক ইমরান আওয়ার ইসলামকে জানিয়েছেন, ইসলামী ঐক্য জোটের পক্ষ থেকে অনেকেই নির্বাচনে প্রার্থী হতে চেয়েছেন। তবে পরিস্থিতি ও পরিবেশ বিবেচনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া-সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় অল্প কয়েকজনকে দলের পক্ষ থেকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
ইসলামী আন্দোলন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, খেলাফত মজলিস ইউপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেও কেন্দ্রীয়ভাবে দ্বিতীয় ধাপের স্থানীয় নির্বাচনে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের পক্ষ থেকে কোনো প্রার্থী দেওয়া হয়নি। তবে দলটির পক্ষ থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী দাঁড়ানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এবারের নির্বাচনে সিরাজগঞ্জে একজন প্রার্থীও রয়েছে বলে জানিয়েছেন দলের নায়েবে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী। তবে এবার ১ জন অংশ নিলেও তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে দলের পক্ষ থেকে প্রার্থী সংখ্যা আরো বাড়বে বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরে প্রথম ধাপে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে দুই ভাগে। প্রথমে ২০৪টি নির্বাচন হয়েছে ২১ জুন আর ১৬০টি নির্বাচন হয়েছে ২০ সেপ্টেম্বর। দ্বিতীয় ধাপে কাল ১১ নভেম্বর৮৪৬টি ইউপিতে , তৃতীয় ধাপে ১ হাজার ৭টি ইউনিয়নে নির্বাচন হবে ২৮ নভেম্বর। সেই সঙ্গে অনুষ্ঠিত হবে ২০টির মতো পৌরসভা নির্বাচনও।
চতুর্থ ধাপের তফসিল হতে পারে শিগগির। তৃতীয় ও চতুর্থ ধাপের নির্বাচনে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড। তবে স্থানীয় সাংসদ ও জেলা নেতাদের ইচ্ছায় শরীয়তপুর ও মাদারীপুরে নির্বাচন উন্মুক্ত করা হয়েছে। ডিসেম্বরেই সব ইউপি নির্বাচন সম্পন্ন করতে চায় নির্বাচন কমিশন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রথম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা ও মেয়াদোত্তীর্ণ উপজেলার ভোটে আওয়ামী লীগের নিজেদের মধ্যে এ পর্যন্ত সংঘর্ষ হয়েছে ১৭৭টি। এতে নিহত হয়েছেন ৩৮ নেতাকর্মী। এখনো নিজেদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এমনকি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটছেই। দিন দিন ‘অভ্যন্তরীণ নির্বাচনী সহিংসতা’র শঙ্কা আরো বাড়ছে।
এটি