শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


কয়লাভিত্তিক ১০টি বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: সময়মতো উৎপাদনে আসতে না পারায় কয়লাভিত্তিক ১০টি বিদ্যুৎ প্রকল্প সরকার বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, যেগুলো সময়মতো উৎপাদনে আসতে পারেনি, সেগুলো বাদ দেওয়ার। আজ (রোববার) সচিবালয়ে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু এ তথ্য জানান।

বাদ দেওয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো হচ্ছে‑ পটুয়াখালী ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, উত্তরবঙ্গ ১২০০ মেগাওয়াট সুপার থারমাল পাওয়ার প্লান্ট, মাওয়া ৫২২ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, ঢাকা ২৮২ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প, চট্টগ্রাম ২৮২ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, খুলনা ৫৬৫ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, মহেষখালী ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, মহেষখালী (২) ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ৭০০ মেগাওয়াট আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প ও সিপিজিসিবিএল-সুমিতোমো ১২০০ মেগাওয়াট আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প।

কেন বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো বাদ দেওয়া হলো এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'আমরা দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনার আওতায় বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো গ্রহণ করেছিলাম। এরমধ্যে বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে চলে এসেছে। এখন আমাদের এসব প্রকল্প না আসলেও কোন সমস্যা হবে না। এই কারণে প্রকল্পগুলো বাতিল করা হয়েছে। একইসঙ্গে আমরা পরিবেশের বিষয়টি বিবেচনা করেছি'। ভবিষ্যতের চাহিদা মেটাতে আমরা ৪০ ভাগ বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে উৎপাদন করবো। এজন্য স্রেডা একটি রোডম্যাপ প্রণয়ন করেছে। এছাড়া নেপাল ও ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানির চেষ্টা করা হচ্ছে'।

এদিকে বিদ্যুত মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্রে জানা গেছে, পরিকল্পনা ও দর প্রক্রিয়ায় থাকা ১০টি বিদ্যুত কেন্দ্রের প্রকল্পে পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৫টি প্রকল্প বাতিল হচ্ছে আর ৫টি গ্যাসে (এলএনজি) রূপান্তর করা হবে। সূত্র জানায়, এলএনজিতে রূপান্তরিত হতে যাওয়া পাঁচটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা ৫ হাজার ১৭৫ মেগাওয়াট। অন্যদিকে, বাতিল হতে যাওয়া পাঁচটি কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা ৪ হাজার ১৭১ মেগাওয়াট।

এলএনজিতে রূপান্তর হতে যাওয়া প্রকল্পগুলো হলো- পিডিবির মহেশখালী ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং সরকারি সংস্থা আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানির পটুয়াখালী ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কেন্দ্র। অন্য তিনটি হলো- সিপিজিসিবিএল-সুমিতমো করপোরেশনের ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াটের ও সিপিজিসিবিএলের বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুকেন্দ্র এবং বেসরকারি খাতের মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় ওরিয়নের ৬৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুকেন্দ্র।

বাতিল হতে যাওয়া কেন্দ্রগুলোর মধ্যে রয়েছে- মাতারবাড়ীতে দ্বিতীয় পর্যায়ে গৃহীত সিপিজিসিবিএলের ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানির উত্তরবঙ্গ ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট কেন্দ্র, ওরিয়নের মাওয়া ৫২২ মেগাওয়াট কেন্দ্র ও ঢাকা ২৮২ মেগাওয়াট কেন্দ্র এবং পিডিবি-টিএনবি মালয়েশিয়ার ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র।

তবে ভারতের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগের রামপাল ১৩২০ মেগাওয়াট, জাইকার অর্থায়নে মাতারবাড়ী ১২০০ মেগাওয়াট, মিরসরাইয়ে চীনের উদ্যোগে নির্মাণাধীন এস আলম গ্রুপের ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ চলমান থাকবে।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালে ভারত-বাংলাদেশ সমঝোতা স্মারকের মধ্য দিয়ে দেশে বৃহৎ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। যদিও এরপর চীনের সাথে এক চুক্তির মাধ্যমে পায়রায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদন শুরু করেছে। তবে এর মধ্যেই দেশীয় কোম্পানি অরিয়নসহ আরও বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের সাথে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি হয়। এছাড়া বিদেশি কোম্পানি মালয়েশিয়া, চীন, জাপান, সিঙ্গাপুরের কোম্পানির সাথেও নির্মাণের চুক্তি হয়। এদেরকে কার্যাদেশও দেওয়া হয়।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ