আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: এখন আমের মৌসুম। বাজারে আমের ছড়াছড়ি। পুষ্টিগুণে আম যেমন অনন্য, তেমন আমের আঁটিতেও রয়েছে অনেক পুষ্টি উপাদান। এতে আছে ভিটামিন এ, সি, ই, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, কপার ও ফলেট। আমের আঁটি ম্যাঞ্জিফেরিন নামের অ্যান্টি–অক্সিডেন্টের খুব ভালো উৎস। এ বিশেষ ধরনের অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট সেলুলার ড্যামেজ কমিয়ে শরীরে ক্যানসারের মতো মারাত্মক রোগের ঝুঁকি হ্রাস করে।
কয়েক হাজার বছর আগে থেকে আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় এর ব্যবহার হয়ে আসছে। বর্তমান সময়ে অনেক রোগের ওষুধ বানাতে আমের আঁটি ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ছাড়া স্কিন কেয়ার পণ্য তৈরিতে শিয়া বাটার আর কোকো বাটারের মতোই বেশ গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে ম্যাংগো বাটার বা অয়েল। এটি বানানো হয় আমের বীজের সাদা শাঁস থেকে।
সাধারণত কোল্ড প্রেস পদ্ধতির মাধ্যমে আমের বীজ থেকে ম্যাংগো বাটার বা অয়েল বানানো হয়। আমাদের দেশে শিয়া বাটার এবং কোকো বাটার পাওয়া গেলেও ম্যাংগো বাটার বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন বা আমদানি করা হয় না। কিন্তু চাইলে ঘরেই এটি বানিয়ে নিতে পারবেন কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই। এ জন্য পাঁচটি আমের আঁটির শাঁস আর এক কাপ নারকেল বা জলপাইয়ের তেল নিন।
শাঁসগুলো এক দিন রোদে শুঁকিয়ে গুঁড়ো করে নিন। এরপর নারকেল তেলের সাথে মিশিয়ে একটি বোতলে রেখে দিন। সাত দিন পর এটি ব্যবহারের উপযোগী হবে। ব্যবহারের আগে সম্ভব হলে এই মিশ্রণ রোদে দিতে হবে প্রতিদিন। আমের মৌসুমে আঁটিগুলো ফেলে না দিয়ে তার গুঁড়ো সংরক্ষণ করে অনেক দিন ব্যবহার করতে পারেন।
ম্যাংগো বাটারে রয়েছে ওলিয়েক, স্টিয়েরিক, লিনোলিয়েক নামে ফ্যাটি অ্যাসিড। আরো আছে ট্রাইগ্লিসারাইডস। এসব কটি উপাদান ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সহায়তা করে। তাই যাদের ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক, তারা নির্দ্বিধায় ম্যাংগো বাটার ব্যবহার করতে পারেন। এ ছাড়া এটি ত্বকের ইনফ্ল্যামেশন এবং অস্বস্তিকর চুলকানি, জ্বালাপোড়া কমাতে পারে।
এতে আছে উচ্চমানের ভিটামিন এ, সি ও ই। এ তিনটি ভিটামিন ত্বককে পরিবেশগত দূষণ, সূর্যের আলো এমনকি কম্পিউটার বা স্মার্টফোনের ব্লু লাইটের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে সুরক্ষা দেয়। ম্যাংগো বাটারের ভিটামিন সি শরীরে কোলাজেন উৎপাদনে বিশেষভাবে সহায়তা করে। কোলাজেন এমন এক ধরনের প্রোটিন, যা ত্বককে সহজে বুড়িয়ে যেতে দেয় না।
এ ছাড়া এটি ত্বকের দাগছোপ দূর করে এবং পায়ের গোড়ালি ফেটে গেলে এ বাটার লাগালে উপকার পাওয়া যাবে। ম্যাংগো বাটার সব ত্বকের জন্য উপযোগী। তবে সবচেয়ে বেশি ভালো শুষ্ক ত্বকের জন্য। এটি নন-কমিডোজেনিক। অর্থাৎ এটি ত্বকের লোমকূপ ব্লক করে না। এতে আছে অনেক অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান, যা ব্রণ বা র্যাশ প্রতিরোধ করতে পারে। তবে ব্রণ সারানোর জন্য ত্বকে ম্যাংগো বাটার সরাসরি লাগানো যাবে না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে।
সুন্দর ঝলমলে সিল্কি চুলের জন্য মাথায় ম্যাংগো বাটার লাগানো যেতে পারে। এটি স্ক্যাল্পের গভীরে ঢুকে পুষ্টি জুগিয়ে চুলের গোড়া মজবুত করে। আর এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যের জন্য মাথার ত্বকের খুশকি নিরাময়ে এটি অনেক কার্যকর। ইন্টারনেট।
এনটি