আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইরানসংশ্লিষ্ট ৩৬টি ওয়েবসাইট বন্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ। গতকাল মঙ্গলবার দেশটির বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়, যেসব ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, তার অধিকাংশই ভুয়া তথ্য ছড়ানোর কার্যক্রম বা সহিংস সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনের কারণে ওয়েবসাইটগুলো অফলাইনে নেওয়া হয়েছে।
তবে ওয়েবসাইটগুলো বন্ধ করে দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেগুলো নতুন ডোমেইন ঠিকানায় আবার অনলাইনে ফিরে এসেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইরানের ইসলামিক রেডিও অ্যান্ড টেলিভিশন ইউনিয়ন (আইআরটিভিইউ) ব্যবহৃত ৩৩টি ওয়েবসাইট ও কাতাইব হিজবুল্লাহ (কেএইচ) ব্যবহৃত তিনটি ওয়েবসাইট মার্কিন নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করায় আদালতের আদেশ অনুসারে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
কেএইচ হচ্ছে ইরানপন্থী ইরাকের মিলিশিয়া গ্রুপ, যাদের যুক্তরাষ্ট্র বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকায় রেখেছে। যেসব সাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে প্রেস টিভি। এটি ইরান সরকারের প্রধান ইংরেজি ভাষার স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল। এ ছাড়াও আল আলম নামে আরবি ভাষার একটি টিভি চ্যানেলও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ দুটি চ্যানেল ইরানের আল আলম ডট আইআর ও প্রেসটিভি ডট আইআর ব্যবহার করে অনলাইনে ফিরে এসেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ জানায়, আইআরটিভিইউর যে ৩৩টি ডোমেইন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর মালিকানায় ছিল যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠান। ইআরটিভিইউ যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারিস অফিস অব ফরেন অ্যাসেটস কন্ট্রোলের কাছ থেকে কোনো লাইসেন্স নেয়নি। কেএইচও আলাদা করে লাইসেন্স নেয়নি।
গতকাল ইরানসংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পদক্ষেপ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র এগুলো বন্ধ করেছে এমন নোটিশ দেখায়। ইরানের সংবাদ সংস্থাগুলো বলছে, যুক্তরাষ্ট্র কয়েকটি ইরানি সম্প্রচারমাধ্যমের ওয়েবসাইট বন্ধ করেছে। এসব সাইট ইরানি হুতি বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল।
ইরানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে কট্টরপন্থী নেতা ইব্রাহিম রাইসির বিজয়ের পরপরই সেখানকার ওয়েবসাইটগুলো বন্ধের ঘটনা ঘটেছে।
গত অক্টোবর মাসে মার্কিন কৌঁসুলিরা বলেছিলেন, তাঁরা ইরানের ওয়েব ডোমেইনের একটি নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দিয়েছেন। ওই ডোমেইনগুলো থেকে ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড করপোরেশনের (আইআরজিসি) পক্ষে ভুয়া তথ্য ছড়ানো হচ্ছিল। ওই সময় মোট ৯২টি ডোমেইন বন্ধ করে দেয় যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করে ইরানের সংবাদ সংস্থা ওয়াইজেসি বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র যে বাকস্বাধীনতার আহ্বান জানায়, তা পুরোপুরি মিথ্যা।
-এটি