শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


আল্লামা তাকি উসমানি হাফি. এর ধারাবাহিক আত্মজীবনী ইয়াদেঁ: ৪১ তম পর্ব

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

[জামিয়া দারুল উলুম করাচির মুখপাত্র ‘ماہنامہ البلاغ মাহনামা আল-বালাগ’ এ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত বিশ্বনন্দিত আলেম, স্কলার আল্লামা তাকি উসমানির আত্মজীবনী আওয়ার ইসলামে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ হচ্ছে আলহামদুলিল্লাহ।

এ বিষয়ে আল্লামা তাকি উসমানি আনুষ্ঠানকিভাবে আওয়ার ইসলামকে ভাষান্তর করে প্রকাশের অনুমতি দিয়েছেন। গত ২ জানুয়ারি জামিয়া দারুল উলুম করাচির তাখাসসুস ফিল ইফতার শিক্ষার্থী, আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকমের শুভাকাঙ্ক্ষি উমর ফারুক ইবরাহীমীর মাধ্যমে আল্লামা তাকি উসমানি ও পত্রিকা কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মজীবনী ‘ইয়াদে’ অনুবাদের অনুমতি চাওয়া হলে তারা খুশি মনে রাজি হন এবং আওয়ার ইসলামকে ধন্যবাদ জানান বাংলাভাষায় ইসলামের প্রচার ও প্রসারের জন্য।

আল্লামা তাকি উসমানির নতুন ধারাবাহিক আত্মজীবনী یادیں ইয়াদেঁ  মাহনামা আল-বালাগে সফর ১৪৩৯ হিজরি, নভেম্বর ২০১৭ ইংরেজি মাস থেকে। আওয়ার ইসলামে লেখাটি প্রতি রোববার ও বুধবার প্রকাশ হবে ইনশাল্লাহ। আজ ছাপা হলো ৪১ তম কিস্তি। অনুবাদ করেছেন মুহাম্মদ উমর ফারুক ইবরাহীমী।]


পূর্ব প্রকাশের পর: گلزار دبستاں আব্বাজান রহ. আমাকে কিতাবের সবক দিয়ে সঙ্গে করে সংসদে নিয়ে যেতেন। ওখানে বসেই তিনি আমার সবক শুজতেন। যেমনটা বলেছি, আমার প্রতি আব্বাজানের আচরণ ছিলো বড়ই সৌহার্দ্য ও সহমর্মিতাপূর্ণ। আমাকে তিনি শারিরীক শাস্তি দিতেন না৷ একদিনই কেবল তিনি আমাকে একটি চপেটাঘাত করেছিলেন।

আমার পড়ার মাঝে এক জায়গায় বানরের ফার্সি শব্দ এসেছে بوزینہ। আমি বারবার এটাকে بوزنہ পড়ছিলাম। আব্বাজান রহ. কয়েকবার বুঝালেন যে এটা بوزنہ নয়, বরং بوزینہ। কিন্তু কেন যেন আমার মুখের উপর بوزنہ ই চড়ে বসেছে।

আব্বাজানের বারবার সতর্ক করার পরও কিতাবের যেখানেই এই শব্দ আসতো আমি  بوزنہ ই পড়তাম। একদিন তিনি আমাকে একটি চপেটাঘাত করেছেন, ব্যস এরপর থেকে আমার শিক্ষা হয়ে গেছে।

পরবর্তীতে আর কখনো আমি এই শব্দের উচ্চারণে ভুল করিনি। হ্যাঁ, তিনি আমাকে আরেকবারও মেরেছিলেন। সেটি ছিলো ফজরের নামাযের জন্য না উঠার কারণে। আল্লাহ তাআলা সর্বদা তাঁর দরজা বুলন্দ করেন। এই দুটি ঘটনা ছাড়া তিনি আমাকে আর কখনো মারেননি।

এতোদিনে বাবুল ইসলাম মসজিদে আমার নিয়মতান্ত্রিক পড়াশোনা শুরু হয়ে গেছে। আব্বাজান রহ. আমাকে হযরত মাওলানা ফযলে মুহাম্মদ সাওয়াতি সাহেব রহ. এর হাতে অর্পণ করে দিলেন। হযরত মাওলানা ফযলে মুহাম্মদ সাহেব রহ. অত্যন্ত যোগ্য এবং ভয় সঞ্চারক উস্তায ছিলেন। আমি আমার অনিয়মিত পড়াশোনা অবস্থায় گلزار دبستاں কিতাবে আটকে ছিলাম।

ইতিমধ্যে উপরের জামাআতের কিছু শিক্ষার্থীও আমাদের সাথে যুক্ত হয়েছে। যাদের মধ্যে মাওলানা আশরাফ আলী সাহেব লাহোরি এবং মাওলানা ইসমাইল বলখী অন্যতম। হযরত মাওলানা ফজলে মুহাম্মদ সাহেব রহ. তাঁদেরকে গুলিস্তাঁ, বুস্তাঁ এবং আহসানুল কাওয়ায়েদ ইত্যাদি পড়াতে শুরু করলেন এবং আমাকেও কখনো কখনো তিনি সবক পড়াতেন।

তিনি আমাকে সুন্দর হস্তাক্ষর শেখানোর জন্য সেই বুযুর্গের হাতে অর্পণ করে দিলেন যিনি দারুল ইফতায় ফতওয়া নকলের খেদমত আঞ্জাম দিতেন। সন্ধ্যায় হযরত মাওলানা ফজলে মুহাম্মদ সাহেব রহ. আমার পড়াশোনার সার্বিক খোঁজখবর নিতেন। তাঁর ব্যক্তিত্ব আমার উপর ভীষণ প্রভাব ফেলতো। সন্ধ্যায় তাঁর হিসেবনিকেশের দুশ্চিন্তা পুরো দিন আমাকে আচ্ছন্ন করে রাখতো।

চলবে ইনশাআল্লাহ....


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ