নুরুদ্দীন তাসলিম।।
কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ মজলিসে আমেলার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৩০ অক্টোবর (শনিবার)।
শনিবার যাত্রাবাড়ীর কাজলায় বেফাকের নতুন ভবনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে ইসলামকে নিশ্চিত করেছেন বেফাকের সহ-সভাপতি মাওলানা মুসলেহুদ্দীন গহরপুরী।
বৈঠকে বেফাকের বেশ কিছু এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা হবে। এর মধ্যে সংস্থাটির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও হাইয়াতুল উলিয়া কো- চেয়ারম্যান নির্ধারণ অন্যতম। এছাড়াও আমেলার বিগত ৯ টি বৈঠকের প্রতিবেদন পেশ করা হবে বলে জানা গেছে।
২০১৭ সালে আল হাইয়াতুল উলিয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া প্রতিষ্ঠার পর এখন পর্যন্ত সংস্থাটির তিনজন কো- চেয়ারম্যান ইন্তেকাল করেছেন। সর্বশেষ মুফতি ওয়াক্কাস রহ.-এর ইন্তেকালের পর নতুন করে এখনো কোন কো-চেয়ারম্যান নির্ধারণ করা হয়নি। সর্বোচ্চ শিক্ষা অথরিটির কো-চেয়ারম্যান ও সিনিয়র সহ-সভাপতি কে হচ্ছেন এ বিষয়টি জানতে বরাবরই আগ্রহ-উদ্দীপনা থাকে মাদরাসা সংশ্লিষ্টদের মাঝে।
এ পদটিতে কে আসতে পারেন এ নিয়ে সাম্ভব্য বেশ কয়েকজনের শোনা যাচ্ছে। তন্মধ্যে ফরিদাবাদ মাদরাসার মহাপরিচালক মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মাখজানুল ইসলাম মাদরাসার পরিচালক মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদী, সিলেটের মাওলানা আব্দুল বারি ধর্মপুরীর নাম সামনের কাতারে আছে বলে কোন কোন সূত্রে জানা গেছে।
তবে এ বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি বেফাকের কর্মকর্তারা। সহ-সভাপতি পদে অনেক প্রবীণ ও যোগ্য মুরব্বী আছেন আমেলার সিদ্ধান্তে কেউ একজন দায়িত্ব বলেছেন তারা।
সংস্থাটির সহ-সভাপতি মাওলানা মুসলেহ উদ্দিন রাজু জানিয়েছেন, বেফাকের সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন প্রায় ৩২জন। মজলিসে আমেলার বৈঠকে আমেলার সদস্যদের অনুমোদনের মাধ্যমে কেউ একজন বেফাকের সিনিয়র সহ-সভাপতি নির্বাচিত হবেন। এবং পরবর্তীতে তিনিই কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ শিক্ষা অথরিটি আল হাইয়াতুল উলিয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়ার কো-চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
প্রসঙ্গত, বেফাকের সহ-সভাপতিদের মধ্য থেকে আমেলার বৈঠককে একজনকে সিনিয়র সহ-সভাপতি নির্বাচন করা হয়। এরপর বেফাকে সিনিয়রর সহ-সভাপতিই আল হাইয়াতুল উলিয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া এর কো-চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের প্রায় সব মাদরাসার সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে বাংলাদেশ কওমি মাদরাসার সরকার স্বীকৃত সর্বোচ্চ অথরিটি ‘আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’। দেশের আঞ্চলিক পাঁচবোর্ড ও বেফাক বোর্ডের তাকমিল জামাতকে মাস্টার্স (এম এ) সমমান দেওয়ার জন্য গঠিত হয়েছিলো এ অথরিটি। বোর্ড গঠনের পর গত ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কওমি মাদরাসাকে মাস্টার্সের (এম. এ) স্বীকৃতি দেন।
প্রতিষ্ঠাকালীন এ অথরিটির চেয়ারম্যান ছিলেন আল্লামা শাহ আহমদ শফি রহ.। তিনি গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর ইন্তেকাল করেন। আর প্রতিষ্ঠাকালীন কো-চেয়ারম্যান ছিলেন মাওলানা আশরাফ আলী রহ.। তিনি ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর ইন্তেকাল করেন। এরপর যাত্রাবাড়ী মাদরাসার মুহতামিম মুহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমুদুল হাসানকে বেফাকের (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি ও হাইয়াতুল উলইয়ার চেয়ারম্যান নির্বাচন করা হয়।
একই সময়ে বেফাকের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও হাইয়াতুল উলইয়ার কো-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী রহ.। তিনিও ইন্তেকাল করেছেন ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর। তার ইন্তেকালের পর সর্বশেষ এই পদে নিয়োগ পান মুফতি ওয়াক্কাস রহ.। তবে তিনিও গত ৩১ মার্চ (বুধবার) ভোর ৪.৩০ মিনিটে রাজধানী ঢাকার মহাখালী শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। তার ইন্তেকালের পর প্রায় ৬ মাস ২৮ দিন ধরে শূন্য রয়েছে এ পদ।
-এটি