সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


আব্বাজান ‘আঞ্জুমান ইসলাহে সিবয়ান’ নামটা রেখে দিয়েছিলেন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

[জামিয়া দারুল উলুম করাচির মুখপাত্র ‘ماہنامہ البلاغ মাহনামা আল-বালাগ’ এ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত বিশ্বনন্দিত আলেম, স্কলার আল্লামা তাকি উসমানির আত্মজীবনী আওয়ার ইসলামে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ হচ্ছে আলহামদুলিল্লাহ।

এ বিষয়ে আল্লামা তাকি উসমানি আনুষ্ঠানকিভাবে আওয়ার ইসলামকে ভাষান্তর করে প্রকাশের অনুমতি দিয়েছেন। গত ২ জানুয়ারি জামিয়া দারুল উলুম করাচির তাখাসসুস ফিল ইফতার শিক্ষার্থী, আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকমের শুভাকাঙ্ক্ষি উমর ফারুক ইবরাহীমীর মাধ্যমে আল্লামা তাকি উসমানি ও পত্রিকা কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মজীবনী ‘ইয়াদে’ অনুবাদের অনুমতি চাওয়া হলে তারা খুশি মনে রাজি হন এবং আওয়ার ইসলামকে ধন্যবাদ জানান বাংলাভাষায় ইসলামের প্রচার ও প্রসারের জন্য।

আল্লামা তাকি উসমানির নতুন ধারাবাহিক আত্মজীবনী یادیں ইয়াদেঁ  মাহনামা আল-বালাগে সফর ১৪৩৯ হিজরি, নভেম্বর ২০১৭ ইংরেজি মাস থেকে। আওয়ার ইসলামে লেখাটি প্রতি রোববার ও বুধবার প্রকাশ হবে ইনশাল্লাহ। আজ ছাপা হলো ৪৬ তম কিস্তি। অনুবাদ করেছেন মুহাম্মদ উমর ফারুক ইবরাহীমী।]


পূর্ব প্রকাশের পর: বাবুল ইসলাম ছিল আমাদের বাসার সবচে নিকটবর্তী মসজিদ। এই মসজিদ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা পেছনে অতিবাহিত হয়েছে।

এই মসজিদের কাছেই একটি ঘরে হযরত হাজী মুহাম্মদ আইয়ূব সাহেব রহ. থাকতেন। তার একাধিক সন্তান ছিলো। যাদের মধ্যে জনাব মুহাম্মদ কালিম সাহেব ছিলেন আমার সমবয়সী। (আল্লাহ তাআলা তাকে সুস্থতার সাথে দীর্ঘজীবি করুন।) মসজিদে নিয়মিত দেখা-সাক্ষাতে তার সাথে আমার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠে। আলহামদুলিল্লাহ! আজও সেই নির্মোহ বন্ধুত্ব অটুট রয়েছে। তিনি একটি সম্ভ্রান্ত, দ্বীনদার পরিবারের সন্তান।

জনাব কালিম সাহেবের সাথে খেলাধুলা, গল্প-আড্ডার সুযোগ আমার তেমন একটা হয়নি । একদিন তিনি আমাকে পরামর্শ দিলেন যে, বাচ্চাদের মধ্যে দ্বীনী জযবা জাগ্রত করার মানসে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করা দরকার। সুতরাং তারই আন্তরিক ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় মসজিদে প্রতি সপ্তাহে কিশোরদের নিয়ে একটি বৈঠক শুরু হয়ে গেলো।

খুবসম্ভব কালিম সাহেব তখন স্কুলে সপ্তম অথবা অষ্টম শ্রেণীতে পড়তেন, কিন্তু ঘরের দ্বীনদারী এবং তরবিয়তের ফলে বয়স হিসেবে তার দ্বীনীজ্ঞান ছিল খুবই ঈর্ষণীয় মাশা'আল্লাহ। তার বাকপটুতা ছিল আমার চেয়েও চমৎকার। যতটুকু মনে আছে, প্রথম মজলিসে তিনি হযরত উমর রাযি.এর ইসলাম গ্রহণের ঘটনা উপস্থিত কিশোরদেরকে হৃদয়গ্রাহী ভাষা ও আবেগ নিয়ে শুনিয়েছিলেন। যেটা কিশোরদের অন্তরে প্রচন্ডভাবে দাগ কেটেছিলো।

আমি প্রথমেই বলেছিলাম যে, আমার কথা বলার সময় জড়তার কারণে প্রায়শই কথা আটকে যেত। এজন্য কালিম সাহেবের মত হৃদয়গ্রাহী বক্তৃতা করা আমার পক্ষে মুশকিল ছিলো। কিন্তু যখন নিয়মিত কিশোরদের এই সম্মিলন অনুষ্ঠিত হতে থাকলো, আমাকেও প্রতিমাসে ওখানে কিছু না কিছু বলতে হতো।

যতটুকু মনে আছে, আমি হেকায়াতে সাহাবা থেকে কোন সাহাবির ঘটনা মুখস্থ করে আসতাম। আমার ভাতিজা হাকিম মোশাররফ হোসেন সাহেব রহ. যদিও আমাদের থেকে কিছুটা দূরত্বে বন্দর রোডস্থ বাসায় থাকতেন কিন্তু কিশোরদের সেই সম্মিলনে তিনিও নিয়মিত আগ্রহভরে অংশগ্রহণ করতেন।

একবার আমরা চিন্তা করলাম, কিশোরদের এই সংগঠনের একটি নাম নির্ধারণ করা দরকার। আমাদের বুঝে যতটুকু এসেছে আমরা সংগঠনের নাম নির্ধারণ করেছিলাম "শো'বায়ে তাবলীগে ইসলাম"। আমরা সংগঠনের গঠনতন্ত্রও একটি রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করেছিলাম।

ঘটনাচক্রে সেই রেজিস্ট্রার হযরত আব্বাজান রহ. এর নজরে পড়ল। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন- এটি কি? আমি বিশদ বিবরণ আব্বাজানের খেদমতে উপস্থাপন করলাম। আব্বাজান রহ. বললেন, এই নামটি সহীহ মনে হচ্ছে না। তোমাদের সংগঠনের নাম "আঞ্জুমান ইসলাহে সিবয়ান" রাখো। সুতরাং আমরা এই নামে লোগো, সীল ইত্যাদি তৈরি করে সংগঠনের কাজ আরও বেগবান করলাম। এই সংগঠনের যাবতীয় কার্যক্রম আমাদের ব্রাঞ্চ রোডের বাসা পরিবর্তন করার পর পরিসমাপ্তি ঘটলো।

চলবে ইনশাআল্লাহ...

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ