শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
কাল যাত্রাবাড়ী মাদরাসায় মজলিসে দাওয়াতুল হকের ইজতেমা শেখ হাসিনা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন: মজলিস মহাসচিব ডেঙ্গুতে এক সপ্তাহে ৩১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৬২৩০ মসজিদে নববীর আদলে হবে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ: ধর্ম উপদেষ্টা খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত নতুন নির্বাচন কমিশনকে বিগত কমিশন থেকে শিক্ষা নিতে হবে: মুফতী ফয়জুল করীম লালপুরে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে জমি দখল ও বাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ জনতার চেয়ারম্যান সৈয়দ তালহাকে সুনামগঞ্জ ৩ আসনে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা কুরআন-হাদিসের ভিত্তিতেই হতে হবে সংস্কার: বায়তুল মোকাররমের খতিব ইসলামী সঙ্গীত সম্রাট আইনুদ্দীন আল আজাদ রহ.-এর বাবার ইন্তেকাল

কেমন আছেন মধ্য আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলীয় দেশ গ্যাবনের মুসলমানরা?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মধ্য আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলীয় দেশ গ্যাবনের প্রাতিষ্ঠানিক নাম ‘গ্যাবনিজ রিপাবলিক’। দেশটির উত্তর-পশ্চিমে রয়েছে গিনি, উত্তরে ক্যামেরুন, পূর্ব ও দক্ষিণে কঙ্গো প্রজাতন্ত্র অবস্থিত। গ্যাবনের মোট আয়তন দুই লাখ ৭০ হাজার বর্গ কিলোমিটার।

উপকূলীয় সমভূমি ও পাহাড়ি ভূমির গ্যাবন প্রাকৃতিক ও খনিজ সম্পদে যথেষ্ট সমৃদ্ধ। দেশটির মোট অর্থনীতির ৪৬ শতাংশ আসে তেল খাত থেকে। লিব্রভিল দেশটির সর্ববৃহৎ শহর ও রাজধানী।

একাধিক স্থানীয় ভাষা প্রচলিত থাকলেও গ্যাবনের দাপ্তরিক ভাষা ফ্রেন্স। ২০১৮ সালের পরিসংখ্যান মতে, গ্যাবনের মোট জনসংখ্যা ২১ লাখ ১৯ হাজার দুই শ সাতজন। গ্যাবনের প্রধান ধর্ম খ্রিস্টান। পিউ রিসার্চের তথ্যমতে, মোট জনসংখ্যার ১২ শতাংশ মুসলিম। তবে এই সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। ২০৫০ সালে দেশটিতে মুসলিম জনসংখ্যার হার ১৬ শতাংশে উন্নীত হবে বলে মন্তব্য করেছে পিউ রিসার্চ।

গ্যাবনের আদিবাসী ছিল পিগমি সম্প্রদায়। পরবর্তী সময়ে ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক শক্তির সহায়তায় বান্তু সম্প্রদায় পিগমিদের বিতাড়িত করে। আঠারো শতকে ‘মেইনি’ ভাষাভাষি মানুষ ‘কিংডম অব ওরোঙ্গু’ নামে একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে। আধুনিক গ্যাবনের ভৌগোলিক সীমা মূলত সে সময়ে নির্ণিত হয়।

‘কিংডম অব ওরোঙ্গু’ ছিল আফ্রিকার অন্যতম প্রধান দাস ব্যবসা কেন্দ্র। ১৮৭০ সালে দাস ব্যবসা বন্ধ হলে ওরোঙ্গু রাজ্যেরও পতন হয়। ১৮৮৫ সালে গ্যাবনে ফ্রান্সের আনুষ্ঠানিক ঔপনিবেশ প্রতিষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ আন্দোলন ও সংগ্রামের পর ১৯৫৮ সালে স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের মর্যাদা লাভ করে এবং ১৭ আগস্ট ১৯৬০ সালে ফ্রান্সের নাগপাশ থেকে পুরোপুরি স্বাধীনতা লাভ করে।

ধারণা করা হয়, খ্রিস্টীয় একাদশ শতকে মরক্কোর ধর্মপ্রচারকদের মাধ্যমে গ্যাবনে ইসলামের যাত্রা শুরু হয়। এ সময় মরক্কোর ইসলাম প্রচারকরা আফ্রিকার উপকূলীয় অঞ্চলে চষে বেড়ান।

খ্রিস্টীয় ১৫ শতকে গ্যাবনের (ঋধহম) ‘ফাঙ্গ’ গোত্র ইসলাম গ্রহণ করে। এরপর মালি, নাইজার প্রভুতি মুসলিম দেশ থেকে আগত ব্যবসায়ীদের প্রচেষ্টায় ক্যামেরুনের (ঋঁষধহর) ‘ফুলানি’ গোত্র ইসলাম গ্রহণ করে। যাদের একাংশ গ্যাবনেও বসবাস করে। তারাও গ্যাবনে ইসলাম প্রচারে ভূমিকা রাখে।

তবে ১৯৭৩ সালে দেশটির প্রেসিডেন্ট অ্যালবার্ড বার্নার্ড বানগো ইসলাম গ্রহণের পর গ্যাবনবাসীর মধ্যে ইসলাম গ্রহণের হার বৃদ্ধি পায়। ইসলাম গ্রহণের পর তিনি ওমর বানগো নামধারণ করেন।

সেপ্টেম্বরে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ওমর বানগো ইসলাম গ্রহণ করেন। তার ইসলামগ্রহণ অনুষ্ঠানে মুসলিম ওয়ার্ল্ডে লিগের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন এবং সংগঠনের মহাসচিব তাঁকে অভিনন্দন জানান।

ওমর বানগোর সঙ্গে দেশটির তৎকালীন বহু শীর্ষ নেতা ইসলাম গ্রহণ করেন। তাঁর নেতৃত্বে গ্যাবনে আন্তর্জাতিক মুসলিম সহযোগিতা সংস্থা ওআইসিতে যোগদান করে। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ফিলিস্তিনের মতো মুসলিম ইস্যুতে গ্যাবন সাধারণত মুসলিম সম্প্রদায়কে সমর্থন দিয়ে থাকে।

আফ্রিকার অন্যান্য অমুসলিম দেশের তুলনায় গ্যাবনের মুসলিমরা বেশি ধর্মীয় স্বাধীনতা উপভোগ করে। সেখানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমতি সাপেক্ষে মুসলিমরা পৃথক ইসলামী প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল পরিচালনার সুযোগ পায়, দুই ঈদসহ ধর্মীয় দিবসে ছুটি কাটাতে পারে, সরকারি প্রচার মাধ্যমে অনুষ্ঠান সম্প্রচারের সুযোগ পায়, সরকারি চাকরিতে যোগদান করতে পারে।

২০০৪ সালে গ্যাবনের মুসলিমরা প্রথমবারের মতো লিব্রভিলে প্রথম জাতীয় সম্মেলন করে। সম্মেলনে দেশটির ৩৪টি মুসলিম সম্প্রদায় ইসলামের স্বার্থে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করে। সূত্র: দাওয়াহ ডট সেন্টার ও উইকিপিডিয়া, ইকনা

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ