মোস্তফা ওয়াদুদ
নিউজরুম এডিটর
ইসলামের পঞ্চ রোকনের অন্যতম পবিত্র হজ। সামর্থবান ও সুস্থ-সবল মানুষদের জন্য হজ করা ফরজ। হজের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ আরাফার খুতবা। যে খুতবায় বিশ্ববাসীর জন্য বার্তা দেওয়া হয়। হজের খুতবা পৃথিবীর কয়েকটি ভাষায় অনুবাদ করা হয়। গতবছর থেকে বাংলা ভাষায়ও অনুবাদ করা হয় হজের খুতবা। হজের খুতবা অনুবাদ করেন একজন বাঙালী আলেম। এবছর হজের খুতবার বাংলা অনুবাদক হিসেবে মনোনয়ন করা হয়েছে বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার মাওলানা আ.ফ.ম ওয়াহীদুর রহমানকে। তিনি বর্তমানে মক্কা ইসলামী সেন্টারে দাঈ হিসেবে কাজ করছেন।
মাওলানা আ.ফ. ম ওয়াহীদুর রহমান প্রথমে হজের খুতবা সম্প্রচার প্রকল্পে বাংলা অনুবাদক হিসেবে গতবছর (২০২০ সালে) মনোনীত হোন। সে বছর তিনি বেশ সুনামের সাথে অনুবাদ করে সাড়া ফেলেছেন। এরপর এ বছর সৌদি সরকার ‘আরাফা ও হারামাইন-শরীফাইন খুতবা অনুবাদ প্রকল্প;কে স্থায়ী প্রকল্প হিসেবে অনুমোদন দেয়।
এ প্রসঙ্গে মাওলানা আ.ফ.ম ওয়াহীদুর রহমান আওয়ার ইসলামকে বলেন, ‘আরাফা ও হারামাইন-শরীফাইন খুতবা অনুবাদ প্রকল্প’তে আমার সাথে গত বছর ছিলেন বাংলাদেশি আরও দুজন আলেম। যারা উম্মুল ক্বরা ইউনিভার্সিটির ছাত্র। এ বছরও আরও তিনজন বাঙালি আলেম রয়েছেন। তারাও উম্মুল ক্বরা ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী।’
তিনি জানান, ‘এ প্রকল্পতে খুতবা অনুবাদের পাশাপাশি হজ সংশ্লিষ্ট আরও বেশ কিছু কাজ রয়েছে। যেগুলোতে অন্যান্য বাংলাদেশি আলেমগণ সহযোগিতা করে থাকেন। এবছরের খুতবার কাজে নিয়োজিত অন্যান্য বাংলাদেশি তিনজন আলেম হলেন, মুবীনুর রহমান, নাছির উদ্দীন ও আব্দুল মাজেদ। তারা প্রত্যেকেই উম্মুল ক্বরা ইউনিভার্সিটির ছাত্র। মাওলানা আ.ফ.ম ওয়াহীদুর রহমানকে প্রধান করে চার সদস্যের মাধ্যমে পরিচালিত হবে এ অনুবাদ প্রকল্প।’
হজের খুতবার অনুবাদের মতো এমন অন্যন্য উচ্চতায় কিভাবে পৌঁছালেন? জানতে চাইলে এ বাংলাদেশি আলেম বলেন, ‘গত বছর হজের ঠিক চারদিন আগে আমাকে জানানো হয়, আপনি আরাফার খুতবার বাংলা অনুবাদ করবেন। আমি তখন আরও দুজনকে সঙ্গে নিয়ে কাজ শুরু করি। এ বছর আলহামদুলিল্লাহ এটাকে স্থায়ী প্রকল্পে রুপ দিলো সৌদি সরকার।’
মাওলানা আ.ফ.ম ওয়াহীদুর রহমানের জন্ম দেশের কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলার গর্জনিয়া পূর্ব বোমাঙখিল গ্রামে। তাঁর পিতা মরহুম মাওলানা ইসমাইল। তিনি বর্তমানে সৌদি আরবে মক্কা ‘উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ে’ পিএইচডি গবেষণায় রত আছেন।
তিনি ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশের তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসা থেকে হাদিস বিভাগে কামিল ও ২০০০ সালে ঐতিহ্যবাহী মাদ্রাসা-ই-আলিয়া ঢাকা থেকে কামিল তাফসীর বিভাগে উত্তীর্ণ হন। তিনি কক্সবাজারস্থ টেকনাফের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ রঙ্গিখালী দারুল উলুম মাদরাসা থেকে দাখিল ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের চুনতি হাকিমিয়া আলিয়া মাদরাসা থেকে যথাক্রমে আলিম ও ফাজিল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি ১৯৯৯-২০০৪ ইং সাল পর্যন্ত ঢাকা মোহাম্মদপুর গাউছিয়া ফাজিল ডিগ্রী মাদরাসায় আরবি প্রভাষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
আগামী ৯ জিলহজ (২০ জুলাই) ঐতিহাসিক আরাফা ময়দান থেকে সৌদি বাদশাহর প্রতিনিধি আরবী ভাষায় হজের যে খুতবা প্রদান করবেন তা পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় সম্প্রচার করা হবে। মাওলানা আ.ফ.ম ওয়াহীদুর রহমান সেই খুতবার অনুবাদ বাংলায় রুপান্তর করবেন। যা সে দেশের রাষ্ট্রীয় চ্যানেলে সম্প্রচার করা হবে।
এছাড়াও তিনি মক্কায় ইসলামিক সেন্টারের একজন দাঈ হিসেবে বাংলা ভাষীদের দাওয়াতি কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন।
এমডব্লিউ/