মোস্তফা ওয়াদুদ: করোনার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যে ক্ষতি হয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে এখনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া দরকার। এক্ষেত্রে সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে করোনা ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে যে প্রক্রিয়ায় চালু করতে যাচ্ছে, ধীরে ধীরে সে কার্যক্রমও চালু থাকতে পারে। পাশাপাশি প্রতি বেঞ্চে একজন করে শিক্ষার্থী বসিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোও দ্রুত খুলে দিতে পারে।
কেননা সাধারণত ইন্টারমিডিয়েট এর উপরে যে সকল শিক্ষার্থী রয়েছে, তাদের নিজস্ব বুঝ-বুদ্ধি তৈরি হওয়ার কারণে তারা হয়তো শিক্ষাদীক্ষা থেকে ঝরে পড়বে না। কিন্তু যারা ওয়ান থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ছে, কিংবা ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাসে পড়াশোনা করছে।
তাদের নিজস্ব বুঝ-বুদ্ধি ততটা নেই, তারা অনেকটা চাপের মুখেই পড়াশোনা করে থাকে। সেক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার কারণে তারা আবার পুনরায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে আসবে এর ১০০% নিশ্চয়তা দেওয়া কঠিন। করোনার পরে কমপক্ষে ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেই মনে করছি। আওয়ার ইসলামের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলছিলেন টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর উপজেলার ‘হাদিরা ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুল কাদের।’
আরও পড়ুন: করোনাকালে শিক্ষার্থীরা এই ৭ বিষয়ে মনোযোগী হবে: অধ্যক্ষ, তামীরুল মিল্লাত মাদরাসা
তিনি বলেন, বর্তমানে শিক্ষার্থীরা নিজেদের স্কুল বন্ধ থাকার কারণে কেউ অটো রিকশা চালাচ্ছে। অথবা কেউ ভিন্ন কোন পেশাকে বেছে নিয়েছে। সে হিসাবে করোনা চলে যাওয়ার পর আমাদের শিক্ষার্থীদের যে পরিমাণ ক্ষতি হবে সেটা কল্পনা করলে এখনই হৃদয়ে চরম ব্যাথা অনুভব হচ্ছে।
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীদের সাথে বন্ধুত্বের মত আচরণ করতে হবে: মাওলানা মাহমুদুল হাসান আল-মাদানী
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ফর্মূলা দিতে গিয়ে এ প্রিন্সিপাল বলেন, আমরা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কত সুন্দর একটি পরিবার গড়ে তুলেছিলাম। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় তা কবেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পিছিয়ে গিয়েছে কয়েক বছর। তাই আর যেন পিছিয়ে না যায়, সেজন্য সরকার চাইলে প্রতি বেঞ্চে একজন করে শিক্ষার্থী বসিয়ে ক্লাস চালু করে দিতে পারে।
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীদের ধরে রাখতে শিক্ষকদের ভূমিকা অপরিসীম: অধ্যক্ষ, এন.এস কামিল মাদরাসা
আর করোনা যেহেতু একটি নিয়ন্ত্রণের বিষয়, তাই ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস চালু করা যেতে পারে। কেননা এসব ক্লাসের শিক্ষার্থীরা মোটামুটি বুঝমান। তারা সহজে গাদাগাদির পরিবেশ তৈরি করবে না। দূরত্ব বজায় রেখে ক্লাস করানো সহজ হবে। এর মাধ্যমে শিক্ষার ধারাটাও চালু রইলো। আবার শিক্ষার্থীরাও ক্লাসে ফিরতে পারলো।
আরও পড়ুন: আল্লাহর সাহায্য ছাড়া মুক্তির উপায় নেই: আ.খ.ম আবুবকর সিদ্দীক
এর যক্তিকথা তুলে ধরে তিনি বলেন, যেভাবে হাসপাতাল কিংবা ফার্মেসিগুলোতে সাধারণ মানুষ গাদাগাদি করে চলাচল করছে, সে তুলনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমনটা হওয়ার সম্ভাবনা কম।
আরও পড়ুন: আল্লাহর উপর ভরসা করা ছাড়া মুক্তি নেই: প্রিন্সিপাল উম্মে হানী
তাই বলছি, যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিন। কেননা স্কুলগুলোতে কিছুটা হলেও করোনা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। তাই যে অনাকাঙ্খিত ক্ষতি হয়ে গিয়েছে প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের, দ্রুত প্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে সে ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার এখনই সময় বলে মনে করছেনটাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর উপজেলার ‘হাদিরা ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুল কাদের।’
এমডব্লিউ/