[জামিয়া দারুল উলুম করাচির মুখপাত্র ‘ماہنامہ البلاغ মাহনামা আল-বালাগ’ এ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত বিশ্বনন্দিত আলেম, স্কলার আল্লামা তাকি উসমানির আত্মজীবনী আওয়ার ইসলামে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ হচ্ছে আলহামদুলিল্লাহ।
এ বিষয়ে আল্লামা তাকি উসমানি আনুষ্ঠানকিভাবে আওয়ার ইসলামকে ভাষান্তর করে প্রকাশের অনুমতি দিয়েছেন। গত ২ জানুয়ারি জামিয়া দারুল উলুম করাচির তাখাসসুস ফিল ইফতার শিক্ষার্থী, আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকমের শুভাকাঙ্ক্ষি উমর ফারুক ইবরাহীমীর মাধ্যমে আল্লামা তাকি উসমানি ও পত্রিকা কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মজীবনী ‘ইয়াদে’ অনুবাদের অনুমতি চাওয়া হলে তারা খুশি মনে রাজি হন এবং আওয়ার ইসলামকে ধন্যবাদ জানান বাংলাভাষায় ইসলামের প্রচার ও প্রসারের জন্য।
আল্লামা তাকি উসমানির নতুন ধারাবাহিক আত্মজীবনী “یادیں ইয়াদেঁ ” মাহনামা আল-বালাগে সফর ১৪৩৯ হিজরি, নভেম্বর ২০১৭ ইংরেজি মাস থেকে। আওয়ার ইসলামে লেখাটি প্রতি রোববার ও বুধবার প্রকাশ হবে ইনশাল্লাহ। আজ ছাপা হলো ৩৭ তম কিস্তি। অনুবাদ করেছেন মুহাম্মদ উমর ফারুক ইবরাহীমী।]
পূর্ব প্রকাশের পর: لن تنالوا البر حتی تنفقوا مما تحبون এই আয়াত নাযিলের পর হযরত আবু আইয়ূব আনসারী রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে আরয করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমার বাগান, بیر حإ আমার কাছে সবচে প্রিয়। আমি চাচ্ছি এই বাগান সদকা করে দেব। তিনি বললেন, ওয়াহ! এই বাগান তো অনেক লাভজনক সম্পদ!
আমার রায় হচ্ছে তুমি এটাকে তোমার আত্মীয়স্বজনের মাঝে সদকা করে দাও। সুতরাং তিনি এমনটাই করলেন। সহীহ বুখারীর হাদীসে আছে যে এই বাগানটি মসজিদে নববীর সামনে অবস্থিত ছিল।
খোদ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামেরও এই কূপের পানি বেশ পছন্দনীয় ছিল। তিনি আগ্রহভরে এখান থেকে পানি পান করতেন। এই বরকতময় কূপের পাশে দু'বারকরে অবস্থানের সৌভাগ্য আমাদের হয়েছে এবং এই কূপের পানি পান করে আমরা পরিতৃপ্ত হয়েছি। এখন ইসতফা মনযিলের সেই ভবন এবং কূপ মসজিদের সম্প্রসারিত অংশে শামিল করে নেয়া হয়েছে।
হযরত আব্বাজান রহ আমাদেরকে মসজিদে নববীতে নিয়ে গেলেন। মসজিদে নববীর প্রতিটি স্মৃতি বিজড়িত স্থানের সাথে আমাদেরকে পরিচিত করালেন। এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওযা মোবারকে হাজিরি এবং সালাম আরয করার তাওফিক হয়েছে। আমার পুরো স্মরণ নেই আমরা মোট কতদিন মদীনা মুনাওয়ারায় ছিলাম।
খুবসম্ভব আটদিন হবে। এসময়ে আব্বাজান রহ বিভিন্ন স্মৃতি বিজড়িত স্থান দর্শনের জন্য আমাদেরকে নিয়ে যেতেন। জান্নাতুল বাকীর পর সর্বপ্রথম আমরা উহুদ প্রান্তর দর্শনের জন্য গিয়েছিলাম।
সেখানে উহুদের শহীদানের প্রতি সালাম নিবেদন করেছি। আমি লক্ষ্য করলাম আব্বাজান, ভাইজান এবং অন্যান্য সফরসঙ্গীরা মিলে অনুমান করছিলেন যে, মুশরিকদের সৈন্যরা কোথায় অবস্থান নিয়েছিলো আর মুজাহিদীনে ইসলাম কোনদিকে ছিলেন? যে টিলার উপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তীর বর্ষণকারীদের নিয়োজিত করেছিলেন সেটি কোনটি ছিলো? সেই টিলাকে " جبل الرماہ " বলা হতো।
সবাই মিলে এই বিষয়টির তাহকিক করছিলেন যে হযরত খালিদ বিন ওয়ালিদ রা কোন দিক থেকে এসে আক্রমণ করেছিলেন? কিন্তু নিশ্চিত কোন ফলাফল সামনে আসেনি। উহুদের যিয়ারতের পর আমরা মসজিদে কিবলাতাইন'এ হাজির হয়েছি। এটি সেই মসজিদ যেখানে প্রথমবারের মতো বাইতুল মাকদিসের পরিবর্তে কা'বা শরীফকে কিবলা বানানোর হুকুম এসেছে এবং নামাযের মধ্যেই হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কা'বা শরীফ অভিমুখী হয়ে গেছেন।
সেসময় এটি ছোট্ট একটি মসজিদ ছিলো এবং এতে দুটো ছোট ছোট মেহরাব সামনাসামনি ছিলো। একটি মেহরাব উত্তর দিকে ছিল এই কথা বোঝানোর জন্য যে নামায বাইতুল মাকদিস অভিমুখী হয়ে শুরু হয়েছিল। আরেকটি মেহরাব দক্ষিণ দিকে বাইতুল্লাহ শরীফ অভিমুখী ছিল।
এরপর গাজওয়ায়ে আহজাব স্থলেও হাজির হয়েছিলাম। আমি আমার বড়দের দেখেছি, তারা অনুমান করছেন যে খন্দক কোথায় এবং কোন পর্যন্ত খনন করা হয়ে থাকতে পারে। এরপর মসজিদে কোবা হাজির হয়েছি।
সেসময় এটিও বেশ ছোট্ট একটি মসজিদ ছিলো। মসজিদের ভেতরে, দেয়ালের বাইরে একটি বিশেষ স্থানে লৌহ ফলক ছিল একথার নিদর্শন হিসেবে যে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই জায়গায় ইমামতি করতেন। এবং মসজিদের চত্তরেও একটি ছোট্ট মেহরাব বানানো ছিল। এই মেহরাবের ব্যাপারে বলা হতো যে এটিই সেই জায়গা যেখানে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উটনী এসে বসে পড়েছিল।
চলবে ইনশাআল্লাহ....
-এটি