[জামিয়া দারুল উলুম করাচির মুখপাত্র ‘ماہنامہ البلاغ মাহনামা আল-বালাগ’ এ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত বিশ্বনন্দিত আলেম, স্কলার আল্লামা তাকি উসমানির আত্মজীবনী আওয়ার ইসলামে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ হচ্ছে আলহামদুলিল্লাহ।
এ বিষয়ে আল্লামা তাকি উসমানি আনুষ্ঠানকিভাবে আওয়ার ইসলামকে ভাষান্তর করে প্রকাশের অনুমতি দিয়েছেন। গত ২ জানুয়ারি জামিয়া দারুল উলুম করাচির তাখাসসুস ফিল ইফতার শিক্ষার্থী, আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকমের শুভাকাঙ্ক্ষি উমর ফারুক ইবরাহীমীর মাধ্যমে আল্লামা তাকি উসমানি ও পত্রিকা কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মজীবনী ‘ইয়াদে’ অনুবাদের অনুমতি চাওয়া হলে তারা খুশি মনে রাজি হন এবং আওয়ার ইসলামকে ধন্যবাদ জানান বাংলাভাষায় ইসলামের প্রচার ও প্রসারের জন্য।
আল্লামা তাকি উসমানির নতুন ধারাবাহিক আত্মজীবনী “یادیں ইয়াদেঁ ” মাহনামা আল-বালাগে সফর ১৪৩৯ হিজরি, নভেম্বর ২০১৭ ইংরেজি মাস থেকে। আওয়ার ইসলামে লেখাটি প্রতি রোববার ও বুধবার প্রকাশ হবে ইনশাল্লাহ। আজ ছাপা হলো ৪০ তম কিস্তি। অনুবাদ করেছেন মুহাম্মদ উমর ফারুক ইবরাহীমী।]
পূর্ব প্রকাশের পর: আমার প্রাথমিক শিক্ষাদীক্ষা। বাবুল ইসলাম ছিল আমাদের বাসার সবচে নিকটবর্তী মসজিদ। হযরত আব্বাজান রহ. সেই মসজিদেই নামায পড়াতেন। সেখানে ইমদাদুল উলূম নামে একটি ছোট্ট মাদরাসাও ছিল, কিন্তু সেটি ছিল নিছক সাবাহী মক্তব। আব্বাজান রহ. ওখানে বুনিয়াদি আরবি এবং ফার্সি শেখানোর জন্য কয়েকজন শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছিলেন। যাদের মধ্যে হযরত মাওলানা ফযলে মুহাম্মদ সোয়াতি সাহেব ছিলেন অন্যতম।
(এই বুযুর্গ প্রথমে দারুলউলুম এরপর বানুরী টাউন এবং সর্বশেষ সোয়াতে নিজেই একটি মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেখানে তিনি ইলমুল ফারায়েযের তাদরিসের দায়িত্ব আঞ্জাম দিতেন। তার সম্পর্কে যতসামান্য আলোচনা আমি নুকুশে রফতেগাঁ নামক কিতাবে করেছি।) এছাড়াও হযরত মাওলানা নূর আহমাদ সাহেব রহ. এবং হযরত মাওলানা আমীরুযযামান কাশ্মীরী সাহেব রহ. সবিশেষ উল্লেখযোগ্য।
হযরত আব্বাজান রহ. মসজিদের প্রধান ফটকের ছাদের উপর একটি কামরা বানিয়ে সেখানে দারুল ইফতা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। পাকিস্তান হিজরতের পরও হযরত আব্বাজান রহ. এর কাছে নিয়মিত ইস্তিফতা (শরয়ী জিজ্ঞাসা) আসতেই থাকতো। কিন্তু তাঁর কাছে ফতওয়া নকল করা বা সংরক্ষণের কোন ব্যবস্থা ছিলোনা। তাই তিনি নিজেই ডাকঘর থেকে ইস্তিফতা বা প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করে জবাব লেখার পর আবার নিজেই তা পাঠানোর ব্যবস্থা করতেন।
এতদিনে দারুল ইফতায় ফতওয়া লেখা ও ফতওয়া নকল করা এবং মুস্তাফতিদের (প্রশ্নকর্তা) সাথে যোগাযোগ রক্ষার যাবতীয় ব্যবস্থা হয়ে গেছে। এই কাজের জন্য এক বুযুর্গ যার নাম এখন আমার মনে আসছেনা, তাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছিলো।
সেসময় আব্বাজান রহ. পাকিস্তানের সংবিধান প্রণয়নের কাজে সম্পৃক্ত অন্যতম সংগঠন "বোর্ড তালিমাতে ইসলামিয়া" র সদস্যও ছিলেন। আমি হামদে বারী "জ্যাকব লাইনে"র বাসায় থাকাবস্থায় পড়ে ফেলেছিলাম। হযরত আব্বাজান রহ. আমাকে ফার্সির কিতাব "گلزار دبستاں" শুরু করিয়ে দিলেন।
তিনি আমাকে এই কিতাবের সামান্য সবক দিয়ে নিজের সাথে সংসদে নিয়ে যেতেন। আমি সেখানে বসেই সবক ইয়াদ করে নিতাম। আব্বাজান সুযোগ মতো আমার থেকে সবক শুনতেন। আমার প্রতি আব্বাজানের আচরণ ছিলো বড়ই সৌহার্দ্য ও সহমর্মিতাপূর্ণ। আমাকে তিনি শারীরিক শাস্তি দিতেন না। একদিনই কেবল তিনি আমাকে একটি চপেটাঘাত করেছিলেন।
চলবে ইনশাআল্লাহ....
-এটি