আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: পৃথিবীব্যাপী বিজ্ঞান-প্রযুক্তির উন্নয়নে মুসলমানদের অবদান অপরিসীম। মুসলমানদের যে আবিষ্কারগুলো দুনিয়া বদলাতে সহযোগিতা করেছিল, তার মধ্যে অন্যতম হলো উইন্ডমিল বা বায়ুকল। মুসলিমদের অভূতপূর্ণ এই আবিষ্কার প্রথমত কৃষিকাজে ব্যবহৃত হলেও পরবর্তী সময়ে তা বিদ্যুৎ উন্নয়নেও সহায়ক হয়।
তৎকালীন প্রতিটি উইন্ডমিল বা বায়ুকলে কাপড় অথবা খেজুর পাতায় আচ্ছাদিত পাল থাকত ছয়টি কিংবা ১২টি। ইউরোপে বায়ুকল চালু হওয়ার ৫০০ বছর আগে থেকে আরবে বায়ুকল আবিষ্কার ও ব্যবহৃত হতে থাকে। গ্রীষ্মকালে পানির উৎসগুলো শুকিয়ে গেলে আরব দেশের বিশাল মরুভূমিতে শক্তির একমাত্র মাধ্যম হয়ে দাঁড়াত বাতাস। কয়েক মাস পর্যন্ত একদিক থেকে অন্যদিকে দ্রুত বেগে বাতাস প্রবাহিত হতো। এই বাতাসের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে উইন্ডমিল সচল থাকত।
ইতিহাসবিদদের মতে, পৃথিবীর প্রথম উইন্ডমিলটি ঘুরেছিল নবম শতাব্দীতে পূর্ব পারস্যে। অনেকের দাবি, এরও আগে সপ্তম শতাব্দীতে খলিফা ওমর (রা.)-এর যুগে বায়ুকল আবিষ্কৃত হয়েছিল। কিন্তু পার্সিয়ান ভূগোলবিদ ইস্তাখরির বর্ণনা মতে নবম শতাব্দীর আগে বায়ুকল আবিষ্কৃত হওয়ার বিষয়টি ঐতিহাসিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ।
তবে ৯১৫ সালের পারস্যের আবিষ্কৃত উইন্ডমিলকেই পৃথিবীর প্রথম উইন্ডমিল বলে বিবেচনা করা হয়।
চেঙ্গিস খানের বাহিনী যখন পার্সিয়ান মিলওয়াইটস দখল করে, তখন তারা পার্সিয়ানদের এ অদ্ভুত প্রযুক্তি দেখে অবাক হয়। পরে তারা এই উইন্ডমিল প্রযুক্তি চীনে নিয়ে যায়। সেখানে সেঁচের জন্য তারা এটি ব্যাপকভাবে নির্মাণ শুরু করে দেয়। এভাবেই সে সময় চীনসহ মধ্য এশীয় অঞ্চলে উইন্ডমিলের বিস্তৃত পরিসরে প্রচলন ঘটে।
পারস্যে উইন্ডমিল আবিষ্কৃত হওয়ার প্রায় ৫০০ বছর পরে এসে ১৩ শতাব্দীর দিকে ধীরে ধীরে এ প্রযুক্তি ইউরোপে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বেশি উইন্ডমিল আছে ইউরোপেই। একসময় নেদারল্যান্ডসে এত বেশি উইন্ডমিল ছিল যে তাদের প্রায় প্রতিটি শিল্প কয়েক শতাব্দী ধরে টিকে ছিল উইন্ডমিলের সুবিধা গ্রহণ করে।
-এটি