মাহমুদুল হাসান
বিশেষ প্রতিনিধি
গত ৮ অক্টোবর (শুক্রবার) বল্লভদী আল ইসলাহ একাডেমি ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসা আড়াইহাজার নারায়ণগঞ্জ এর ১৫ তম বার্ষিক তাফসিরুল কোরআন মাহফিলের একটি ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় তুলছে। বিষয়টি নিয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন মাহফিল কর্তৃপক্ষ।
মাহিফিলের আয়োজক মুফতি কাইয়ুম মোল্লা নিজের অবস্থান তুলে ধরে তার ফেসবুকে লিখেন, ‘কুরআনুল কারীমের তেলাওয়াত রবকে কাছে পাওয়ার বড় এক মাধ্যম। কুরআনের তেলাওয়াতের মাধ্যমে মুমিনের অন্তর শীতল হয়। আদনা থেকে আদনা মুসলমান, হোক সে বেনামাজি, তবুও সে কুরআনকে কলিজা দিয়ে ভালোবাসে। কোন মুসলমান কুরআনকে জেনে বুঝে অবমূল্যায়ন করতে চাইবে? নূন্যতম কোনো মুসলমানও এটা চাইবে না। সেখানে আমি একজন হাফেজ বানানোর ক্ষুদ্র খাদেম কিভাবে এটা চাইবো?’
আরো পড়ুন- এবার সেই টাকা উড়ানোর বিষয় নিয়ে মুখ খুললেন হাফেজ নাজমুস সাকিব
‘তবুও বলবো, "প্রিয় দোস্ত! একজন মানুষ ভুল থেকে মুক্ত থাকতে পারে না। তেলাওয়াত অবস্থায় টাকা ছিটানোটা আমার একেবারেই উচিৎ হয়নি, তখন আমার মাথাতেই ছিলো না যে, এটা আমার ঠিক হচ্ছে না। হ্যাঁ! এব্যাপারে মাসআলা তাহকীক করতে যেয়ে পরে বুঝতে পেরেছি যে, এটা আসলেই একটি গর্হিত কাজ। সেই জন্য অনেক প্রিয়রা কষ্ট পেয়েছেন, আহলে হক্ব ওলামায়ে কেরাম যেটাকে গর্হিত বলেছেন সেটাকে মেনে নিতে আমার একটুও কষ্ট হবে না ইনশা আল্লাহ এবং সেটার জন্য হাজার বার ক্ষমা চাইতেও রাজি। তবুও যেন হক্বের উপর থেকে পিছপা না হই!’ বলেন, মুফতি আব্দুল কাইয়ুম মোল্লা।
তিনি আরো বলেন, ‘পরিশেষে বলবো, সকলেই আমার এই কাজকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন! যারা আমার ভুলগুলো (পোস্ট দিয়ে হোক বা ম্যাসেজ দিয়ে হোক) ধরিয়ে দিয়েছেন তাদের জন্য রইলো এক সাগর ভালোবাসা। তাদের জন্য আমি অন্তরের অন্তস্থল থেকে দু'আ করি। আর আপনাদের কাছেও অধম দু'আ চাই যেন জীবনটা সুন্নতে নববীর আদর্শের উপর চালাতে পারি।’
এ বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে বিশ্বজয়ী হাফেজ নাজমুস সাকিব তার অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। তিনি গনমাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে লিখেন, ‘কুরআন তিলাওয়াত নিঃসন্দেহে আল্লাহ তায়ালার কাছে এক পছন্দনীয় ইবাদত,কিন্তু কুরআনের তিলাওয়াত অবস্থায় টাকা ছিটানো এটা ইসলাম সমর্থন করে না । যেখানে ইসলাম সমর্থন করে না সেখানে আমি এ বিষয়কে সাপোর্ট করার প্রশ্নই আসে না । আমি বরং এটাকে ভুল এবং অতি আবেগের বহিঃপ্রকাশ মনে করছি । যারা এ কাজটি করেছেন তাদের প্রতি অনুরোধ ভবিষ্যতে যেন এই গর্হিত কাজের পূনরাবৃত্তি না হয় ।’
আরো পড়ুন- তেলাওয়াতরত অবস্থায় টাকা ছিটানো চরম গর্হিত কাজ: কারী সাইদুল ইসলাম আসাদ
তিনি লিখেন, ‘যারা এই বিষয়টির সাথে আমাকে সম্পৃক্ত করে সমালোচনা করছেন তাদের জানানোর উদ্দেশ্যে বলছি, উক্ত বিষয়টির সাথে আমার কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না । আর পূর্বে থেকে আমি জানতামও না যে টাকা ছিটানোর মত এ ধরনের গর্হিত কোনো কিছু হবে।’
নাজমুস সাকিব লিখেন, ‘দীর্ঘ ১০ বছরে স্টেজে তিলাওয়াত করার সময় কখনও আমার সাথে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি । কখনো আশাও করিনি আমার সাথে এমন কিছু হবে।’
আরো পড়ুন- কুরআন তিলাওয়াত করার ও শোনার আদব
তিনি আারো লিখেন, ‘সবসময় চেয়েছি আপনাদের দোয়া ও ভালবাসা নিয়ে এগিয়ে যেতে, আগামীতেও আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসা সব সময় আমার উপর থাকবে বলে আশা রাখি,এর মাঝে যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন । আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়ার তৌফিক দান করুক । আমিন।’
-কেএল