মোস্তফা ওয়াদুদ
নিউজরুম এডিটর
করোনার পর শুরু হওয়া ওমরাহ হজের খরচ বাড়ছে। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দ্বিগুণ খরচে আগামী মাসে বাংলাদেশ থেকে প্রথম ফ্লাইট চালু হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
এর আগে টানা ১৭ মাস পর চলতি হিজরি মুহাররমের ১ তারিখ থেকে (১০ আগস্ট) থেকে চালু হয়েছে ওমরার কার্যক্রম। দুই ডোজ টিকা গ্রহণকারী সারা বিশ্বের মুসলমানরা পবিত্র ওমরাহ করতে যাচ্ছেন। খুলে দেওয়া হয়েছে মসজিদুল হারামের সবগুলো প্রবেশ দ্বার। সাজানো হয়েছে নতুন আঙ্গিকে। করোনাকালে মসজিদে নববীর মাত্র চারটি গেট খোলা ছিল। চলতি মাসের বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) থেকে সব গেট উন্মুক্ত করা দেওয়া হয়েছে। মসজিদে নতুন কার্পেটও বিছানো হয়েছে।
এদিকে সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ বিষয়ক উপমন্ত্রী ড. আব্দুল ফাত্তাহ্ সোলায়মান মাশাত সৌদি গেজেটকে জানিয়েছেন, ওমরাহর ক্ষেত্রে মুসল্লিদের সংখ্যার কোনো সীমাবদ্ধতা থাকছে না। তবে করোনার কারণে যাতায়াত, হোটেল ভাড়াসহ সবকিছুতে শর্ত পালন সাপেক্ষে ওমরাহ হজের ব্যয় বেড়েছে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দ্বিগুণ।
আর হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি আলহাজ এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেছেন, ‘আগে হোটেলের একটি কক্ষে কয়েকজন শেয়ার করে থাকতেন। এবার হয়তো এক রুমে দুই জনের বেশি থাকতে পারবেন না। আবার তারকা হোটেল ছাড়া হয়তো ওমরাহ যাত্রীদের রাখা যাবে না। সেক্ষেত্রে হোটেল খরচ বাড়বে। ভিসার আগে হোটেল ভাড়া সম্পূর্ণ পরিশোধ করে রিসিপ্ট দেখাতে হবে। আবার গাড়িতে অর্ধেক আসনের বেশি যাত্রী নেওয়া যাবে না। সে কারণে ওমরাহ যাত্রীদের যাতায়াত খরচও বাড়বে। এভাবে করোনা পরিস্থিতির কারণে সব খাতেই প্রায় দ্বিগুণের মতো ব্যয় করতে হবে।’
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক বলেছেন, ‘১০ আগস্ট থেকে সৌদি সরকার ওমরাহ শুরু করেছে ঠিক। তবে ঐদিন থেকে আমাদের ওমরাহ যাত্রী পাঠানো সম্ভব হয়নি। কেননা আমাদের বৈঠক করে অনেক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। আমি একা সব সিদ্ধান্ত দিতে পারি না। তবে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে শীঘ্রই চালু হবে ওমরার ফ্লাইট।’
হজ এজেন্সিগুলো বলছে, বিশ্বে করোনা মহামারি শুরু হওয়ার আগে প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় আড়াই লাখ বাংলাদেশি ওমরাহ হজে যেতেন। এয়ারলাইনস ও হোটেলের মান অনুযায়ী বিভিন্ন ধরণের প্যাকেজে বাংলাদেশিরা যেতেন। এজেন্সিভেদে সর্বনিম্ন প্যাকেজ ছিল ৮০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকার মধ্যে। এর মধ্যে এয়ারলাইনসের সর্বনিম্ন রিটার্ন ভাড়া ছিল ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকা। এখন করোনা পরিস্থিতিতে বাড়বে ভাড়া।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশিদের ওমরায় যেতে এখনো অনেক আনুষঙ্গিক কাজ বাকি। বিশেষত বেসরকারি হজ এজেন্সিগুলোর সঙ্গে সৌদি কর্তৃপক্ষের দ্বিপক্ষীয় চুক্তি সম্পন্ন করা। যা ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। এ ছাড়া সৌদির প্রাইভেট কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আমাদের প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলোর চুক্তি করতে হয়। এসব প্রক্রিয়া অনেকটাই সম্পন্ন হওয়ার পথে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী মাসের শুরুর দিকেই প্রথম ওমরা ফ্লাইট যেতে পারে বাংলাদেশ থেকে। এমনটাই বলছেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন।
এমডব্লিউ/